রাজশাহীতে দুই সম্পাদক ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার মামলা

রাজশাহী
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে দুইজন গণমাধ্যম সম্পাদক ও প্রকাশকসহ ১৫ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বিএনপি নেতা। এর মধ্যে ১০জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি পাঁচজন অজ্ঞাত আসামী।

রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে চারজন এবং মহানগর বিএনপির অফিস ভাংচুরের অভিযোগের মামলায় এক সম্পাদক ও প্রকাশকসহ পাঁচজন সাংবাদিককে আসামী করা হয়েছে। এছাড়াও রাজশাহীর বাঘা থানায় ছাত্রদল নেতার মদি দোকানে হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এক সাংবাদিককে আসামী করা হয়েছে।

বোয়ালিয়া থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, চার সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজির মামলা করেছেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বজলুর রহমান মন্টু। গত মঙ্গলবার দুপুরে দায়ের করা মামলায় পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। থানার এসআই তাজউদ্দিন আহমেদকে মামলাটি তদন্ত করতে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ মামলার আসামিরা হলেন, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব ও জিটিভির রাজশাহী প্রতিনিধি রাশেদ রিপন, দৈনিক করতোয়ার রাজশাহী প্রতিনিধি রোজিনা সুলতানা ও স্থানীয় দৈনিক উপচার পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসগর আলী সাগর।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ হয়। এটি বিএনপির নিজস্ব সমাবেশ হওয়ায় সব ক্ষেত্রে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার করা হয়। সমাবেশকে সফল করতে সাংবাদিকদের জন্য মিডিয়া কার্ড ইস্যু করা হয়। অধিকাংশ সাংবাদিক স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই কার্ড গ্রহণ করেন।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে,
সমাবেশের আগের দিন দুপুরে নগর বিএনপির কার্যালয় থেকে এই কার্ড বিতরণ করা হয়। বাদী বজলুর রহমান মন্টু মামলার আসামিদের কার্ড দিলে তাঁরা গ্রহণ না করে তাঁর কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। এ ছাড়া তাঁরা দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘খুনি’ ও ‘সাজাপ্রাপ্ত’ আসামিসহ আরও বিভিন্ন প্রকার মানহানিকর বক্তব্য দেন। এসব মানহানিকর বক্তব্য ও সংবাদ আরটিভিসহ তারা নিজ নিজ আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে, দলীয় কার্যালয় ভাংচুরের অভিযোগে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বজলুর রহমান মন্টুর দায়ের করা আরেকটি মামলায় দুই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকসহ পাঁচজন সাংবাদিককে আসামী করা হয়েছে। এরা হলেন, সরকারি নিবন্ধিত পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম পত্রিকার প্রকাশক ও সিইও আজিজুল আলম বেন্টু, স্থানীয় দৈনিক সানশাইন পত্রিকার প্রকাশক ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইউনুস আলী, দৈনিক উপচার পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক ও জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী বিভাগের সভাপতি নুরে ইসলাম মিলন, দৈনিক উপচার পত্রিকার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার সুরুজ আলী ও দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ এর স্টাফ রিপোর্টার ও ইংরেজি দৈনিক দ্য টাইমস অফ বাংলাদেশ পত্রিকার রাজশাহী প্রতিনিধি জহির সরকার রাতুল ।
এ মামলায় আজিজুল আলম বেন্টুকে ২১ নম্বর, ইউনুস আলীকে ১৯৬ নম্বর, নুরে ইসলাম মিলনকে ১০১ ও সুরুজ আলীকে ১০২ নং ও ১০০ নং আসামী করা হয়েছে জাতীয় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার জহির সরকার রাতুলকে । এ মামলায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি ফজলে হোসেন বাদশাসহ ২৩১ জনের নাম উল্লেখ করে আসামী রয়েছেন ৬৩১ জন।

অপরদিকে, বাঘার কিশোরপুর গ্রামের ছাত্রদল নেতা জাহিদ হাসানের মামলায় ১৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে বাঘা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক সানশাইনের উপজেলা প্রতিনিধি মো. নুরুজ্জামানকে। মামলায় ১৪১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে আরও ১৫০ জনকে।

মামলার এজাহারে অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট তারা ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে অভিযোগকারী জাহিদ হাসানের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেখানে হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

নুরুজ্জামান বলেন, প্রকাশিত সংবাদকে কেন্দ্র করে তার ওপর কেউ বিরাগভাজন থাকতে পারে। এ জন্য তাকে রাজনৈতিক মামলায় আসামী করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *