মোঃ আব্দুস সালাম গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি:
মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ গাজীপুরে জনজীবন, নিধনে নেই কোন পদক্ষেপ ।
গাজীপুর মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গরম কাল আসার সাথে সাথে ভয়াবহ আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে মশার বিস্তার। দিন রাতে সব সময় মশার কামড়ে নাজেহাল গাজীপুর বাসী দিনের বেলায়ও অফিস কিংবা বাসা বাড়িতে মশার কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে। আর একটু সন্ধ্যা হলেই মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে আরও কয়েক গুন। কিন্তু মশা নিধনের জন্য প্রতি বছর বাজেট থাকলেও এবার কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না।
গাজীপুরে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে , ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথেই মশার উপদ্রব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মানুষের দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। কয়েল, স্প্রে বা মশারি টাঙ্গিয়েও মশার উৎপাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মহানগর বাসী। কেউই স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছেন না। বিশেষ করে উৎপাদন কারখানা বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রহরীরা জানিয়েছেন যে, পেটের তাগিদে তাদের নাইট সিফটে প্রতিষ্ঠান পাহাড়া দিতে হয় । কিন্তু মশার কামড়ে তারা আজ অতিষ্ঠ । দশটা মিনিট তারা স্হির হয়ে বসে থাকতে পারে না । মৌমাছি ঝাঁকের মত এসে মশা গায়ে পড়ে । সব সময় হাটা চলার উপরে থাকতে হয় ।এতো সময় ধরে হাটা- হাটিতে তাদের কোমর ও পা ব্যাথা হয়ে যায়।
গাজীপুর ইন্ডাষ্টিক শিল্পাঞ্চল হওয়ায় মিল ও কলকারখানার দূষিত বর্জ্য, বিভিন্ন স্থানের জমে থাকা নোংরা পানি এবং যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলায় মশা প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। তা ছাড়া গাজীপুর বুকে বয়ে যায় তুরাগ নদীর পানি অত্যান্ত দুষিত এবং দুর্গন্ধযুক্ত ফলে মশার উৎপাত বেশি । মহানগর বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন স্থানে বসানো ডাস্টবিন ও আবর্জনা ফেলার স্থান নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার বিস্তার ক্রমশ বাড়ছেই। আর এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। তাছাড়া মশার উৎপাতে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়াশুনাও চরম ব্যাঘাত ঘটছে।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, সারাদিন মশার উপদ্রব থাকলেও সন্ধ্যার পরপরই এই উৎপাত আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ফলে সন্ধ্যায় মশার কয়েল জ্বালিয়ে বা স্প্রে শিক্ষার্থীদের পড়তে বসতে হচ্ছে। এমনকি মশার উৎপাতে নাজেহাল হয়ে মশারি টাঙ্গিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করতে হচ্ছে। অনেকই মশার কামড়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। প্রতিনিয়ত মশার বংশ বৃদ্ধি ঘটছে। দ্রুত মশার বিস্তার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
চিকিৎসকের মতে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এই তিন মাস পর্যন্ত মশা বংশবিস্তার ঘটায়। এ সময় মশাবাহিত রোগে মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়। মশার কামড়ে মানুষ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তারা।