নিজস্ব প্রতিবেদক
রায়পুরা উপজেলার মির্জানগর গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে মো:মফিজ উদ্দিন একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা।তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক ও মুক্তিযোদ্ধা সচিব হারিস মিয়ার স্বাক্ষর জাল করে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিলেন বলে জানা যায়।তিন বছরের মতো নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও।তার মুক্তিযোদ্ধা ভোটার নম্বর ছিল- ৬৫৮ এবং গেজেট নাম্বার ছিল- ৩৫৯৬।কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা চূড়ান্ত যাচাই -বাছাই শুরু হলে ধরা খান মফিজ উদ্দিন। তালিকা যখন সবগুলো অনলাইনে চলে যায় তখনই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।কাগজ পত্র সঠিক না থাকায় বাদ পড়ে যান ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মফিজ উদ্দিন।কিন্তু বাবার সেই কৃতকর্মের সহযোদ্ধা হয়েছেন তারই সুযোগ্য সন্তান মোঃ বশির আহমেদ।
বশির আহমেদ বর্তমানে নরসিংদী ডিসি অফিসের সাধারণ শাখায় কর্মরত।ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বানাতে টাকা নিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে ধরনা দিচ্ছেন তিনি।এ নিয়ে একাধিক অনলাইন ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।বরঞ্চ বুক ফুলিয়ে ডিসি অফিসে চাকুরি করে যাচ্ছেন বশির।একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কিভাবে সরকারি ডিসি অফিসে চাকুরি করেন সেটা বোধগম্য নয় নরসিংদীর সচেতন মানুষের।
একটি গোপন সূত্র জানায়,ডিসি অফিসের সাধারণ শাখার অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন দপ্তর থেকে চাঁদাবাজি করেন বশির।সেই চাঁদার ভাগ পায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।এজন্যই তাকে চাকুরি থেকে সরানো হচ্ছে না।এই কথার সত্যতা মিলেছে চলতি মাসের২৪ তারিখ বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত ও জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক “যুগান্তরে” বিশেষ দিবস ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের অজুহাতে জেলা প্রশাসনের চাঁদাবাজির নিউজের মাধ্যমে।যেই সংবাদ ইতিমধ্যে হইচই ফেলেছে নরসিংদী জুড়ে।বড় বড় রেস্টুরেন্ট, পেট্রোল পাম্প,বিরোধী দলীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চিঠি দিয়ে চাঁদাবাজি করছে জেলা প্রশাসন এমনটাই প্রকাশ পেয়েছে সংবাদে।অন্যদিকে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ডিসির নামে চাঁদাবাজি নিয়ে ছয়লাব রয়েছে ফেসবুক।সনেট নামের এক ব্যক্তি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে 7,000/- করে চাঁদা উঠাচ্ছেন ডিসির নামে।এসব বিষয় নিয়ে নরসিংদী জুড়ে বইছে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড়।একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের চেইন অব কমান্ড।চাঁদাবাজি কেই যেন এই প্রশাসন সবচেয়ে বেশি উৎসাহিত করছে।তা না হলে যেই লোক রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করতে পারেন,বাংলাদেশের মানুষের আবেগের সর্বোচ্চ স্তর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রতারণা করতে পারেন ,সেই লোকের সন্তান কিভাবে ডিসি অফিসেএখনো চাকুরী করেন ??ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাবার অপকর্মের সহযোদ্ধা বশির এখনো ডিসি অফিসে কিভাবে চাকুরি করে সেটাই বড় প্রশ্ন সচেতন মহলের!!
এই বিষয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমকে হোয়াটসঅ্যাপে রিপোর্টটি পাঠিয়ে তার বক্তব্য চাওয়া হলে তিনি কোন বক্তব্য দেননি।পরবর্তীতে তাকে মোবাইলে ফোন দিয়ে বিষয়টি অভিহিত করলে তিনি জানান, আপনি রিপোর্টটি পাঠান।পরবর্তীতে একাধিকবার আবার মোবাইলে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে আইনের আওতায় এনে তার কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পদের হিসাব বুঝে নেবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ,প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী ও সচিবের স্বাক্ষর জালিয়াতি করার কারণে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন এবংতার সন্তানকে সরকারি চাকুরি থেকে অব্যাহতি দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা নরসিংদীর সচেতন মহলের।