মোঃহালিম কাজী রাজশাহী
নওগাঁর বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রি কলেজের অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ড.মো: আমজাদ হোসেন কর্তৃক নানা অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় তাঁর বেতন বন্ধ করছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। অত্র কলেজের অর্থনীতি বিষয়ের প্রভাষক মো: এরশাদ আলী গত ০৩/০৩/২০২২ ইং তারিখে প্রথম অধ্যক্ষের অনিয়মের বিরুদ্ধে মাউশিতে অভিযোগ দাখিল করেন। জানা যায় যে বৈধ নিয়োগ প্রাপ্ত প্রভাষক মো: এরশাদ আলীর প্রকৃত নিয়োগ বোর্ড অধ্যক্ষ টেস্পারিং করে জালিয়াতি করার জন্য ২০১৯ সালের জুন জুলাই মাস থেকে বৈধ নিয়োগ প্রাপ্ত প্রভাষক এরশাদ বেতন ছাড়া আজ অবধি কষ্টে জীবন যাপন করছেন।
অধ্যক্ষ ড. মোঃ আমজাদ হোসেন কর্তৃক জালিয়াতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
(১) গত ০১/০৪/২০১৫ তারিখে কলেজের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পত্রিকা দৈনিক সমকাল ও সানশাইনে উল্লেখিত বিষয় অধ্যক্ষ আমজাদ অশুভ উদ্দেশ্যে পরবর্তীতে গোপনে পরিবর্তন করে ৫ টি বিষয়ে ভুয়া নিয়োগ দিয়েছেন।
(২)শিক্ষক নিয়োগের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গত ২৮/০৬/২০১৫ তারিখের বৈধ মনোনয়ন চিঠি অধ্যক্ষ পরে গোপনে টেম্পারিং করে চিঠি তৈরী করেছেন ও বিষয় পরিবর্তন করে ভুয়া নিয়োগ দিয়েছেন।
(৩) ডিজি’র প্রতিনিধির গত ২৬/০৭/২০১৫ তারিখের বৈধ চিঠি যেখানে তিনটি বিষয়ে নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু অধ্যক্ষ পরে গোপনে প্রকৃত চিঠির স্বাক্ষর জাল করে আটটি বিষয় বসিয়ে ভুয়া চিঠি তৈরী করে ভুয়া নিয়োগ দিয়েছেন।
(৪) গত ৩১/০৭/২০১৫ তারিখের C S কপি (সাক্ষাৎকার বোর্ডের ফলাফল সীট) অধ্যক্ষ পরে সকল স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া C S কপি তৈরী করে অবৈধ পাঁচটি বিষয় নিয়োগ দেখিয়েছেন।
(৫) কলেজ গভর্নিং বডির গত ২২/০৮/২০১৫ তারিখের চলমান মূল রেজুলেশন যেখানে তিনটি বিষয়ে প্রকৃত নিয়োগের উল্লেখ ছিল। অধ্যক্ষ পরবর্তীতে ঐ মূল রেজুলেশন ব্যাপক কাটাকাটি করে তিনটির জায়গায় ঘোষামাজা করে আটটি বিষয় বসিয়ে বিধিবহির্ভূত নিয়োগের উল্লেখ করেছে অর্থ লোভী অধ্যক্ষ যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
(৬) গত ৩১/০৮/২০১৫ তারিখের মোঃ এরশাদ আলীর সঠিক নিয়োগ পত্রের পদ অধ্যক্ষ পরে পরিবর্তন করেছেন অসৎ উদ্দেশ্যে।
(৭) শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গত ২৯/০৪/২০২০ তারিখের বৈধ স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০৭৪.০০২.০০২.২০১৯(অংশ -৫).৮৩ এই স্মারক অধ্যক্ষ পরিবর্তন করে ৩৭.০২.০০০০.১০২.৯৯.০০১.২০.১৪ এই ভুয়া স্মারক লিখেছেন।
অধ্যক্ষের উপরোক্ত সকল জালিয়াতি রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা অফিসের পরিচালক মহোদয় সরেজমিনে কলেজে গিয়ে তথ্য যাচাই করে অধ্যক্ষের সকল জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছিলেন ও লিখিত মন্তব্য করে অধ্যক্ষের শাস্তির জন্য মাউশি অধিদপ্তর নির্দেশনা চেয়েছিলেন।
আরো জানা যায় যে প্রভাষক এরশাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাউশি অধিদপ্তর ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিক বার সরেজমিনে কলেজে তদন্ত সময়ে অধ্যক্ষ আমজাদ কলেজ থেকে পলাতক ছিলেন। সকল তদন্ত টিম অধ্যক্ষের অনিয়মের প্রমাণ পান।
