শীতের সঙ্গে বেড়েছে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ

শীতের সঙ্গে বেড়েছে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ

দেশের খবর
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

 

শীতের দাপটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ। ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশে শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে অভিভাবকদের ভিড় বেড়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, শীতের প্রকোপ গত কয়েকদিনে বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যাও দুই থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) শিশুদের শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত অসুখ নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে অভিভাবকদের ভিড় জমাতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের নার্সদের কক্ষে বসে থাকা হালিমা বেগম ১৫–২০ মিনিট পরপর ৫ মাসের ছেলে ফরিদকে নেবুলাইজ করাচ্ছেন। তিনি জানান, ঠাণ্ডার কারণে গত শনিবার ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। বাচ্চা জন্মগত-ভাবে ঠান্ডা পেয়েছে। চিকিৎসক বলছে তার নিউমোনিয়া হয়েছে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের নিউমোনিয়া ওয়ার্ডের ১৬টি শয্যার সব কটিই পূর্ণ। এছাড়া তিনটি শিশু কেবিনও ভরা। তাদের বেশির ভাগই নিউমোনিয়া আক্রান্ত। সপ্তাহের মধ্যে এখানে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক শিশু। তাদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ২০৫।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ও সহকারী অধ্যাপক ফারহানা আহমেদ বলেন, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ অবস্থায় শীত থেকে শিশুদের বাঁচাতে পরিবারকে সচেতন হতে হবে। শিশুকে কোনোভাবে ঠান্ডা লাগানো যাবে না। সেই সঙ্গে শিশুকে সূর্য ডোবার আগে ও পরে ঘর যথাসম্ভব গরম রাখতে হবে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে অনেক শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

দেশের খ্যাতনামা শিশু-বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, তীব্র শীতের কারণে দুই থেকে তিনগুণ বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ। যেসব রোগী আসছে তাদের বেশিরভাগ শিশু। বাচ্চারা শ্বাসতন্ত্রের নানা ধরনের সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বাচ্চাদের অ্যাজমাও বেড়ে গেছে।

এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রাও (১-২) ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। পাবনা, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও মৌলভীবাজার জেলাসমূহের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ বলছে, কিছু অঞ্চলে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে। বেশিরভাগ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ না হলেও অনুভূত শীত শৈত্যপ্রবাহের মতো তীব্র। শীতের এই দাপট আরও কয়েক দিন স্থায়ী হতে পারে। উত্তরের কনকনে হিমেল বাতাসের কারণে এবার শীতের অনুভূতি বেশি টের পাওয়া যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *