ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক-পিকআপে ছুটছে ঘরমুখো মানুষ

Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

মোঃ আব্দুস সালাম গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি:
৮ মার্চ সোমবার দুপুরে ছুটি পেয়ে শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুর থেকে লাখ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক ঈদ যাত্রায় শামিল হয়েছে। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ঢল নেমেছে। হঠাৎ মহাসড়কে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে পরিবহন সংকটে পড়েছে যাত্রীরা। পরিবহন সংকটে থাকা এসব যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক-পিকআপে চলাচল করছে।
গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভবানীপুর এলাকায় ময়মনসিংহগামী ১৪-১৫টি খোলা ট্রাক, ৭-৮টি পিক আপ ঈদ যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ট্রাকে উঠতে ব্যবহার করা হয়েছে বসার টুল। জনি নামের ট্রাকের এক সহকারী ময়মনসিংহের ফুলপুরের যাত্রী ডাকছেন। জনি জানান, পুরো বছরই তার ট্রাক ভবন নির্মাণে ব্যবহার্য ময়মনসিংহের বালু গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় পরিবহন করে। ঈদের ছুটিতে বালুর কোন অর্ডার না থাকায় মালিক ও চালক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেন। একই কথা জানান অপর সহকারী আশরাফুল। সে জানায়, ঈদের ২-৪দিন আগে আমাদের আয় উপার্জন বন্ধ থাকে। ঈদের যাত্রীবহন করলে আয় হয়, ঈদ স্বাচ্ছন্দ্যে করা যায়।

সহকারী জনি বলেন, ভবানীপুর থেকে ময়মনসিংহের ফুলপুর পর্যন্ত আমরা জনপ্রতি যাত্রী ৪৫০ টাকা ভাড়া চাচ্ছি। এর মধ্যে ৪০০টাকায় কেউ রাজি হলেও আমরা তাকে তুলে নিচ্ছি। দিন শেষে হয়তো একটি ট্রিপ দেয়া যাবে।

গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকা থেকে ময়মনসিংহের যাত্রী ৩৫০ টাকায় নিচ্ছেন পিক আপ চালক আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ঈদের আগে অনেক কারখানা থাকে বন্ধ, আমাদের কোন কাজ থাকে না। মহাসড়কে অনেক যাত্রী, অনেকেই গাড়ি পাচ্ছেন না। তাই আমাদের বাড়তি আয় হচ্ছে ঈদের ঘরে ফেরা মানুষের উপকারও হচ্ছে।

পরিবার নিয়ে বাঘের বাজার এলাকায় নেত্রকোনা যেতে বাসের জন্য অপক্ষো করছেন মাহবুর রহমান। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে যে বাসগুলোই ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে আসছে সবগুলো বাসই যাত্রীতে পরিপূর্ণ থানা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে উঠতে পারছি না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও বাস না পেয়ে বাধ্য হয়েই পিক আপ যোগে ময়মনসিংহের বাইপাস পর্যন্ত জনপ্রতি ১৫০ টাকায় রওনা দিয়েছি।

অপর যাত্রী শাহরিয়ার বলেন, বাসের সংকট রয়েছে, তাছাড়া বাসের ভাড়াও বেশি নিচ্ছে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে বাস না পেয়ে খোলা ট্রাকে ২০০ টাকা ভাড়ায় রওনা দিয়েছি। এতে ঝুঁকি থাকলেও বাধ্য হয়েই চলাচল করতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ভবানীপুর থেকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে যাচ্ছেন গার্মেন্টস্ শাহজাহান আহমেদ। তিনি বলেন, বাসে ময়মনসিংহের ব্রিজ পর্যন্ত ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। অপরদিকে একই জায়গা থেকে ট্রাক-পিক আপে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। ঝুঁকি থাকলেও বাসের চাইতে সহজেই ট্রাক-পিকআপ পাওয়া যাচ্ছে, ভাড়াও তুলনামুলক কম। তাই অনেকেই ট্রাকে পিক আপে যাতায়াত করছে।

মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহবুব মোরশেদ জানান, ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাত্রা স্বাচ্ছন্দ্যেময় করতে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।

এখন পর্যন্ত মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। দুপুর থেকে সড়কে যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এখনো অতিরিক্ত ভাড়ার অভিযোগ পাইনি। কেও যদি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও সকল যাত্রীকে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে চলাচল করতে নিষেধ করা হচ্ছে, তবুও কেউ চলাচল করলে তাদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *