রাসেল আদিত্য,আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
সকল ইস্যুতেই মতভেদ থাকা ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো আজ একটি ইস্যুতে এক জায়গায় অবস্থান নিয়েছে।বাংলাদেশের পরিস্থিতি
নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে আজ এই ঐক্যমতের প্রকাশ দেখা গেছে।
বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান,
বাংলাদেশ প্রশ্নে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সকল দল তাকে সমর্থন করবে।বিরোধী দলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে সিদ্ধান্ত গ্রহন ও বাস্তবায়ন দুই ক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংশ্লিষ্ট রাখতে অভিমত দেওয়া হলে সরকার তাতে সম্মতি জানায়।তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন,শেখ হাসিনা সুরক্ষিত অবস্থায় ভারতেই আছেন।আর নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার তাঁর উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এসব খবর পরিবেশন করছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়,আজ সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয়
বৈঠকে সকল দলের অংশগ্রহণ ছিলো।বাংলাদেশ থেকে ইতিমধ্যে আট হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী দেশে ফিরে এসেছে।আরও প্রায় বারো হাজার ভারতীয় নাগরিক এই মূহুর্তে বাংলাদেশে অবস্থান করছে।তাছাড়া সরকারী কর্মকর্তা হয়ে যাঁরা আছেন,তাঁদের ফিরিয়ে আনার মতো পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে বলে সরকার মনে করেনা।বাংলাদেশ
পরিস্থিতির উপর গভীর মনোযোগী দৃষ্টি রাখছে সরকার।তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সরকার সকল ভারতীয় নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমগুলো বাংলাদেশ বিষয়ে ধারাবাহিক আপডেট প্রচার সহ
গতকাল তথা ৫ আগষ্টের ঘটনা নিয়ে নানান বিশ্লেষনধর্মী অনুষ্ঠান প্রচার করছে।কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশনের নিরাপত্তা ও সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু স্মরনির নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার, জানিয়েছে আনন্দবাজার।
তবে শুভেন্দু অধিকারীর একটি বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে গোটা ভারতে।আজ গণমাধ্যমকর্মিদের সাথে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শুভেন্দু পশ্চিমবঙ্গের সকল মানুষকে “এক কোটি বাংলাদেশী শরনার্থী” কে গ্রহন করার প্রস্তুতী রাখতে ও নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষদের আশ্রয় ও নিরাপদ রাখার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।তাঁর এই বক্তব্যের পরেই শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে হিন্দুস্তান টাইমসের নিকট পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,বাংলাদেশ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাজ করবে তাঁর সরকার।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে “আন্তর্জাতিক
চক্রান্তের সফল প্রয়োগ” বলে মনে করছেন প্রায় সকল ভারতীয় বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজ।কেবল
তাই নয়,সাধারণ নাগরিকদেরও একই মনোভাব ফুটে উঠেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্য ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের একাউন্টে পোস্টের মাধ্যমে।
তাঁদের অনেকেই শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশ জুড়ে চালানো ভয়ানক সহিংসতার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের বর্তমান পরিনতিকে ছাত্র আন্দোলনের ফসল হিসেবে মানতে নারাজ।এক্স(সাবেক টুইটার) ও ফেসবুক জুড়ে ব্যাপক ভারতীয় নাগরিক বিশেষ করে গণভবনে লুটপাট,সংসদ ভবনের অধিবেশন কক্ষে বসে ধুমপান ও বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্যের চুড়ায় উঠে অপদস্ত করার ছবি শেয়ার করেন নিজের পোস্টে।
সূত্র:- ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৬ আগষ্টের সম্প্রচার থেকে।