বাগমারায় বিনা ধান-২৫ এর পরীক্ষামূলক চাষে বাম্পার ফলন

Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজশাহীর বাগমারায় বিনা ধান-২৫ এর পরীক্ষামূলক চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। স্বল্প সময়ে ধানের বাম্পার ফলনে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা যুগিয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত প্রিমিয়াম কোয়ালিটির বোরো জাতের বিনা ধান-২৫। বাসমতি চালের বিকল্প হিসাবে এ ধান চাষাবাদে চিকন চাল আমদানি কমাতে পারে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৩শ পঞ্চম জন চাষি প্রায় একশ হেক্টর জমিতে এবছর পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করেছেন। শ্রীপুর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মান্নান প্রায় এক একর জমিতে বিনা ধান-২৫ এর চাষাবাদ করেছেন। বিনা-২৫ ধানের চাষাবাদ করে তিনি লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।

বাসুপাড়া ইউনিয়নের কৃষক রুস্তম মন্ডল, গণিপুর ইউনিয়নের কৃষক আজাহার আলী, দ্বীপপুর ইউনিয়নের কৃষক রহমত আলী ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা এই ধানের চাষাবাদ করেছেন। উচ্চ ফলনশীল হলেও ধানটি হাইব্রিড নয় বলে দাবি করা হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিনা ধান-২৫ বোরোর উন্নত একটি নতুন জাত। নতুন উদ্ভাবিত এই ধানের জাতটি সর্বাধিক লম্বা ও সরু। এর চালের আকার চিকন ও লম্বা। বিদেশ থেকে যে বাসমতী চাল আমদানি করা হয় এটাও অবিকল সেই চালের মতো। এ জন্য এই চালের চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশি। এর বাজারমূল্যও বেশ ভালো। উৎপাদন ব্যয় অন্য ধানের মতোই। তবে ফলন অন্য ধানের চেয়ে ভালো হওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। দেশের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি এই ধান রপ্তানিও করা যাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ৩ শ পঞ্চাশ জন কৃষক প্রায় এক শ হেক্টর জমিতে এ বছর পরীক্ষা মূলক বিনা-২৫ জাতের ধানের চাষাবাদ করেছেন।

যোগীপাড়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, যদি প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাহলে বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ মণ ধান উৎপাদন হওয়ার আশাবাদী। এই প্রথম নতুন জাতের বিনা ধান-২৫ চাষাবাদ করে বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান গাছের শিষ প্রতি ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টি ধান ধরেছে। অন্যান্য জাতের তুলনায় বিনা ধান-২৫ জাতে শীষ প্রতি ধানের পরিমাণও বেশি। চাষাবাদে আশানুরূপ ফলন হওয়ায় নিজেকে আরো উদ্বুদ্ধ করে তুলছে বলে মনে করেন।

বাগমারা উপজেলার মজিদপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, নতুন জাতের এই ধান পরীক্ষামূলক চাষাবাদে এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ধান কাটা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিনা-২৫ ধানকে মূলত শেখ রাশেল-২৫ ধান নামে নামকরণ করা হয়েছে। ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেলের জন্ম দিনে এ ধানের অবমুক্ত করণ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলায় এ জাতের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যেই সব ধানের কাটা মাড়াই শেষ হবে।

রাজশাহী জেলা প্রশিক্ষন কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, এ বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিনা-২৫ ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আশানুরূপ ফলনও মিলছে। আগামীতে বিনা ধান-২৫ (শেখ রাসেল ধান-২৫) চাষাবাদ আরো বাড়বে বলে তিনি জানান।

এই ধান ২০২২ সালে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। বোরো মৌসুমে এ ধানের চাষ করা হয়ে থাকে। জীবনকাল ১৩৮-১৪৮ দিন এবং প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ৭.৬ মে.টন। চাউল সরু ও চিকন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *