রাজশাহীতে বাড়ি দখলে চায় পবা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি
পবা উপজেলা প্রতিনিধি
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি পবা উপজেলা শাখার নামে ক্রয়কৃত বাড়িটি ফেরত চায় সংগঠনের সদস্যরা। এই মর্মে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
অভিযোগে সংগঠনের সভাপতি রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসূল এর পক্ষে বলা হয়, “পবা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নামে কবল দলিল মূলে রাজশাহী শহরের উপশহর হাউজিং ষ্টেট এ একটি বাড়ি রয়েছে। বাড়ির নম্বর -৩১৫বি।
বাড়িটি গত ১৯৭৮ সালের ৩১ আগস্ট তারিখে কবল দলিল মূলে (যার নম্বর- ১৪৯১৪/২৮৫৮৮০) সাধারণ সম্পাদক, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, পবা রাজশাহী এর নামে রেজিষ্টি হয়। তারপর হইতে বাড়িটি সমিতির অফিস হিসেবে ব্যবহার হতো। পরবর্তীতে বাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয়। ভাড়াটিয়া নিয়মিত ভাড়া প্রাথমিক শিক্ষক সমিতিকে প্রদান করতেন।
উল্লেখ থাকে যে, বর্তমানেও বাড়িটিতে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাইনবোর্ড আছে। ভাড়াটিয়া হিসেবে যিনি আছেন তার নাম আবুল কালাম, পিতা- মৃত নজির উদ্দিন প্রাং ও দিগর বেশ কিছু দিন থেকে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
সমিতির পক্ষ থেকে ভাড়া ভাড়া চাইতে গেলে বিভিন্ন রকম ভয় ভীতি দেখাতে থাকে। অশ্লীল ভাষায় গালীগালাজ করতে থাকে, এমনকি দেশি অস্ত্র উচিয়ে জীবন নাশের হুমকি দেয় ও গুলি করার ভয় দেখায়। আমরা নিরীহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, এক্ষুনে আমরা সমিতির বাড়িটি অফিস হিসাবে ব্যবহার করতে চাই।
বোয়ালিয় মডেল থানা অফিসার ইনচার্জের প্রতি আবেদন জানানো হয় যাতে পবা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির এই বাড়িটি ভাড়াটিয়াদের কাছে থেকে দখলমুক্ত করে তাদের সংগঠনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে বাড়ি এই বাড়ি দখলমুক্ত করতে ২০০৬ সালের ৪ ডিসেম্বর একটি জিডি করা হয়।
এই বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, আমাদের এই বাড়িটিতে আগের ভাড়াটিয়া যারা ছিলো তারা সবাই ভাড়া দিতো আমাদের সংগঠনকে। কিন্তু এই আবুল কালাম যখন আমাদের বাড়িটিতে ভাড়াটিয়া হিসেবে আসে তারপরে কিছুদিন ভাড়া দিতো কিন্তু তারপর থেকে আর ভাড়া দিতো না।
আমরা তার কাছে ভাড়া দেওয়া জন্য বলি অথবা আমাদের বাড়িটি ছেড়ে দিতে বলি কিন্তু তারা আমাদের বাড়িটি ছেড়েও দেয় না। আওয়ামী লীগ সরকার থাকাকালীন মেয়র লিটনের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে আমাদের এই বাড়িটিতে জোর করে তারা দখল করে নেয়। আমাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। সেজন্য আমরা বোয়ালিয়া থানায় একটি অভিযোগ করেছি। এখন আমরা আমাদের এই বাড়িটি ফেরত চাই।
এই বিষয়ে সরজমিনে উক্ত বাড়িতে গেলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমরা দীর্ঘ ৩০ বছর থেকে এই বাড়িটিতে থেকে আসছি। আমরা এই বাড়িটির ভাড়া নিয়মিত প্রদান করে আসছি। আমার শ্বশুর সর্বপ্রথম এই বাড়িটিতে থেকেছিলেন। তিনি ছিলেন পান্নাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
আমরা মোহাম্মদ স্যার, আমিন স্যারদের এই বাড়ির ভাড়া দিয়ে আসছি। অবশ্য মাঝখানে কিছু সময় বাড়িটির ভাড়া দেওয়া হয়নি। এখন এসে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির লোকজন বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করাচ্ছে। আমরা নায্যতার ভিত্তিতেই এই বাড়িতে আছি। তখন একটি চুক্তি হয়েছিল সেই চুক্তির মাধ্যমেই আমরা এই বাড়িতে আছি।”
অভিযোগের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালিয় মডেল থানার এস আই শরিফুল ইসলাম বাড়িটি সরজমিনে পরিদর্শন করে আইননুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে প্রতিবেদককে জানান