রাজশাহীতে ১০ ফুটের ফুটপাত দখল করে ফলের আড়ত নির্মাণ

দেশের খবর
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

জন্মভূমি নিউজ ডেক্স

রাজশাহী মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত এলাকা শালবাগান-রেলগেট। এই এলাকার মধ্য দিয়ে দিন-রাত ছুটে চলছে বাস, ট্রাক, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবহন। মহাসড়কটির দুই পাশেই রয়েছে পথচারীদের চলাচলের জন্য ১০ ফুট প্রশস্ত ফুটপাত। ফুটপাত দখলে নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে অর্ধশতাধিক দোকান ও ফলের আড়ত।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও পাসপোর্ট অফিসের সামনের ফুটপাত বাঁশ ও চাঁটাই দিয়ে ঘিরে দখলে নেমেছেন ক্ষমতাশীন দলের অঙ্গসংগঠনের এক নেতা। তার আরও সহকারি আছে দেখভাল করার জন্য। ফুটপাতের ওপর বাঁশ, টিন ও খুঁটি বসিয়ে ফলের আড়ত নির্মাণ চলছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারিরা।

বিশেষ করে রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, পলিটেকনিক ল্যাবরেটরি স্কুল ও রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের হাজারও শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক দিয়েই হাঁটতে হচ্ছে তাদের। এতে বিভিন্ন সময়ই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।

স্থানীয়রা জানান, মহানগরীর রেলগেট থেকে শালবাগান পর্যন্ত গড়ে ওঠা আড়ত থেকে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় প্রভাবশালীরা প্রতিদিন দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা তুলে থাকেন। এছাড়া রেলগেটের ফুটপাতে বসানো ফলের দোকানগুলো থেকে তুলছেন দৈনিক ২০০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত।

এদিকে ফুটপাতের ওপর নির্মিত এসব দোকান ও ফলের আড়ত উচ্ছেদের জন্য গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) নগর বিশেষ শাখা ও চন্দি মা থানায় চিঠি দেন। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

অপরদিকে ফুটপাত দখলের কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা। এক সপ্তাহ আগে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মেকানিক্যাল বিভাগের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী আলিফ আক্তার রুমন ও তার বন্ধু হাকিম রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অটোরিকশার ধাক্কায় আহত হন।

এই শিক্ষার্থীরা বলেন, ফুটপাত দখলে থাকার কারণে বাধ্য হয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হয়। শুধু আমি নই, ওই দিন আমার বন্ধু হাকিমও গুরুতর আহত হয়েছে। শালবাগানে প্রায়ই এমন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেক মানুষ। ফুটপাতে হাঁটার জায়গা থাকলে হয়তো এমন ঘটনার শিকার হতাম না।

রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহজাবিন আরার মা গুলশান আরা জানান, তিনি নওদাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। মেয়েকে স্কুলে নিতে গিয়ে তিনিও হয়েছেন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার। শুধু শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকই নন; ফুটপাত দখলের কারণে ভোগান্তিতে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। শিক্ষার্থী রুমনের মতো তারাও একই অভিযোগ করেছেন।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোহম্মদ আব্দুর রশীদ মল্লিক বলেন, ফুটপাত দখলের কারণে আমরা বেশ সমস্যার মধ্যে রয়েছি। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। পুলিশকে চিঠি দিয়েও এর প্রতিকার পাইনি।

এ বিষয়ে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, ফুটপাতের অবৈধ দোকান সাধারণত সিটি করপোরেশন উচ্ছেদ করে। সিটি করপোরেশন বা কোনো ভুক্তভোগী যখন আমাদের অভিযোগ দেন তখন আমরা অ্যাকশনে যেতে পারি। তবে অভিযোগ পেলে এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হবে। ফুটপাত দখল ও উচ্ছেদের ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন বলেন, অবৈধ দোকান নির্মাণের বিষয়টি জানতাম না। এ বিষয়ে খোঁজ নেব। এরপর সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে ও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *