শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা: যুবদল কর্মীর মৃত্যু ‘হৃদ্‌রোগে’, লাশ তুলতে বাবার বাধা

দেশের খবর
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

নিজস্ব প্রতিবেদক
আদালতের নির্দেশে লাশ তুলতে গেলে তাতে বাধা দেন ফোরকানের বাবা। ছবি:দৈনিক আমাদের জন্মভূমি

বগুড়ায় পরিবারের আপত্তির মুখে এক বছর আগে মারা যাওয়া যুবদল কর্মীর লাশ করব থেকে উত্তোলন না করে ফিরে এসেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ। নিহতের বাবার দাবি, ছেলের মৃত্যু হৃদ্‌রোগে হলেও তাঁকে না জানিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন তিনি।

মৃত যুবদল কর্মী ফোরকান আলী (২৭) শাজাহানপুর উপজেলার ঘাসিড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সকাল ৭টার দিকে বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কে শাজাহানপুর উপজেলার সাজাপুর নামক স্থানে বিএনপির মিছিলে গিয়ে তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। পরে তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই দিন ফোরকানের লাশ পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়।

এদিকে গত ৩০ অক্টোবর শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ইউনুছ আলী হলুদ বাদী হয়ে আদালতে হত্যা মামলা করেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কবর থেকে লাশ তুলতে যান।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান করে আওয়ামী লীগের ১৬০ জন নেতা–কর্মীকে আসামি করা হয়। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সকাল ৭টার দিকে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা মিছিল নিয়ে সাজাপুর এলাকায় মহাসড়কে ওঠামাত্র প্রধান আসামি শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্য আসামিরা মিছিলে হামলা করে।

আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির মুখে বিএনপির নেতা–কর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় যুবদল কর্মী ফোরকান রক্তাক্ত জখম হন। পরে তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার সময় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে নিহতের পরিবার মামলা করার সাহস পাননি।

এদিকে আদালতের নির্দেশে মামলাটি শাজাহানপুর থানায় এজাহার হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করা হয়। ইতিমধ্যে পুলিশ এই মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে আজ একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করতে যান। এ সময় ফোরকান আলীর পরিবার থেকে আপত্তি জানানো হয়।

ফোরকান আলীর বাবা মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার ছেলে বিএনপির মিছিলে গিয়ে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তাকে কেউ হত্যা করেনি। তার শরীরে কোনো জখম বা আঘাতের চিহ্ন ছিল না। আমার ছেলের স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ায় আমরা সেই সময় মামলা করিনি। সরকার পরিবর্তনের পর আমাদের অনুমতি না নিয়ে ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে ইউনুছ আলী হলুদ আদালতে মামলা করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি আদালতকে জানিয়েছি। তবে এখন শুনানি হয়নি। এ ছাড়া মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখা এবং আসামিদের হয়রানি না করার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *