আর কিছুদিন পর বেনাপোল দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য শুরু

অর্থ ও বানিজ্য
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

তিন দিন বন্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য আবার শুরু হয়েছে। যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়। দুপুর সোয়া দুইটা পর্যন্ত ১১৩ ট্রাক পণ্য রপ্তানি ও ১৫৩ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে। আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে স্পঞ্জ আয়রন, কর্ন ডিডিজিএস, কাপড়, ব্লিচিং পাউডার, কোয়ার্টাইজ পাউডার, অ্যালামসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য। এ ছাড়া রপ্তানি পণ্যের মধ্যে আছে তৈরি পোশাক, পাটের সুতা, কাঁচা পাট, খালি সিলিন্ডার, জুতা, আরেকা বাদাম ও ভ্রমণ সামগ্রীর লাগেজ।

বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, সরকারের পদত্যাগের পর থেকে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। এ কারণে গত সোমবার দুপুরের পর থেকে ভারতের পেট্রাপোল থেকে পণ্যবোঝাই কোনো ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি কিংবা কোনো ট্রাক ভারতে যায়নি। শ্রমিকেরা কাজ না করায় বন্দরে পণ্য খালাসও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বেনাপোল ও পেট্রাপোলে দেড় হাজারের বেশি পণ্যবোঝাই ট্রাকের জট বাঁধে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পেট্রাপোল পোর্ট ম্যানেজারসহ সেখানকার বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে বাংলাদেশে নিরাপত্তাঝুঁকি নেই বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। কোনো ক্ষয়ক্ষতি হবে না, এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তাঁরা আমাদের ওপরে আস্থা রেখেছেন এবং আজ সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে।’

বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৭২৪টি ভারতীয় ট্রাকের মধ্যে ১৮৫টি ট্রাক পণ্য খালাস করে ভারতে ফিরে গেছে। তবে দুই বন্দরে এক হাজারের বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে পেট্রাপোল বন্দরে ৭৫০টি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ও বেনাপোল বন্দরে ৩০০টির মতো ট্রাক ভারতে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আটকে থাকা পণ্যের মধ্যে বেশির ভাগ শিল্পের কাঁচামাল, রাসায়নিক, কাপড় ও যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ।

জানতে চাইলে বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বুধবার পেট্রাপোলে এক হাজারের বেশি ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। এ ছাড়া পচনশীল পণ্যবোঝাই অনেক ট্রাক ভোমরা ও সোনামসজিদ বন্দরের দিকে গেছে। এ কারণে ওপারে ট্রাকের সংখ্যা কমে গেছে। এপারে ৩০০টির মতো ট্রাক রয়েছে, যার অর্ধেকের বেশি আজ ভারতে প্রবেশ করবে।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ ট্রাক পণ্য আমদানি ও ২০০ থেকে ২৫০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়। ফলে আজই ট্রাকজট অনেকটা কেটে যাবে বলে বন্দর–সংশ্লিষ্টরা জানান।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘তিন দিন পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে। এক সপ্তাহ ধরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলে দেশে কী প্রভাব পড়ে, তা আমরা কোভিড মহামারির সময় টের পেয়েছিলাম।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *