জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক :
শেখ হাসিনা দিল্লিতে মোদির লগে বইসা রাজনীতি করতেছে। আট মাসেও আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার পাই নাই। সরকার তার বিচার না করলে আমরা শহিদ পরিবার নিজ হাতে বিচার করমু।শেখ হাসিনাকে দিল্লি থেকে টাইন্যা আইনা পাড়ায়া পাড়ায়া মারমু।’
এভাবেই জুলাই বিপ্লবের শহিদ মেহেদি হাসানের মা পারভিন চব্বিশের গণহত্যার বিচারের দীর্ঘসুত্রিতার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যে দিল্লিতে পলায়া আছে তারে কি টাইন্যা আনার লোক নাই? দেশে কি সরকার নাই? বিএনপি জামায়াত নাই? জনগণ নাই? তারা কেউ হাসিনাকে ফিরাইয়া আইন্যা বিচার করছে না। অথচ আওয়ামী লীগের লোকেরা আমাগো হুমকি ধামকি দিয়া যাইতেছে।’
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে জুলাইয়ের শদিদদের পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধা, রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ চার শতাধিক নাগরিকদের সম্মানে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অতিথির বক্তৃব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্য শহিদ পরিবার ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নাগরিকরা সবাই ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তারা এ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের রাজু ভাস্কর্যে টানা ৩৬ দিন ধরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি করায় জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদকে অভিনন্দন জানান। তারা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে ফ্যাসিবাদী হিসেবে নিষিদ্ধ করার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এ সময় জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান ফ্যাসিবাদ নিষিদ্ধ, নতুন সংবিধান প্রণয়নে গণপরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনসহ ১১ দফা দাবিতে সর্বাত্মক গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিলাল হোসাইন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক মতাদর্শ বাংলাদেশি মুসলিম জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশী মুসলিম জাতীয়তাবাদ’ হতে পারে একটি শক্তিশালী আদর্শিক ও রাষ্ট্রীয় দর্শন, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে, ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রতিরোধ করবে। এ আদর্শ বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানে নিয়ে যাবে, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সমন্বয় করবে, এবং একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান মো. আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফের পরিচালনায় বক্তৃতা করেন শহিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক অধ্যাপক ড. আমিনুর রহমান মজুমদার, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবি পার্টির ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুঁইয়া, অধ্যাপক ড. বিলাল হোসাইন, জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ ও অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান মো. শফিউর রহমান ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ প্রমুখ।
জুলাই শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহীদ মেহেদী হাসানের বাবা মেহের আলী ও মা পারভিন আক্তার, শাহাদাত হোসেন শাওনের বাবা বাছির আলম ও মা শামসুন নাহার, শহীদ শাকিলের বাবা বাবু ও মা হেলেনা বেগম, শহীদ রানা তালুকদারের মা রুবি বেগম, স্ত্রী রুনু তালুকদার ও ছেলে মেহরাজ তালুকদার। আহত জুলাই যোদ্ধা জিহাদ হোসেন, আহত মিলন শিকদারের স্ত্রী ও রিয়াদ মোর্শেদ অপুর মা।
আরও উপস্থিত ছিলেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম গাউস আল কাদেরী, নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমীর চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার, লেখক আলী আহমেদ মাবরুর, ছাত্র শিবিরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুহতাসিম বিল্লাহ, বাংলাদেশ নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মস শামসুদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির মজুমদার, সাইয়েদ কুতুব ও রাবেয়া আক্তার; সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, গালীব ইহসান, ইঞ্জিনিয়ার ইমামুল হক ও সৌরভ শাকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য ওয়াসিম আহমেদ ও তৌহিদ তপু, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, সহকারী সদস্য সচিব মো. আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ ও সদস্য সচিব মুহিব খান, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম প্রমুখ