নানা অনিয়ম প্রমাণিত হয়ে অধ্যক্ষের বেতন বন্ধ, তবুও সভাপতি নিচ্ছে না কোন ব্যবস্হা:

Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

নিজস্ব প্রতিনিধি:
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলাধীন ঐতিহ্য বাহি বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রি কলেজের নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ২০১৪ সালের শেষের দিকে মোটা অংকের বিনিময়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মো: আমজাদ হোসেন কর্তৃক নানা অনিয়ম প্রমাণিত হয়ে অধ্যক্ষের বেতন বন্ধ হওয়ার পরেও কলেজ গভর্নিং বোর্ডের সভাপতি যতীন্দ্র মোহন প্রামানিক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং তিনি অধ্যক্ষের অনিমের সাথে এক হয়ে ভিন্ন উদ্দেশ্যে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। অধ্যক্ষ কর্তৃক অশুভ উদ্দেশ্যে ও অর্থ লোভে গোপনে সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত জনাব মোঃ এরশাদ আলী, প্রভাষক – অর্থনীতি এর গত ০২/০৫/২০২০ খ্রী. তারিখের এমপিওভুক্তি সংক্রান্ত আবেদনে কাগজপত্রে ও কলেজ গভর্নিং বডির গত ২২/০৮/ ২০১৫ সালের চলমান মূল রেজুলেশন টেম্পারিং করা, কলেজ পরিদর্শক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ও ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষর টেম্পারিং করা ও অন্যান্য বিধি মোতাবেক কার্যক্রমে ব্যত্যয় করার বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে গত ২০/০২/২০২৩ খ্রী. তারিখে শুনানীকালে প্রতীয়মান হয়েছে এবং অধ্যক্ষ গভর্নিং বডির সদস্য সচিব থাকায় তিনি উক্ত অনিয়মের সাথে জড়িত বলে প্রমাণিত হয়েছে।

শুনানী পরবর্তীতে মাউশি অধিদপ্তর অধ্যক্ষ এবং কলেজ গভর্নিং বডির বর্তমান সভাপতি যতীন্দ্র মোহন প্রামানিক এর লিখিত ব্যাখ্যা ও মতামত চান। কিন্তু তাদের প্রদত্ত মতামত ও ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রভাষক মো: এরশাদ আলীর আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা -২০২১ এর ধারা ১৭.৯,১৮.১ এর ( গ এবং ঙ) অনুযায়ী মাউশি অধিদপ্তর কর্তৃক গত ১৫/০৩/২০১৫ তারিখের চিঠির মাধ্যমে অধ্যক্ষ ড. মো: আমজাদ হোসেন, ইনডেক্স নং- R840239 এর এমপিও Stop Payment করেছেন।

উক্ত অনিয়ম গুলো করে অধ্যক্ষ ডিগ্রি শাখায় গোপনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিধি বর্হিভূত ভাবে পাঁচটি বিষয় যথা বাংলা, ইংরেজি, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ভুগোল বিষয়ে অবৈধ নিয়োগ দেখিয়েছেন বেতন করে দিবেন বলে। আজ অবধি কলেজের শিক্ষক হাজিরা খাতায় অবৈধ পাঁচজনের নাম ও স্বাক্ষর রয়েছে এবং তাঁরা কলেজে যাওয়া আসা করছেন। বিষয় টি জরুরি ভিত্তিতে খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্হা নেওয়া দরকার।

বৈধ নিয়োগ প্রাপ্ত প্রভাষক মো: এরশাদ আলীর বেতন আটকে থাকায় তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। প্রভাষক মো: এরশাদ আলীর বৈধ নিয়োগ বোর্ড ব্যবহার করে অধ্যক্ষ যে সমস্ত অনিয়ম ও জালিয়াতি করেছেন তা নিম্নে প্রমাণ সহ বর্ণনা করা হলো:

(১) গত ০১/০৪/২০১৫ তারিখে কলেজের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পত্রিকা দৈনিক সমকাল ও সানশাইনে উল্লেখিত কিছু বিষয় অধ্যক্ষ অশুভ উদ্দেশ্যে পরবর্তীতে গোপনে পরিবর্তন করে ভুয়া পাঁচ টি বিষয় নিয়োগ দিয়েছেন।

(২)শিক্ষক নিয়োগের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গত ২৮/০৬/২০১৫ তারিখের বৈধ মনোনয়ন চিঠি অধ্যক্ষ পরে গোপনে জালিয়তি করে চিঠি তৈরী করেছেন এবং বিষয় পরিবর্তন করে অবৈধ পাঁচটি বিষয় নিয়োগ দেন।

