বাজার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

অর্থ ও বানিজ্য
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক:
মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে থাকা অতিরিক্ত টাকা তুলে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিল’ নিলামের মাধ্যমে বাজার থেকে একদিনে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতি ওপর যেন চাপ তৈরি করতে না পারে সেজন্য এভাবে টাকা তোলা হচ্ছে।

৭ ও ১৪ দিন মেয়াদি এ বিলের বার্ষিক সুদ দিচ্ছে ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।

নিলামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশ নিবাসী সব ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বিড দাখিল করতে পারলেও ব্যাংকগুলোই এ নিলামে অংশ নিয়েছে বেশি।

তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম নিলামে সাত দিন মেয়াদি বিলে ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ সুদে তিন হাজার ৬১৯ কোটি এবং ১৪ দিন মেয়াদি বিলে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ সুদে তোলা হয়েছে তিন হাজার ৯৫০ কোটি টাকা।

দীর্ঘ আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর আগস্ট মাসে বিলের নিলাম ডেকে ১৯ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা তুলে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৭, ১৪ ও ৩০ দিন মেয়াদি বিলে পাঁচ দিনের নিলামে অংশ নিয়ে এ পরিমাণ টাকা রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা তোলা হয় গত ১১ আগস্ট। ওইদিন ৩০ দিন মেয়াদি বিলে শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ সুদে এ পরিমাণ অর্থ তোলা হয়। গত আগস্টের আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের নিলাম হয়।

এর আগে বাজারে অতিরিক্ত তারল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা বাজায় রাখতে চলতি সেপ্টেম্বর মাসেও নিলামের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ১ সেপ্টেম্বর সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ছাড়াও আগামী ৯ ও ২১ সেপ্টেম্বর ৭ ও ১৪ দিন মেয়াদি বিলের নিলাম হওয়ার কথা রয়েছে। আর ৭, ১৯ ও ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ৩০ দিন মেয়াদি বিলের নিলাম।

এর আগে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন একটি ব্যাংক মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ তথা ২ পয়সা সুদে সাত দিনের জন্য ১৫০ কোটি টাকা রেখেছিল। এরপর থেকে নিলাম বন্ধ ছিল। বাজারে উদ্বৃত্ত তারল্য বেড়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে চিঠি দিয়ে নিলামের বিষয়টি জানানো হয়।

এর আগে চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, অতিরিক্ত তারল্য আর্থিক খাতে অস্থিরতা তৈরি করলে তা তুলে নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। অতিরিক্ত তারল্যের কারণে মূল্যস্ফীতি বা সম্পদের দাম বেড়ে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নীতি গ্রহণে দ্বিধা করবে না।

ঋণ চাহিদা না থাকায় গত জুন পর্যন্ত দেশের ব্যাংকখাতে উদ্বৃত্ত তারল্য দাঁড়ায় ২ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। বিধিবদ্ধ নগদ তারল্য (সিআরআর) সংরক্ষণের পর গত জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে একেবারেই অলস ছিল ৬২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অলস এ অর্থ থেকে ব্যাংক কোনও সুদ পায় না।

এ অর্থ যেন অনুৎপাদনশীল খাতে গিয়ে মূল্যস্ফীতি ওপর চাপ তৈরি করতে না পারে সেজন্য এভাবে টাকা তোলা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *