রানী ভবানীর’ জন্মভিটা নিশ্চিহ্নের পথে

দেশের খবর
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

জন্মভূমি নিউজ ডেক্স
রানী ভবানীর’ জন্মভিটা নিশ্চিহ্নের পথে
চারিদিকে জঙ্গল সুনসান নীরবতা তার মাঝে এক ধ্বংসস্তুপ জমিদার বাড়ি, দেখে ভুতুরে বা যুদ্ধে বিধ্বস্ত জমিদার বাড়ি মনে হলেও এখানেই জন্মে ছিলেন বঙ্গেঁশ্বরী পরিচিত রানী ভবানী।

বঙ্গেঁশ্বরী পরিচিতি ‘রানী ভবানীর’ বিজড়িত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামে তার স্মৃতিটুকু ও আজ নিশ্চিহ্নের পথে। সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে মহীয়সী এই নারীর জন্মস্থান হারাতে বসেছে তার ঐতিহ্য। বগুড়ার জেলার তৎকালীন আদমদিঘী থানাধীন ছাতিয়ান নামক গ্রামে রানীভবানী জন্মগ্রহণ করেন।

সে সময় গ্রামে ছিল অনেক বন জঙ্গল। সেই বনে হরিণসহ অনেক বন্যপ্রাণী ছিল। একদিন নাটোরের জমিদার রামাকান্ত ছাতিয়ান গ্রামের জঙ্গলে শিকার করতে আসেন। কোন একদিন ভোরে তাঁবু থেকে শিকারে বের হয়ে দেখতে পান ফুটফুটে সুন্দরী মেয়ে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ফুল তুলছে। রাজা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন মেয়েটি আত্মারাম চৌধুরীর একমাত্র কন্যা।

রাজা রামাকানাত শিকার না করে নাটোরে ফিরে মেয়েটিকে বিয়ে করার কথা পিতা রামজীবনকে জানান। ছেলের কথা শুনে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে নিজেই ছাতিয়ান গ্রামে চলে আসেন। বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে ভবানী তিনটি শর্তে রাজি হন। শর্ত হচ্ছে, বিয়ের পর তিনি পিতার বাড়িতে এক বছর অবস্থান করবেন। এই এক বছরে প্রতিদিন একটি করে ৩৬৫টি পুকুর খনন করে দিতে হবে। ছাতিয়ান গ্রাম জমিদার বাড়ি থেকে নাটোর জমিদার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করে লালসালু কাপড়ে জড়িয়ে দিতে হবে। এর উপর দিয়ে তিনি স্বামীর বাড়ি যাবেন। সর্বশেষ শর্ত ছিল এলাকার গরীব প্রজাদের ভূমিদান করে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। রাজা রামজীবন ছেলের বিয়ের জন্য সকল শর্ত মেনে নেন।

মহারাণী ভবানী (১৭১৬-১৮০২) ইংরেজ শাসনামলে বর্তমান বাংলাদেশের নাটোরের একজন জমিদার ছিলেন। তার পিতা আত্মারাম চৌধুরী এবং মাতা তমাদেবী চৌধুরী রানি। দান, ধ্যান, শিক্ষা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, চিকিৎসা ও ধর্মীয় কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তার প্রজারা তাকে ‘মহারাণী’ নামে আখ্যায়িত করে।

ছাতিয়ান গ্রামের হাট খোলার উত্তর পশ্চিম কোনায় রানী ভবানীর বাবার বাড়ির ভগ্নাবশেষ আজও কালের সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে।

এলাকাবাসীর দাবি এই রানী ভবানীর জন্মস্থানও তার কীর্তি সমূহ ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসাবে সংরক্ষন করা হোক। সম্প্রতি আদমদীঘি উপজেলা পরিষদে এক গণ শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। ওই শুনানিতে ছাতিয়ানগ্রামের এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের কাছে রানী ভবানীর জন্মস্থান সংস্থার বা সংরক্ষণের দাবি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে রানী ভবানীর সম্পত্তির হিসাব বের করে তার শেষ স্মৃতিটুকু সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে বলেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *