জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক :
রংপুরে আওয়ামী লীগের নেতারা ফেল করেছেন, তারা ঘুরে দাঁড়ালেই দুর্বৃত্তরা নাশকতা করতে পারত না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, সাধারণ ছাত্রদের সামনে রেখে বিএনপি, জামায়াতের জঙ্গিরা, দেশকে অকার্যকর করতে চেয়েছিল।
তারা গণভবনে আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল, তারা সচিবালয় আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল। ঢাকার অবস্থা খুবই ভয়ংকর ছিল। দেশব্যাপী নাশকতার সঙ্গে যারাই জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। কারও জড়িত থাকার যথাযথ প্রমাণ থাকলে তা পুলিশকে জানাতে হবে।
কোটা সংস্কারের নামে সারা দেশে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে, তা দেশের মানুষ দেখেছেন। সেই নৃশংসতা থেকে রংপুরও বাদ যায়নি। কিন্তু রংপুরে আওয়ামী লীগের দুর্বলতা রয়েছে, নেতারা ফেল করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রংপুরের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা ফেল করায় তারা এসব করতে সাহস পেয়েছে এবং করেছে। ঘুরে দাঁড়ালেই আর এসব করতে পারত না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার কষ্ট হয়, আপনাদের পার্টি অফিস যখন ভাঙচুর করল, তখন আপনারা নাই। অথচ পার্টি অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ভিডিওতে দেখা গেল মাত্র কয়েকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে, আওয়ামী লীগকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। কেননা আমরা বীরের জাতি, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে খালি হাতে আমরা শুধু জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছি।
মন্ত্রী আরও বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে একটি গোষ্ঠী নাশকতা করছে। তবে এ নাশকতার সঙ্গে জড়িত কেউই রেহাই পাবে না। তাদের খুঁজে বের করা হবে এবং আইনের আওতায় বিচার করা হবে। যারা অর্থায়ন করেছে, তাদের চিহ্নিত করা হবে। বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।
মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন, আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সংসদ সদস্য জাকির হোসেন, আসাদুজ্জামান বাবলুসহ অনেকে।
এর আগে রংপুরে ক্ষতিগ্রস্ত তাজহাট থানা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবন, উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় ট্রেজারার মজিব উদ্দিন আহমদ, প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিজন মোহন চাকি, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদ, বহিরাঙ্গন পরিচালক সাব্বীর আহমেদ চৌধুরী, হল প্রভোস্ট, সহকারী প্রক্টর ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, রংপুর জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময়ের আগে গত ১৬ জুলাই থেকে পরবর্তী কয়েকদিন রংপুরে যে সহিংসতা ঘটে তার একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।