জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক:
সরকার কাউকে ধর্ম বা বর্ণের ভিত্তিতে আলাদা করে দেখে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমরা দেশটাকে গড়ে তুলতে চাই।”
অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তুলে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার দাবি করে তিনি বলেছেন, “অনেকেই চেষ্টা করে দেশকে ভিন্ন পথে নিতে। কিন্তু সেটি পারবে না। “বাংলাদেশের মানুষ খুব উদার এবং সবাই একসঙ্গেই চলতে পছন্দ করি। প্রত্যেক ধর্মেরই মূল কথা মানবকল্যাণ। আমাদেরও সেই একই কথা।”
বুদ্ধ পূর্ণিমা-২০২৪ উপলক্ষে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সরকার প্রধান এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা দেশটাকে গড়ে তুলতে চাই। এখানে ধর্ম-বর্ণ বলে আলাদা কিছু নেই। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই। তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে চাই।”
কেউ এখানে গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না- এই ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “সেই লক্ষ্যে আমরা ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। সবাই তার মৌলিক অধিকার পাবে।” ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’, এই স্লোগানটা তিনিই প্রথম দিয়েছিলেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রত্যেক ধর্মের উৎসবে সব ধর্মের মানুষ কিন্তু এই দেশে অংশ নেয়। পৃথিবীর আর কোনো রাষ্ট্রে কিন্তু এটি আছে বলে জানা নেই।”
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে বিপথে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলেও জানান জাতির পিতার কন্যা। তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৫ অগাস্টহত্যার পর প্রথমে বাংলাদেশকে একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র ঘোষণা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, ঘোষণাও দিয়েছিল খুনিরা, কিন্তু সেটি টেকেনি।“
বিএনপি সরকার নববর্ষ ও পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নতুন শতাব্দীতে পদার্পণ করব বলে আমরা একটি জাতীয় কমিটি করেছিলাম। খালেদা জিয়া তখন ক্ষমতায়, আমাদের অনুষ্ঠান করতে দেবে না।
“বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করা না কি ‘হিন্দুয়ানি’। অদ্ভুত অদ্ভুত কথা শুনতে হত। সেই অনুষ্ঠানে বাধা দিল, কিন্তু দেশের মানুষ সেই বাধা মানল না। দেশের মানুষ যেটা ন্যায়সঙ্গত হয়, সেটিই করে। একপ্রকার জোর করেই আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকলাম, তখন হাজার হাজার মানুষ। আমরা দিবসটি উদ্যাপন করলাম।”
বঙ্গবন্ধু সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন উল্লেখ করে তার কন্যা বলেন, “প্রকৃতপক্ষে যার যার ধর্ম সে পালন করবে, এটাই ধর্মনিরপেক্ষতা। “ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাখ্যাও বিকৃত করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। কেউ কেউ এটার অপব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এটা আমরা স্পষ্ট করেছি।”