নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর চারঘাটে এক ব্যক্তি রাসেল ভাইপার সাপ মেরে ব্যাগে ভরে উপস্থিত হয়েছেন হাসপাতালে। পরে সাপটি চিহ্নিত করে ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিয়ে সেরে তুলেছেন চিকিৎসকরা। এমনি এক ঘটনার চিত্র তুলে ধরেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আবু হেনা মোস্তফা কামাল। তিনি রাসেল ভাইপার সাপ সম্পর্কেও বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, রাসেল ভাইপারে আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার একিটি গ্রামে। পদ্মা নদী থেকে মিনিট তিনেকের পথ। গত ৩১ মে জমিতে ঘাস কাটার সময় একটি সাপ দেখতে পেয়ে নিজেই সাপটিকে আক্রমণ করে বসেন। নিচু অবস্থা থাকায় ডান চোয়ালে কামড় দিয়ে দেয় সাপটি।
তিনি সাপটিকে মেরে পলিথিন ব্যাগে করে একজনের মোটরসাইকেল যোগে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আইসিইউতে ভর্তির ব্যবস্থা হয়।
সাপের কামড়সহ আইসিইউতে আাসতে সময় লেগেছিল দেড় ঘন্টা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দয়ায় এবং দ্রুত সময়ে আইসিইউতে আমরা নিয়ম মাফিক চিকিৎসা দেওয়ায় তিনি সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে যায়।
আজ রোববার দুপুরে রাজশাহী কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ছবিতে আমার পাশের সেই ব্যক্তি পরিবারসহ দেখা করতে আসেন। ২০১২ সাল থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে প্রতি বছর রাসেল ভাইপার সাপে কামড়ানো অসংখ্য রোগী চিকিৎসা পেয়ে চলেছে
যারা সাপে কামড়ানোর ২ ঘন্টার মধ্যে আমাদের এখানে আসতে পেরেছে তাদের প্রায় সবাই সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে গেছে। তবে দেরিতে চিকিৎসা পাওয়া রোগীদের প্রায় সবার ডায়ালাইসিস লেগেছে। আক্রান্ত স্থানে পচন ধরেছে।
তিনি বলেছেন, আপনার আশেপাশের সকল ওঝাদের সচেতন করুন। তার যেন অতিদ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। রাসেল ভাইপার সাপ নিয়ে আতংকিত না হয়ে সঠিক তথ্য জানুন। আমরা যাঁরা দীর্ঘদিন রাসেল ভাইপার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে চলেছি এবং প্রানী বিদ্যা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞ দের সাথে কথা বলে সঠিক তথ্য জানুন।
রাসেল ভাইপার নিজে আক্রান্ত না হলে সে সাধারণত কাউকে কামড় দেয় না। আমাদের আইসিইউর সকল ভর্তি রোগীরা এ তথ্য দিয়েছে।
সুতরাং, ভয় বা ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সাপে কামড়ানোর যে কোন রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে আনুন। নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের কৃষক ভাইদের গামবুট পায়ে মাঠে কাজ করতে উৎসাহিত করুন। রাসেল ভাইপারকে নিজে থেকে আক্রমণ-বিরক্ত করবেন না।
ওকে ওর মতো থাকতে দিন। আপনিও নিরাপদে থাকবেন।