জয়পুরহাটের মার্কেট গুলোতে শেষের দিকে জমে উঠেছে শারদীয় দুর্গোৎসবের কেনাকাটা।

দেশের খবর
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

সুকমল চন্দ্র বর্মন কালাই, জয়পুরহাট।
প্রায় অর্ধলক্ষাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকের বসবাস করা জয়পুরহাটের নিউ মার্কেট, শপিংমল ও বিপণী বিতান গুলোতে এখন চলছে দুর্গোৎসবের জমজমাট কেনাকাটা। এবার দেশীয় কাপড়ের পাশাপাশি বিদেশী কাপড়ের চাহিদাও বেশি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেপ্টেম্বর মাসের ৩য় সপ্তাহের পর থেকে টুকটাক বেচা বিক্রি শুরু হলেও অক্টোবর মাসের প্রথম দিন থেকেই মার্কেটে ক্রেতা সমাগম বেড়ে যায় এবং কেনা কাটাও বৃদ্ধি পায় । সারাদিন লোকজন যাচ্ছেন মার্কেটে, বিপণী বিতান ও শপিংমলে। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে নিউ মার্কেট এবং পূর্ব বাজারের বড় কাপড়ের দোকান, লেডিস মার্কেট ও ফ্যাশান শো, শপিংমলসহ অন্যান্য কসমেটিকস, জুতা ও সাধারণ কাপড়ের দোকান গুলো। সমাতন ধর্মাবলম্বী নারী, পুরুষ, শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ কিনছেন তাদের পছন্দসই সামগ্রী। ক্রেতারা এখন পোশাক সামগ্রী কিনলেও প্রসাধনী ও জুতোর দোকানে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড়ে শহরে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। জেলা শহরের নিউমার্কেট, পূর্ব বাজার কাপড় পট্টি, এনামুল হক মার্কেট, মীনা বাজার মৌসুমী , শাহাজান আলী মার্কেট, ও বিগ বাজারসহ বিভিন্ন দোকান- ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন বেচা বিক্রিতে। নিউ মার্কেটের ফাতেমা ক্লথ ষ্টোর, ফারুক ক্লথ ষ্টোর এবং পূর্ব বাজারের করিম গেঞ্জি স্টোর, তনুশ্রী বস্ত্রালয়, পূর্ণিমা বস্ত্রালয় ও বাবু গামের্ন্টসে ক্রেতাদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা যায় । দোকানীরা জানান, সেপ্টেম্বর মাসে টুকটাক বেচাকেনা হলেও অক্টোবর মাসের প্রথম দিন থেকেই বেচা কেনা চলছে পুরো দমে। পূর্ব বাজারের বাবু গার্মেন্টসের মালিক মাসুদ পারভেজ বাবু জানান, ছোট শিশুদের জন্যও রয়েছে গেঞ্জি সেট, কিশোর যুবদের জন্য রয়েছে টি-শার্ট । বিভিন্ন মাপের গামের্ন্টস পোশাক শিশুদের জন্য বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত । কাপড়, সেলাই , মজুরী ও পরিবহণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় গত বারের তুলনায় এবার প্রকার ভেদে ২শ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান মাসুদ পারভেজ বাবু । তনুশ্রী বস্ত্রালয়ের মালিক সুজন কুমার মন্ডল বলেন, ১৫০০-২০০০ টাকার মধ্যে সিলক, জর্জেট, কাতান শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে । এ ছাড়াও ১২শ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে সিলক জাতীয় থ্রীপিস এ্যাম্বুডারী জর্জেটও বিক্রি হচ্ছে বলে জানান, পূর্ব বাজারের দ্বিতীয় তলায় লেডিস মার্কেটের সাজ লেডিস কালেকশনের মালিক নাসরিন আক্তার।
পূর্ণিমা বস্ত্রালয়ের মালিক ও বিশিষ্ট কাপড় ব্যবসায়ী পুরুষোত্তম রংটা জানান, শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। ক্রেতারা তাদের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় করে কেনাকাটা করছেন। এবার পাইকারী বাজারে কাপড়ের দাম বেশি বলেও জানান তিনি। তাজপুর গ্রামের কিশোরী পাওয়েল এবার পূজা উপলক্ষে ৭শ টাকা দামের থ্রীপিস কিনেছে বলে জানায় । সবুজনগর মহল্লার সুশান্ত কুমার এবার পূজা উপলক্ষে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে দুটি পাঞ্জাবী, দুটি টাউজার ও দুই জোড়া জুতা কিনেছেন। দাম একটু বেশি বলে জানান তিনি। পূজা আসলে টেইলার্স গুলোতেও ব্যস্ততা বেড়ে যায়। সেলাইয়ের জন্য শার্ট প্রতি ৪৫০-৫০০ টাকা , প্যান্ট ও পাঞ্জাবী সেলাই প্রতিটি ৬শ থেকে ৮শ টাকা মজুরী নেওয়া হচ্ছে বলে জানান, ফেমাস টেইলার্সের মালিক আলহাজ্ব মকবুল হোসেন ।

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, বর্তমানে জেলার সার্বিক আইনশৃংলা পরিস্থিতি ভালো । তারপরেও পূজার কেনাকাটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে মার্কেট গুলোতে। বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন পূর্ব বাজার কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ বাবু ।

উল্লেখ্য জয়পুরহাট জেলায় এবার ২শ ৯০ টি মন্ডপে দুূর্গাপূজার আয়োজন চলছে। ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছেন কারিগররা। বুধবার ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে দুূর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। সুষ্ঠু ও শান্তি পূর্ণ পরিবেশে দুূর্গোৎসব উদযাপনের জন্য সরকারি ভাবে প্রতিটি পূজা মন্ডপের জন্য ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *