মোঃহালিম কাজী রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান
রাজশাহীতে অবৈধভাবে গ্যাসের সিলিন্ডার কেটে লোহা হিসেবে বিক্রি করার অপরাধে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার বিকেলে নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেট থেকে তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়। সন্ধ্যায় এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছিল।
আটক তিনজন হলেন- নগরীর নওদাপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মেহেদী হাসান (২২), বিহারি কলোনী এলাকার সোহেল রানার ছেলে মো. সিয়াম (২২) ও শ্রীরামপুর টিবাঁধ এলাকার ইউসুফের ছেলে মিঠুন (২২)। আটকের পর তাদের চন্দ্রিমা থানায় নেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, আটককৃতরা দীর্ঘ দিন থেকে স্টেডিয়াম মার্কেটে মেসার্স জাহিদ ট্রেডার্স নমের একটি দোকান ভাড়া নিয়ে অবৈধভাবে গ্যাসের সিলিন্ডার সংগ্রহ করে সেগুলো কেটে লোহা হিসেবে বিক্রি করছিল। দোকানে প্রচুর পরিমাণ সিলিন্ডার কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। আটক তিনজন অপরাধ স্বীকার করে জানান, তারা গ্যাস সিলিন্ডার কেটে লোহা হিসেবে বিক্রি করেন।
এই দোকানটিতে বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের বিভিন্ন পরিমাপের গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া যায়। এই ভাঙারি ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে এসব সংগ্রহ করে কেটে লোহা হিসেবে বিক্রি করছিলেন। সকালে বসন্ধুরার কর্মকর্তাদের নজরে এলে তারা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ অভিযানে যায়।
বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেডের এরিয়া সেলস ম্যানেজার মাহবুব আলম বলেন, ‘৩০ লিটারের একটি গ্যাস সিলিন্ডার তৈরি করতে কম্পানির সাড়ে চার হাজার টাকারও বেশি খরচ হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ যেন এটি ব্যবহার করতে পারেন, তার জন্য ভর্তুক্তি দিয়ে বিক্রি করা হয় ২ হাজার ৬২০ টাকায়। এগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণের আগেই এভাবে কেটে বিক্রি করলে দেশের ক্ষতি, কম্পানির ক্ষতি।’
তিনি বলেন, ‘খালি সিলিন্ডার এই ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মাধ্যমে অবৈধভাবে হাজার দেড়েক টাকায় সংগ্রহ করেন। তারপর সেগুলো কাটেন। তখন ২৮ থেকে ২৯ কেজি লোহা পাওয়া যায়। এগুলো দিয়ে তারা স্ক্র্যাপ এবং শিট তৈরি করে। একটি সিলিন্ডারের লোহা বেচেই তারা প্রায় ২ হাজার ৩০০ টাকা পায়। এতে তারা লাভবান হয়। কিন্তু উৎপাদনকারী কম্পানি ও দেশের ক্ষতি হয়। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হবে।’
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জামিরুল ইসলাম জানান, অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডার সংরক্ষণ ও কেটে বিক্রির অপরাধে আটক তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। অন্য কেউ যাতে এই কাজটি করতে না পারে, সেদিকেও নজরদারি রাখা হবে।