(৩) ডিজি’র প্রতিনিধির গত ২৬/০৭/২০১৫ তারিখের চিঠি বৈধ চিঠি যেখানে তিনটি বিষয় যথা গার্হস্থ্য অর্থনীতি ( ফারহানা), মনোবি (মো: শহিদুজ্জামান) ও অর্থনীতি ( মো: এরশাদ আলী) নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু অধ্যক্ষ পরে গোপনে এই প্রকৃত চিঠির স্বাক্ষর জাল করে আটটি বিষয় বসিয়ে ভুয়া চিঠি তৈরী করে ভুয়া নিয়োগ দিয়েছেন।

(৪) গত ৩১/০৭/২০১৫ তারিখের C S কপি (সাক্ষাৎকার বোর্ডের ফলাফল সীট) এর সকল স্বাক্ষর অধ্যক্ষ টেম্পারিং করে ভুয়া C S কপি তৈরী করেছেন অবৈধ পাঁচটি বিষয় নিয়োগ দেন।

(৫) কলেজ গভর্নিং বডির গত ২২/০৮/২০১৫ তারিখের মূল রেজুলেশনে যেখানে বৈধ তিনটি বিষয় গার্হস্থ্য অর্থনীতি, মনোবিজ্ঞান ও অর্থনীতি নিয়োগের উল্লেখ ছিল। অধ্যক্ষ পরবর্তীতে ঐ মূল রেজুলেশন ব্যাপক কাটাকাটি করে তিনটির জায়গায় আটটি বিষয় বসিয়ে বিধিবহির্ভূত পাঁচটি বিষয় নিয়োগের উল্লেখ করেছেন অর্থ লোভী অধ্যক্ষ যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

(৬) গত ৩১/০৮/২০১৫ তারিখের মোঃ এরশাদ আলীর সঠিক নিয়োগ পত্রের পদ অধ্যক্ষ পরে পরিবর্তন করেছেন অসৎ উদ্দেশ্যে। যা এরশাদ বেতন না হওয়ার মূল কারণ।

(৭) শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গত ২৯/০৪/২০২০ তারিখের বৈধ স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০৭৪.০০২.০০২.২০১৯(অংশ -৫).৮৩ এই স্মারক অধ্যক্ষ পরিবর্তন করে ৩৭.০২.০০০০.১০২.৯৯.০০১.২০.১৪ এই ভুয়া স্মারক লিখেছেন প্রভাষক মো: এরশাদ আলীর গত ০২/০৫/২০২০ খ্রী. তারিখের এমপিও আবেদনের অগ্রায়ন পত্রে।

অধ্যক্ষের উপরোক্ত সকল জালিয়াতি রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা অফিসের ঐ সময়ের পরিচালক মহোদয় প্রমাণ পেয়েছিলেন ও এরশাদ আলীর বেতন না হওয়ার লিখিত মন্তব্য কপিতে প্রমাণ পূর্বক অধ্যক্ষের শাস্তির জন্য মাউশি অধিদপ্তর নির্দেশনা চেয়েছিলেন।

জানা যায় যে অধ্যক্ষ এরশাদ আলীর বেতন না হওয়ার কারণ দীর্ঘদিন ধরে অকৌশল করে ও নানা তাল বাহানায় পার করেছেন। এক পর্যায়ে এরশাদ আলী কলেজ গভর্নিং বডিকে জানালে সভাপতি যতীন্দ্র মোহন প্রামানিক, শিক্ষক প্রতিনিধি বিধান কুমার এবং অন্য সদস্য বৃন্দগণ এরশাদ আলীকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বলেন। সভাপতি মাঝখানে বলেন যে অধ্যক্ষের লজ্জা নাই, সে অনিয়ম করেছে অধ্যক্ষের শাস্তি হবেই। শিক্ষক প্রতিনিধি বিধান কুমার তিনিও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কথা বলেন।

পরবর্তীতে গত ০৩/০৩ /২০২২ তারিখে এরশাদ আলী অধ্যক্ষের উপরোক্ত অনিয়ম তুলে ধরে মাউশি অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন এবং শেষ পর্যন্ত অভিযোগ সত্য প্রমান হয়।

জানা গেছে যে, অধ্যক্ষের
অনিয়মের বিষয়টি এখন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ঢাকাতে ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর কাজ চলমান রয়েছে।

উপরোক্ত অনিয়মের দায়ে অধ্যক্ষের বেতন বন্ধ হয়েছে ও অন্যান্য শাস্তি নিশ্চিত জেনে ও গভর্নিং বডির কমিটি ভেঙ্গে যাবে তা জেনে অধ্যক্ষ ও সভাপতি এখন নিজের অপরাধ লুকানোর জন্য ও নিজের চাকরি ও পদ বাচাঁতে আইন ও নিয়মের সাথে না পেরে মাউশি অধিদপ্তর এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে অবজ্ঞা করে বর্তমানে কলেজে বৈধ নিয়োগ প্রাপ্ত প্রভাষক মোঃ এরশাদ আলীর সাথে পুনরায় অনিয়ম, নানা ষড়যন্ত্র ও ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।
জানা যায় প্রভাষক মোঃ এরশাদ আলী কলেজে উপস্থিত হওয়ার পরেও অধ্যক্ষ হাজিরা খাতা গোপন করেন এবং এরশাদ আলীকে স্বাক্ষর করতে বাধা প্রদান করে স্বাক্ষর করতে দিচ্ছেন না কয়েক মাস যাবত। জানা যায় অধ্যক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাষক এরশাদ আলীকে কলেজের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন। অধ্যক্ষ যড়যন্ত্র করে নানাভাবে এরশাদ আলীকে পাগল, মাথা টালমাতাল, অকথ্য ভাষা ও উস্কানিমূলক নানা কথাবার্তা বলছেন। অধ্যক্ষ যড়যন্ত্র করে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এরশাদ আলীর বিষয় (অর্থনীতিতে) ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করাতে নিষেধ করছেন ও অর্থনীতিতে ভর্তি শুন্য করে দিচ্ছেন। এমন কি অর্থনীতিতে ভর্তিকৃত ছাত্র-ছাত্রীর নাম ভর্তি রেজিস্ট্রার থেকে লাল কালি দিয়ে গোপনে কেটে বাদ দেওয়া ম, মিথ্যা অপবাদ ও মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং মাউশিতে। বর্তমানে অধ্যক্ষ এরশাদ আলীর অপূরনীয় ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন।
জানা যায় এখন অধ্যক্ষ ও সভাপতি এক হয়ে কলেজের অর্থ অপচয় করে ছোটাছুটি করছেন শুধু অধ্যক্ষের চাকরি ও সভাপতির পদ বাঁচাতে।

উল্লেখ্য যে, বর্তমান সভাপতি অত্র কলেজেই বর্তমান অধ্যক্ষের পূর্বে
একটানা বিগত ২৬ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন, এখানেই নানা রহস্য লুকিয়ে আছে। এজন্যই তিনি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং অধ্যক্ষের নানা অনিমের সাথে এক হয়ে অর্থ লোভে নানা ষড়যন্ত্র মূলক বিধি বহির্ভূত কাজ করে অপূরনীয় ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন ভুক্তভোগী ও অভিযোগকারী শিক্ষক মো: এরশাদ আলীর বিরুদ্ধে।

আরো জানা যায় যে অত্র কলেজের ধানী জমি, পুকুর, আম বাগান, কাঠের বাগান, কলেজ মার্কেট সব মিলে প্রায় ৫০- ৬০ বিঘা জমিজমা রয়েছে। সব জমি কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের পক্ষ থেকে কলেজে দেওয়া হয়েছে।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো অল্পদিনেই অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন অনেক অর্থের মালিক হন এবং রাজশাহী শহরের বহরমপুর মোড়ে বহুতল ভবনের বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেছেন।
আরো জানা যায় যে, সেই মর্মে কলেজ প্রতিষ্ঠা পরিবারের সদস্য জনাব আব্দুল হাকিম প্রাং ও জনসাধারণ অধ্যক্ষ কর্তৃক নিয়োগ জালিয়াতি ও নানা অনিয়ম সহ কলেজের অর্থ আত্মসাৎ এর বিরুদ্ধে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছেন এবং তদন্ত হয়ে কাজ চলমান রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা জরুরি হয়ে গেছে।

অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেনের স্হায়ী বরখাস্ত করন ও গভর্নিং বডির অপসারণ সহ বিভাগীয় আইনি ব্যবস্হা গ্রহনের দাবি করছেন কলেজ প্রতিষ্ঠাতা মহোদয় (বর্তমান কানাডা প্রবাসী) কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য, উপাধ্যক্ষ, অন্যান্য শিক্ষক/কর্মচারী, ছাত্র – ছাত্রী, অভিভাবক, এরশাদ আলির নিয়োগ কালীন সদস্য বৃন্দ এবং কলেজ এলাকার জনসাধারণ।
সেই সাথে সকলেই ভুক্তভোগী বৈধ প্রভাষক ( অর্থনাীতি) মোঃ এরশাদ আলীর ক্ষতি পুরন সহ বেতন ভাতা স্বল্প সময়ের মধ্যে চালুর জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাউশি অধিদপ্তরের নিকট অনুরোধ করছেন। এমন দাবি করছেন প্রভাষক মো: এরশাদ আলী নিজে ও তার অতি কষ্টে থাকা মা-বাবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *