নরসিংদী ও রায়পুরা মোঃমাসুদ রানা
নরসিংদীতে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে পিটিয়ে মারলো প্রতিপক্ষ
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়াকে হত্যা করেছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা। আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (২২ মে) বেলা ১২টায় উপজেলার চরাঞ্চল পাড়াতলী ইউনিয়নের মীরেরকান্দী মসজিদের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সুমন মিয়া উপজেলার চরসুবুদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তিনবারের নির্বাচিত চরসুবুদ্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া উপজেলার চরাঞ্চল পাড়াতলীতে গণসংযোগে যাওয়ার সময় তার গাড়িকে লক্ষ্য করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর আবিদ হাসান রুবেলের নেতৃত্বে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। আহত সুমন দৌড়ে স্থানীয় বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বিকালে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, রোগী সুমন মিয়াকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার নাকে ও মুখে রক্ত ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার ভিতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে গুলির কোন আলামত নেই।
’
আবিদ হাসান রুবেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাদের প্রোগ্রাম ছিল পাড়াতলী বাজারে আর আমার প্রোগ্রাম হচ্ছে মধ্যনগর কাচেরকান্দি। সেখানে আমার এক বন্ধুর বাসায় দুপুরে খাওয়া দাওয়ার কথা ছিল। আমরা মধ্যনগর এলাকায় গণসংযোগ শেষে কাচেরকান্দি যাওয়ার পথে মামদিরকান্দি একটি ফাঁকা জায়গায় যাওয়ার পর হঠাৎ করে সুমনের দুটি গাড়ি আসে। একটি কালো হায়েচ ও সিলভার কালারের একটি প্রাইভেটকার। তখন গাড়ির দরজা খোলে দুটি শর্টগান থেকে এলোপাথারি গুলি চালায়।
সেখানে আমার সমর্থক রহমত উল্লাহ, সজিব, শাকিল ও মোমেন নামের চারজনজন আহত হয়। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আল্লাহর রহমতে আমি ও আমার স্ত্রী বেঁচে গেছি।’
এ ঘটনায় হাসপাতালের সামনে নিহত সুমনের ভাই মো. আজহারুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘আমরা মিটিং করতে গেছি। সেখানে যাওয়ার পর আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রুবেল নিজে উপস্থিত থেকে আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘১৫ বছর পর আমার ভাইয়ের বউয়ের সন্তান হবে। ২৪ তারিখে ডেলিভারি। আমাকে ফোন দিতাসে। এখন আমি কি করুমু? এই বিচার আপনারা সাংবাদিকরা করেন না হইলে এই বিচার আমি করমু।’
এ ঘটনায় রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ মিডিয়া দেখ বলেন, ‘আমি হাসপাতালে আসছি। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতেছি। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো প্রক্রিয়া চলছে। দুপুরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিনা তদন্ত করছি। বিস্তারিত তদন্তের পর বলা যাবে।