নিজস্ব প্রতিবেদক
মাদক,চুরি ছিনতাই কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানা-পুলিশ। মাদক চুরি ছিনতাই কিশোর গ্যাংদের ছাড় নেই,যেখানেই অপরাধের তথ্য পাওয়া যাবে সেখানেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তারাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ওয়াজেদ আলী। বিশেষ করে আসন্ন ঈদুল আজহা কে কেন্দ্র গরু চুরি প্রতিরোধেও কঠোর অবস্থান নিয়েছে ওসি ওয়াজেদ আলী নেতৃত্বাধীন তারাকান্দা থানা পুলিশ। ২৩ মে বৃহস্পতিবার উপজেলার বিসকা ইউনিয়নের তিলাটিয়া বাজারে আয়োজিত এক উঠান বৈঠকে এক বক্তব্যে এমন তথ্য নিশ্চিত করেন ওসি ওয়াজেদ আলী। তিনি জানান-মাদক, জুয়া, অনলাইন জুয়া, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, কিশোর গ্যাং এবং আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে গরু চুরি রোধে উঠান বৈঠক করে জনগণকে সচেতন করা হয়। এসময় স্থানীয় নেতৃবৃন্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য সহ সাধারন মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
তারাকান্দা থানা সুত্রে জানা গেছে- তারাকান্দা থানায় ওসি ওয়াজেদ আলীর যোগদানের পর থেকে গত চার মাসে, গাঁজা উদ্ধার ২৯ গেজি ৬৫০ গ্রাম। হেরোইন উদ্ধার ৫১৯.১২ গ্রাম। ইয়াবা উদ্ধার ৩ থেকো ৪ হাজার পিস। একাধিক মাদক মামলার আসামি এবং চুরি ছিনতাইকারী গ্রেফতার হয়েছে। গত চার মাসে শুধু তারাকান্দা থানায় মাদকের মামলা হয়েছে ২৪ টি গ্রেফতার হয়েছে ১৪০ জন।
যেখানে ভয় ,সংকোচ, দ্বিধা ,মানবতা ক্ষমতা অধিপত্য চাঁদাবাজি সন্ত্রাস মাদক তাদের জীবনের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। তারা হচ্ছে ৭১ সালে যুদ্ধের সময় আটকে পড়া পাকিস্তানি জনগোষ্ঠী। তারা প্রায় শতাধিক ব্যক্তিরা তারাকান্দা থানায় বসবাস করে থাকেন। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এমন কোন মাদকদ্রব্য নেই যা এখানে মিলতো না, তারাকান্দায় যে কয়েকটি মাদকের স্পট রয়েছে সেগুলো বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। কিন্তু বর্তমান আইনশৃঙ্খলার অভিযানে এখন অনেকটাই মাদক নিয়ন্ত্রণের পথে এই তারাকান্দায় ।
তারাকান্দা থানার প্রতিটি এলাকার প্রত্যেকটি সড়কে পুলিশের কড়া তল্লাশি চৌকি বা চেকপোস্ট রয়েছে, এসব চেকপোস্ট বা তল্লাশি চৌকি পেরিয়ে প্রবেশ করে মরণ নেশা সব ধরনের মাদক। অভিযানও হচ্ছে গ্রেফতারও হচ্ছে একাধিক,প্রতিদিনই চলছে অভিযান। কেউই চায়না সমাজে মাদক থাকুক,সবাই চায় একটি সুন্দর সমাজ,নীল-সবুজের মাঝেই বেড়ে উঠুক নতুন প্রজন্ম। তারাকান্দা থানার ওসি ওয়াজেদ আলী এ বিষয় বলেন,একসময় তারাকান্দা মাদক কারবারিদের নিয়ন্ত্রণে ছিল , প্রতি নিয়তই অধিপত্য বিস্তারের জন্য মাদক বিক্রেতারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়তো। স্থানীয় বাসিন্দারা সবসময় আতঙ্কে থাকতো। স্থানীয় আশপাশের অনেক ব্যক্তিরাই আছেন যারা ভয়ে আতঙ্কে হাঁটাচলা নিরাপদ মনে করত না। কিন্তু এখন আর সেরকম দেখবেন না,আমরা সব স্থানে কিছু চৌকস এবং সাহসী অফিসারকে ডিউটি দিয়েছি। এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তিনি আরও বলেন শতভাগ মাদক নির্মূল করা হয়ত সম্ভব না। কিন্তু মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তার প্রমাণ হচ্ছে নিয়মিত অভিযান করে চিহ্নিত মাদককারবারিদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। বিশেষত তারাকান্দা থানা এলাকার বিভিন্ন এরিয়া গুলোতে চৌকস সৎ এবং সাহসী কিছু পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি তারা দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করছেন,তারাকান্দার বর্তমান চিত্রটা অনেক অংশেই পরিবর্তন করতে পেরেছি বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। সরকারের যে ঘোষণা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা আমাদের অব্যাহত আছে।
বিসকা ইউনিয়নের দায়িত্ব রত বিট ইনচার্জ বলেন, মাদকের হাতছানি সারাদেশে, শুধু শহরে নয় গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। মাদকের বিষাক্ত ছোবলে শেষ করে দিচ্ছে তারুণ্যের শক্তি ও সম্ভাবনা। সর্বনাশা মাদক ধ্বংস করে একটি মানুষের শরীর মন জ্ঞান বিবেক ও তার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা তার পরিবারের সব স্বপ্নকে এবং তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে। শুধু পরিবারকে নয়, মাদকের কালো থাবা ধ্বংস করে একটি সমাজকেও। মাদক নির্মুলে সরকারের যে ঘোষণা রয়েছে মাদকের বিষয় জিরো টলারেন্স তা বাস্তবায়ন করাই আমাদের উদ্দেশ্য।
স্থায়ীন ব্যবসায়ীরা বলেন,আইন প্রয়োগকারী তারাকান্দা পুলিশ প্রশাসন কে সাধুবাদ জানাচ্ছি বর্তমান সময় তারা যেভাবে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান করছেন। এভাবে চললে হয়তো আমরা আবারও একটি মাদক মুক্ত তারাকান্দা পাবো। কোনো এক সময় এই উপজেলায় কোনো মাদক নামের কিছুই ছিলোনা,আমাদের বসবাস আয়তন ছোট আকারে হলেও মাদকের অধিপত্য ছিলো না।
তারা আরও বলেন, এই উপজেলায় ৯০ দশকের মাঝামাঝি মাদকের প্রবেশ ঘটে তখন শুধু ফেনসিডিল বিক্রি হতো।এখন বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি হয় এই উপজেলায় । তবেঁ এখন অনেকটা কমতে শুরু করছে বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে।