দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষক ও কৃষির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন ড. এম এম কামরুজ্জামান

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষক ও কৃষির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন ড. এম এম কামরুজ্জামান
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

জাতির পিতার সেই স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দেন এবং ২০২১ সালের মধ্যে সেই লক্ষ্যপূরণ করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে এবার প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। আর সেই লক্ষ্যে কৃষিমন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায় বৈজ্ঞানিক ড. এম এম কামরুজ্জামান দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষক ও কৃষির উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পূর্ণাঙ্গ কৃষি গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে । চলতি বছরের এ কেন্দ্রটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভাসমান কৃষি, জলমগ্ন কিঞ্চিৎ লবণাক্ত জমিতে বৈচিত্রপূর্ণ ফসল আবাদের পাশাপাশি কৃষির বৈচিত্র নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের কর্মপরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে এটি নির্মাণ করা হয়েছে । এ কেন্দ্রটি গবেষণার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষক ও কৃষির উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে ।

কৃষি মন্ত্রণালয় গোপালগঞ্জ জেলায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন ও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ প্রতিবেশ উপযোগী গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করণের মাধ্যমে ৫ বছর মেয়াদী কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে।

ওই প্রকল্পের আওতায় গোপালগঞ্জ জেলা শহরের অদূরে ঘোনাপাড়ায় ২০ একর জমির ওপর ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে গবেষণা কেন্দ্রটি নির্মাণ কাজ ২০২০ সালে শুরু হয়।

করোনার মধ্যেও কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ চলমান ছিল। প্রকল্পের পিডি ড. এম এম কামরুজ্জামান বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কৃষি গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. এম এম কামরুজ্জামান বলেন, কেন্দ্রের ২০ একর জমি অধিগ্রহণ, মাটি কাটা, মাটি ভরাট, বিদ্যুতের সাবস্টেশন নির্মাণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন সঞ্চালনের কাজ, মাঠ সরঞ্জাম, অফিস যন্ত্রপাতি, আবসাবপত্র, গাড়ি ও মোটর সাইকেল ক্রয় করা হয়েছে। কেন্দ্রের অফিস কাম ল্যাব ভবন নির্মাণ কাজ ও সম্প্রসারণ ভবনের কাজ  সমাপ্ত হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন ভবন, শ্রমিক সেড, ওভারহেট ট্যাকিং ও বাউন্ডারী ওয়ালের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে । কেন্দ্রর অভ্যন্তরে ৩ হাজার ৬০০ বর্গমিটার আরসিসি রাস্তা নির্মাণ ও অফিস কাম ল্যাব ভবনে ৩টি লিফট স্থাপন হয়েছে। ল্যাবের যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়েছে । এ প্রকল্প চলতি বছরের ৩০ জুন সমাপ্ত হয়েছে বলেও জানান প্রকল্প পরিচালক ।
গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. এম এম কামরুজ্জামান আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ অঞ্চলের কৃষি ও কৃষক হুমকির মধ্যে রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তিনটি বিভাগের ৫ জেলার ৩৮টি উপজেলার কৃষি উন্নয়নই এ প্রকল্পের মূখ্য উদ্দেশ্য।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, পূর্ণাঙ্গ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রটি কৃষির উন্নয়নে গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ, নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন, গুণগতমান সম্পন্ন বীজ উৎপাদন ও সরবরাহ, নতুন জাতের ফসলের উপযোগিতা ও সম্ভাব্যতা যাচাই, ফল, সবজি, ডাল, আলু, তৈল বীজ, গম, ভুট্টা, নারিকেল, তাল ও খেজুরের উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষকদের আয়বৃদ্ধিকে ব্যাপক ভূ’মিকা রাখবে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ এ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রটিকে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে । এখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি রেস্ট হাউস ও রেষ্টুরেন্ট থাকছে ।

এটিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেলার মধ্যে একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত করা হয়েছে । এই দর্শনীয় স্থানকে আরও ফুটিয়ে তুলতে সেখানে ঘাটসহ একটি গভীর সাধু পানির আধার তৈরি করা হয়েছে। যা থেকে লবনাক্ত এলাকার মানুষজন সহজে পানযোগ্য পানি সরবরাহ করতে পারবে বলেও জানান এই প্রকল্প পরিচালক।

গোপালগঞ্জ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এইচএম খায়রুল বাসার বলেন, কেন্দ্রটি এ অঞ্চলের কৃষি ও কৃষকরে উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।কৃষকের আর্থ সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার বলেন, কৃষি গবেষণা কেন্দ্রটি ৩ বিভাগের ৫ জেলার ৩৮টি উপজেলার কৃষি উন্নয়ন করবে। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণায় এ অঞ্চলের কৃষির প্রতিবদ্ধকতা দূর হবে। কৃষক উপকৃত হবে। দেশের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *