জন্মভূমি নিউজ ডেক্স
রাজধানীর কর্মজীবীদের অধিকাংশের ছুটি শেষ হচ্ছে আগামীকাল শনিবার। এ উপলক্ষে দু-এক দিন আগ থেকেই ঢাকায় ফিরছেন চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। রীতিমতো কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ঢল নেমেছে বিভিন্ন টিকিট কাউন্টারে। তাদের কাছ থেকে গলাকাটা ভাড়া আদায় করা হয়েছে বলে শুক্রবার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। দ্বিগুণ মূল্যে টিকিট কিনতে বাধ্য হয়েছেন কেউ কেউ।
স্বপন চৌধুরী, (রংপুর) জানান, অনলাইনে বিক্রির কথা বলা হলেও রংপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া কোনো বাসের টিকিট ঘরে বসে কিনতে পারছেন না যাত্রীরা। মিলছে না কাউন্টারেও। তবে অতিরিক্ত ভাড়া দিলে ঠিকই টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। অনেক সময় দ্বিগুণ দামও দিতে হচ্ছে। যাত্রীদের গলা কাটতে পরিবহন কর্তৃপক্ষের এটা পুরোনো ফন্দি! ভাড়া নির্দিষ্ট করে তালিকা টানিয়ে দায় সেরেছে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। কালোবাজারে টিকিট ছেড়ে যাত্রীদের গলা কাটছে এসআর ট্রাভেলস, শাহ আলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, নাবিল পরিবহনসহ সব বাস কর্তৃপক্ষই।
শুক্রবার শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে (নন-এসি) স্ত্রী-সন্তানসহ ভ্রমণ করেন রবিউল ইসলাম। ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই কর্মকর্তা বলেন, রংপুর থেকে ঢাকার ভাড়া ৮৬০ টাকা হলেও কালোবাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ৩ হাজারে। আগমনী এক্সপ্রেসে (এসি) ভ্রমণ করা যাত্রী সিফাত মাহমুদ জানান, ভাড়া ১ হাজার ২০০ টাকা হলেও তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ২ হাজার টাকা।
এদিন রংপুরের কামারপাড়ায় কোচ স্ট্যান্ডে দেখা যায়, ঢাকাগামী যাত্রীদের দীর্ঘ সারি। মহাসড়কে যানজটসহ নানা কারণে সময়মতো গাড়ি না আসায় তাদের অপেক্ষার প্রহর যেন কাটছিল না।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টারে গাড়ির অপেক্ষায় বসে থাকা চাকরিজীবী মহিন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘ঈদের ছুটি কাটাতে এসে বিপাকে পড়েছি। চাকরি বাঁচাতে অনেক কষ্টে দ্বিগুণ দামে টিকিট কিনতে হয়েছে। বিকেল ৪টায় গাড়ি ছাড়ার কথা ছিল। সেই বাস রাত ৮টায়ও ছাড়েনি।’
এসআর পরিবহনের ম্যানেজার মিঠু মিয়া বলেন, যানজটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকা থেকে বাস এসে না পৌঁছানোয় রংপুর থেকে ছাড়তেও দেরি হচ্ছে। শ্যামলী পরিবহনের সুপারভাইজার নবীউল্লাহ বলেন, সব টিকিট অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। তাই কাউন্টার কিংবা অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে না। মালিক নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে আগমনী এক্সপ্রেসের মালিক ও এফবিসিসিআইর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, এসআর ট্রাভেলসের মালিক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ কয়েকজনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তারা রিসিভ করেননি।
বিআরটিএ রংপুরের মোটরযান পরিদর্শক মাহবুবার রহমান সমকালকে জানান, শুধু সাধারণ পরিবহন (নন-এসি) গাড়ির টিকিটের মূল্য (রংপুর-ঢাকা) ৮৬১ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। এর চেয়ে বেশি আদায় ও যাত্রী হয়রানি ঠেকাতে নিয়মিত মনিটর করা হচ্ছে, পরিচালনা করা হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিলাসবহুল গাড়ির টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করে মালিক সমিতি। এখানে সরকারের দায় নেই।