সর্বশেষ মাউশিতে গত ২০/ ০২/২০২৩ ইং তারিখের শুনানিতেও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রভাষক এরশাদ আলীর আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় এবং কলেজ সভাপতি ও অধ্যক্ষের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর ধরা ১৭.৯, ১৮.১ এর গ এবং ঙ অনুযায়ী শাস্তি নিশ্চিত হওয়ায় গত ১৫/০৩/২০২৪ ইং তারিখে মাউশির উপ পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান ও ০১/০৪/২০২৪ ইং তারিখে সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাসের স্বাক্ষরিত চিঠিতে অধ্যক্ষের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
শাস্তি থেকে বাঁচতে অধ্যক্ষের পুনরায় চলমান যড়যন্ত্র ও ক্ষমতার অপব্যবহার তুলে ধরা হলোঃ
অধ্যক্ষের শাস্তি হবে তা তিনি নিশ্চিত জেনে নিজের অপরাধ লুকানোর জন্য ও নিজের বেতন ও চাকরি বাচাঁতে আইন ও নিয়মের সাথে না পেরে মাউশি অধিদপ্তর এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে অবজ্ঞা করে বর্তমানে কলেজে বৈধ নিয়োগ প্রাপ্ত প্রভাষক মোঃ এরশাদ আলীর সাথে পুনরায় অনিয়ম, নানা ষড়যন্ত্র ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছেন কয়েক মাস থেকে।
জানা যায় প্রভাষক মোঃ এরশাদ আলী কলেজে উপস্থিত হওয়ার পরেও অধ্যক্ষ হাজিরা খাতা গোপন করেন এবং এরশাদ আলীকে স্বাক্ষর করতে দিচ্ছেন না ও ক্লাশ নিতে দিচ্ছেন কয়েক মাস থেকে। জানা যায় অধ্যক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাষক এরশাদ আলীকে কলেজের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন। অধ্যক্ষ যড়যন্ত্র করে নানাভাবে এরশাদ আলীকে পাগল, মাথা টালমাতাল, অকথ্য ভাষা ও উস্কানিমূলক নানা কথাবার্তা বলছেন। অধ্যক্ষ যড়যন্ত্র করে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এরশাদ আলীর বিষয় (অর্থনীতিতে) ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করাতে নিষেধ করছেন ও অর্থনীতিতে ভর্তি শুন্য করার চেষ্টা করছেন। এমন কি অর্থনীতিতে ভর্তিকৃত ছাত্র-ছাত্রীর নাম ভর্তি রেজিস্ট্রার থেকে লাল কালি দিয়ে গোপনে কেটে অধ্যক্ষ বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই সকল ষড়যন্ত্র করেও অধ্যক্ষ শাস্তি থেকে বাঁচতে পারলেন না। তিনি প্রভাষক এরশাদ আলীর সততার নিকট পরাজয় হলেন।
জানা যায় উক্ত কলেজে পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থ সম্পদ আছে। অধ্যক্ষ এখন কলেজের অর্থ অপচয় ও নষ্ট করছেন এবং ছোটাছুটি করছেন শুধু নিজের চাকরি বাঁচাতে।
অন্যদিকে কলেজ প্রতিষ্ঠাতার ভাতিজা জনাব মোঃ আ: হাকিম, এলাকাবাসী ও কলেজ মার্কেটের দোকানদার গন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ দুদক চেয়ারম্যান বরাবর ঢাকাতে দাখিল করেছেন এবং তা তদন্ত শেষে কাজ চলমান রয়েছে।
অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেনের স্হায়ী বরখাস্ত দাবি সহ বিভাগীয় আইনি ব্যবস্হা গ্রহনের দাবি করছেন কলেজ প্রতিষ্ঠাতা মহোদয় জনাব আলহাজ্ব মো: সিদ্দিক হোসেন (কানাডা প্রবাসী), কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্যবৃন্দ, উপাধ্যক্ষ, অন্যান্য শিক্ষক, ছাত্র – ছাত্রী, ছাত্র অভিভাবক এবং কলেজ এলাকার সকল আমজনতা।
সেই সাথে সকলে ভুক্তভোগী বৈধ প্রভাষক ( অর্থনাীতি) মোঃ এরশাদ আলীর ২০১৯ সাল থেকে ক্ষতি পুরন সহ বেতন ভাতা স্বল্প সময়ের মধ্যে চালুর জন্য শিক্ষা মন্ত্রী মহোদয় এবং মহা-পরিচালক মাউশি অধিদপ্তরের নিকট অনুরোধ করছেন কলেজের গভর্নিং বডি, উপাধ্যক্ষ, অন্যান্য সকল স্টাফ, ছাত্র- ছাত্রী ও কলেজ এলাকার আমজনতা এবং প্রভাষক মো: এরশাদ আলী নিজে ও তার মা বাবা।