ফুলশয্যা না করেই দেনমোহরের টাকা নিয়ে পালালেন রাজশাহীর যুবমহিলা লীগ নেত্রী

রাজশাহী
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিয়ের পর দেনমোহরের টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন রাজশাহীর এক যুব মহিলা লীগ নেত্রী। ফুলশয্যা না করেই পালিয়ে যান তিনি। তার নাম তামান্না আক্তার ফেন্সি (৩১)। তার বাড়ি নগরীর মেহেরচণ্ডী পূর্বপাড়ায়। তিনি নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড যুব মহিলা লীগের নেত্রী। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের মশক শাখার মাঠকর্মী হিসাবে চাকরি করেন।

বিয়ের পর একটি তিন তারকা হোটেলে নতুন বরের সঙ্গে ফুলশয্যার কথা ছিল তার। কিন্তু ফুলশয্যার আগেই বাড়িতে টাকা রেখে আসার কথা বলে কেটে পড়েন ওই নারী। পরে বিয়ের চার দিন পর তিনি তার স্বামীকে তালাকের নোটিশ পাঠান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি ২৯ নভেম্বর নগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি নগরীর পদ্মা আবাসিকের বাসিন্দা। গ্রামের বাড়ি নওগাঁ।

মোস্তাফিজুর রহমানের বয়স ৫৮ বছর। তার সঙ্গে ‘প্রেমের সম্পর্কের’ পর বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তামান্না আক্তার ফেন্সি। রাজশাহী মহানগর যুব মহিলা লীগের প্রতিটি কর্মসূচিতেই সামনের সারিতে দেখা যেত তামান্নাকে।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনি বিবাহিত। তার স্ত্রী অসুস্থ। তাই তিনি দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভাবছিলেন। তামান্না আক্তারেরও বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় ১৪ বছর আগে। ১৩ বছর বয়সি তার একটি মেয়ে আছে।

মোস্তাফিজুর দাবি করেন, এক বছর আগেই বিয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। তখন তামান্নাকে বিয়ের বাজার করতে এক লাখ টাকা দিয়েছিলেন। ওই সময় টাকা নেওয়ার পর বিয়ে করেননি তামান্না। এরপর বছরখানেক দুজনের কোনো যোগাযোগ ছিল না। কিছুদিন আগে আবার যোগাযোগ শুরু করেন তিনি।

মোস্তাফিজুর ২০ নভেম্বর রাতে তামান্নাকে মেহেরচণ্ডী এলাকার একটি কাজী অফিসে নিয়ে যান। সেখানে নগদ ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন।

সম্প্রতি তামান্নার পাঠানো তালাকের নোটিশ হাতে পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তামান্না এই তালাকে সই করেছেন বিয়ের চার দিন পর, ২৪ নভেম্বর।

মোস্তাফিজুর দাবি করেন, এখন তিনি শুনতে পাচ্ছেন যে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তামান্নার ব্যবসা। তিনি ইতোমধ্যে কয়েকজনের নাম জানতে পেরেছেন, যাদের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

তিনি দাবি করেন, বিয়ের দিন দেনমোহরের ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা ছাড়াও দুই মাসের খরচ বাবদ আরও ২৪ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তামান্নাকে। বিয়ের আগে বাজার করতে দিয়েছিলেন আরও ৬০ হাজার টাকা। এছাড়া কাজী অফিসের খরচ বাবদ দেন আরও ২৫ হাজার টাকা।

তামান্না আক্তার ফেন্সি বলেন, বিয়ের পরই আমাকে দুই কাঠা জমি দেওয়ার কথা ছিল। ওই জমিতে একটি ফ্ল্যাটবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ারও কথা ছিল। আর আমার ভবিষ্যতের জন্য ব্যাংকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার মৌখিক প্রতিশ্রুতি ছিল। এসবের কিছুই দেননি মোস্তাফিজুর। তিনি আমাকে বাড়িও নিয়ে যাবেন না। আমার মেয়ের দায়িত্ব নেবেন না। তাই তার সঙ্গে আমার সংসার করা সম্ভব হয়নি।

তিনি দাবি করেন, নিকাহনামায় নগদ মোহরানার ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা বুঝে পেয়েছেন বলে তিনি স্বাক্ষর দিলেও বাস্তবে টাকা পাননি। কাজী অফিস থেকে বেরিয়ে মোস্তাফিজুর টাকা দেননি। তিনি বলেন, আমি যুব মহিলা লীগকে সমর্থন করতাম। তবে কোনো পদে ছিলাম না।

নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, বিষয়টা তো আদালতের ব্যাপার। মোস্তাফিজুর আমাদের কাছে একটা অভিযোগ দিয়েছেন। আমি একজন এএসআইকে তদন্ত করতে দিয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার মতো হলে আমরা নেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *