রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি।
জমিতে ঘাস লাগানো নিয়ে মারধরের ঘটনায় গ্রাম্য সালিশি বৈঠকে যাবার পথে জমির মালিক বৃদ্ধ আব্দুল মালেক ( ৫৫) কে মারধর করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। গত ৯ জুলাই ( মঙ্গলবার) বিকেল সাড়ে ৫ টায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের বেড়ের বাড়ি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর ভাই আব্দুল খালেক।
ভুক্তভোগী আব্দুল মালেক আড়ানী ইউনিয়নের বেড়ের বাড়ি ( মন্ডল পাড়া) গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। এঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার হুজুর আলীর ছেলে কানন (২৮) ও তার স্ত্রী ছাবিনা , ভাবি ছামিয়ারা, মৃত আজগরের ছেলে সাইদুল, আকবরের ছেলে সেন্টু এবং লালটু।
অভিযোগে জানা গেছে, আড়ানী ইউনিয়নের বেড়েরবাড়ি ঈদগাহ মাঠের পশ্চিম মাঠে একটি পুকুর খনন চলছে। সেই পুকুরের মাটি দুই ফিটের মত আব্দুল মালেকদের জমিতে পরে। তিনি সেই নতুন মাটির উপর তার জমিতে কয়েকটি ঘাসের চারা রোপন করেন। ৮ জুলাই (সোমবার) বিকেল সাড়ে ছয়টায় প্রতিবেশী হুজুরের ছেলে কানন গিয়ে ঘাসের চারা গুলো নষ্ট কেরে জমি থেকে তুলে ফেলছিল এবং অসভ্য ভাষায় মালেককে গালিগালাজ করছিল। সেখানে মালেক গিয়ে কানন কে এসব করতে বারণ করলে সে তাকে মারধর করে। সে সময় তার বড় মেয়ে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করে। পরবর্তীতে এঘটনায় তাদের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনার নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম্যভাবে সালিশের ব্যবস্থা করেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। ৯ জুলাই (মঙ্গলবার) বেড়ের বাড়ি মন্ডল পাড়া মোড়ে সালিশি স্থানে যাবার পথে কানন ও তার স্ত্রী লোকজন মালেকের ওপর দ্বিতীয়বার হামলা চালায়। এ সময় মালেককে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন হামলাকারীরা। পরবর্তীতে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ ঘটনার স্থলে গিয়ে মালেককে উদ্ধার করে এবং স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায়ব মুমূর্ষু অবস্থায় মালেককে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। তিনি এখন বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
আহত আব্দুল মালেক বলেন, আগের দিন আমাকে ও আমার মেয়েকে মারধর করে। পরে বিরোধ মীমাংসার জন্য গ্রাম্য ভাবে বসার সিদ্ধান্ত নেই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সালিশি বৈঠকের স্থানে যেতে লাগলে কানন তার লোকজন নিয়ে তার বাড়ির সামনে রাস্তায় আমাকে মারধর করে। আমি মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছি আমার বাড়িতে মেয়েরা আছে। আমার কোন ছেলে সন্তান নেই। তাদেরও বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমি আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
আড়ানী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান বাঁধন বলেন, প্রথম দিনের ঘটনাটি শোনার পরে আমি নিজে থেকে কানন কে বলি এ বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা করার দরকার নেই, এলাকায় বসে সমাধান করেনিতে হবে। পরবর্তীতে কানন তার লোকজন নিয়ে আড়ানী রেলস্টেশন এলাকায় আমার দোকানে গিয়ে আমাকে মারধর করার চেষ্টা করে এবং হুমকি ধামকি দেয়। এবং আমার মামাকে মারধরের বিষয় নিয়ে থানায় অভিযোগ করার পর থেকে তারা মামা ও মামাতো বোনদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। এ অবস্থায় প্রশাসন ভাইদের প্রতি আমার অনুরোধ তারা যেন এই ঘটনাটির সঠিক তদন্ত করে সঠিক বিচার করেন।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাননের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, আগের দিন তাদের দুই পক্ষের মধ্যে একটি ঝামেলা হয়। সেইটা মীমাংসার জন্য আমি সহ বসছিলাম। এমন সময় সালিশি বৈঠকের স্থান থেকে ২০০ মিটার দূরে মারপিটের ঘটনাটি ঘটেছে।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে এবং তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।