রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে বোনকে খুন করলেন সৎভাই

Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

স্টাফ রিপোর্টার
রাজশাহীতে বোনকে পরিকল্পিতভাবে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার সৎভাইয়ের বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে, ঘটনার সময় মেয়েটির সৎভাই ছাড়াও তাঁর স্ত্রী এবং এক বন্ধু ছিলেন। তাঁরাও এই খুনের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত। এ ঘটনায় তিনজনকেই আটক করেছে পুলিশ।

নিহত তরুণীর নাম সন্ধ্যা রানী (২০)। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শীশা বাঁশপীর গ্রামের শ্রী হরিলালের মেয়ে সন্ধ্যা রানী। তাঁকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- সন্ধ্যার সৎভাই ফুলবাবু রবিদাস ওরফে বাবু (২২), ফুলবাবুর স্ত্রী মিনতী রানী (২৫) এবং বন্ধু আদিল আহমেদ পলক (১৯)। পলকের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার লালপুকুর গ্রামে।

ফুলবাবু তাঁর স্ত্রী মিনতী ও সৎবোন সন্ধ্যাকে নিয়ে রাজশাহীর কর্ণহার থানা এলাকায় ভাড়া থাকতেন। বুধবার সকালে গোদাগাড়ীর গোগ্রাম এলাকায় নির্মাণাধীন ফাঁকা পড়ে থাকা একটি দোতলা বাড়ির ওপরের তলার বাথরুমে সন্ধ্যার মরদেহ পাওয়া যায়। তাঁর পেটে ও বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। দুপুরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন জানান, সন্ধ্যা রানীর মরদেহের পাশে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়। এই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে নিহত তরুণীর পরিচয় জানা যায়। এছাড়া এই খুনের সঙ্গে জড়িতদেরও শনাক্ত করা সম্ভব হয়। এরপরই অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে স্বীকার করেছেন।

ওসি জানান, ফুলবাবু তাঁর স্ত্রী আর বোনকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। সেখানে সন্ধ্যার একটি ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেখানে তারা একটি ঘটনা ঘটিয়ে এসেছে। রাজশাহী চলে আসার পর ফুলবাবু তার বোনের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাই তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়। এ জন্য ফুলবাবু, তার স্ত্রী মিনতী ও আদিল মঙ্গলবার বিকালে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে সন্ধ্যাকে সিএনজি অটোরিকশায় করে গোদাগাড়ীর গোগ্রাম এলাকায় যান। আসার আগে রাজশাহীর হড়গ্রাম বাজার থেকে একটি ছোট ছুরি আর কাটার কিনেন।

গোগ্রাম গিয়ে তারা সিএনজিটি ছেড়ে দেন। এরপর হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করেন। পরে কৌশলে ওই নির্মাণাধীন ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। যাওয়ার সময় ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে ধানের জমির নালায় ছুরি পুঁতে রেখে যান। আসামিদের নিয়ে গিয়ে বিকালে এই ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি জানান, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হবে। কিন্তু মামলার বাদী করার মতো কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না। তবে রাতের মধ্যেই মামলা হবে। বৃহস্পতিবার সকালে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। আর ঢাকায় যে ঘটনাটি ঘটেছিল, সেটির তদন্ত করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *