নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৃহস্পতিবার নগরীর সিএন্ডবির মোড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংঘর্ষের ঘটনায় সাংবাদিক সম্মেলন করেছে মহানগর ছাত্রদল। শুক্রবার বেলা ১১টায় নগরীর বড়কুঠি কফিবারে রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি বলেন, বিগত ১৭ বছর বাংলাদেশ একটি ফ্যাসিবাদী শাসন দ্বারা শোষিত ও নিষ্পেষিত জনপদে পরিণত ছিল। যার বিষাক্ত ছোবল হতে বাংলাদেশের স্বাধীন গণমাধ্যমও বাদ যায়নি। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে অব্যাহত রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করেছি। তারই চূড়ান্ত ফলস্বরুপ গত জুলাই আগস্ট এর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।
জুলাই আগস্ট বিপ্লবে শুধুমাত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১৩৭ জন সূর্য সন্তান দেশের জন্য তথা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য শহীদ হন। শহীদ ওয়াসিম, শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ মুগ্ধসহ জুলাই আগস্ট বিপ্লবের নিহত সকল শহীদের আত্মত্যাগ কে সমুন্নত রাখতে ছাত্রদলের প্রতিটি নেতা কর্মী দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কোন অবস্থাতেই ছাত্র জনতার এই আত্মত্যাগ আমরা বৃথা যেতে দেব না।
ইতিমধ্যে আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, জুলাই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান কে কেউ কেউ ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার নিমিত্তে ভুয়া সমন্বয়ক সেজে নিজের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা লক্ষ্য করছি পতিত স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে পরিচিত, ছাত্র সংগঠন নামের কলঙ্ক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ এর সক্রিয় নেতাকর্মীরা খোলস পাল্টে সমন্বয়ক হিসেবে আবির্ভূত হয়ে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পায়তারা করছে। এরই ধারাবাহিকতায়, ০৫ আগস্ট পরবর্তী সময় হতে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানা নিজেকে সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করে রাজশাহী কলেজসহ রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
সে নিজেকে সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করলেও, স্পষ্টত সে জাসদ ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা। আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত রাজশাহী জেলা ও মহানগরে কোন সমন্বয়ক কমিটি নেই।
আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে বৃহস্পতিবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে নিজেদের মধ্যে দুইটি গ্রুপ বিরোধে জড়ায়। একপর্যায়ে তারা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সে ঘটনায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে চিহ্নিত জাসদ ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, রাজশাহী কলেজ শাখার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কুৎসা রটনা করেন, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়। অথচ অত্যন্ত দুঃখের বিষয় উক্ত ঘটনার সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ ছাত্রদল, রাজশাহী কলেজ শাখার কোন নেতাকর্মী সম্পৃক্ত নয়।
ছাত্রদলের সুনাম ও ঐতিহ্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানা কে দিয়ে এহেন ঘৃণ্য ও নেক্কারজনক ঘটনায় ছাত্রদলকে জড়ানো হয়।
আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে রাজশাহীতে অংশগ্রহণকারী আব্দুর রহিম এর গণমাধ্যমে দেওয়া ভাষ্যমতে তিনি বলেন “আজ একটা গ্রুপ একজন ভুয়া সমন্বয়ক এনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি করার চেষ্টা করছিল। ওই ভুয়া কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এর বাড়ি রাজশাহী। সে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই ভুয়া সমন্বয়ককে গণপিটুনি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। উক্ত ঘটনার জের ধরেই জাসদ ছাত্রলীগের নেতা সোহেল রানার উপরে কে বা কাহারা হামলা করেছে। এ থেকে স্পষ্ট প্রমাণ হয় যে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানার উপর হামলার ঘটনায় রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নাই
ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান ঘোষিত সাম্য ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদল কাজ করে যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা রক্ষায় ছাত্রদল জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরন করছে।
রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলকে সুসংগঠিত ও কলঙ্কমুক্ত রাখতে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরোও উপস্থিত ছিলেন মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ, সুলতান আহমেদ রাহি ছাত্রদলের আহ্বায়ক, আদিউল ইসলাম সজিব-যুগ্ম-সম্পাদক ছাত্রদল, খালিদ বিন ওয়ালিদ (আবির) আহ্বায়ক, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদল, আহমেদ রায়হান সদস্য সচিব বোয়ালিয়া প্রচীম ছাত্রদল, মাহমুদুল হাসান লিমন সদস্য সচিব নিউ ডিগ্রি কলেজ।