সাজ্জাদ মাহমুদ সুইট, রাজশাহী।
রাজশাহীর বাঘায় এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ চেয়ে মানববন্ধন করেছে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী,শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসীরা।
বুধবার ( ২২জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় বাঘা উপজেলাধীন মনিগ্রাম ইউনিয়নের মহদীপুর হেলালপুর (এমএইচ) মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি চাঁদাবাজি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী,শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসীদের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যে বলেন, প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কথা বলে ২টি নিয়োগ বানিজ্য করে ২৪ লক্ষ টাকা বাক্তিগত ভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন। যেখান নিয়োগ দিয়ে অত্র বিদ্যালয়ের ফান্ডে টাকা থাকার কথা কিন্তু স্কুলের ফান্ড শূন্য।তিনি এভাবে অত্র বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাত করেছেন এবং স্কুলের ছাত্রীদের সাথেও অসাদ-আচারণ করেন। আমরা অনেক বছর ধরে নির্যাতিত হয়ে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে আজ তার বিরুদ্ধে অত্র বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক শিক্ষিকা,ছাত্রী ও এলাকাবাসী সবাই তার পদত্যাগের দাবিতে এ মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি।
বালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার মানববন্ধন করায় আমাকে প্রান নাসের হুমকি দিয়েছেন। অনান্য শিক্ষক কর্মচারীদের কেউ হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করছি আমরা।
প্রতিষ্ঠানের পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে চাকরি নেয়া মোঃ আবু জার বলেন, অত্র বিদ্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞতি প্রকাশ হওয়ার পর তিনি আবেন করেন,পরিক্ষা দিয়ে টিকেন। এর পর অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক তাকে বলেন আত্র বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য কিছু টাকা দেয়া লাগবে তিনি ধাপে ধাপে ১২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের হাতে দেন। এর পর ৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখে নিয়োগকৃত হন। তিনি টাকা স্কুল ফান্ডে জমা না করে সকল টাকা আত্মসাৎ করেন বলে জানেছি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি করে দিবে বলে সকল শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা নিয়েছেন, স্কুলের পরীক্ষার ফি দুইবার করে নেন। আমরা স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের স্যারের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করছি।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন,আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করলে আমার কি করার আছে। প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ তো আমি একা দিতে পারি না। নিয়োগ ব্যানিজ্যের বিষয়ে পরে কথা বলতে যেয়ে মুঠোফোনের লাইনটি কেটে দেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, এমএইচ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক এর অনিয়মের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকমন্ডলী। তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
উল্লেখ্য, বিদ্যালয়টির আয়-ব্যয় এবং নিয়োগ বাণিজ্যের টাকার হিসাব চাওয়াই নিয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন, রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুল আওয়ালসহ বেশ কিছু শিক্ষক ও কর্মচারীর সঙ্গে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব চলছিল। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে প্লাস্টিকের চেয়ার তুলে মারধর এর ঘটনা ঘটে। এঘটনায় কমবেশি সবাই আহত হন। এবং সহকারী শিক্ষক – কর্মচারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার এর নিকট একটি লিখিত অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে।