ইফতার করতে গিয়ে পরিচ্ছন্ন শহর নোংরা করলো রাজশাহী জেলা আ.লীগ

Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

জন্মভূমি নিউজ ডেক্স

পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে রাজশাহীর সুনাম দেশ-বিদেশে। সেই শহরের অলোকার মোড়ে ইফতারের আয়োজন করে স্থানটিকে রীতিমতো ভাগাড়ে পরিণত করেছে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ।

রোববার এই ইফতার অনুষ্ঠানের পর ওই এলাকার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। উঠেছে প্রতিবাদ আর নিন্দার ঝড়। ক্ষুব্ধ নগরবাসী জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সমালোচনাও করছেন।
এদিকে রোজা শুরুর আগেই গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইফতার পার্টি না করার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই নির্দেশনা মাথায় রেখে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো এবার ইফতার পার্টি করছে না।

তবে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ এর ব্যতিক্রম। রোববার বিকালে নগরীর অলোকার মোড়ে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল।
ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারা। ইফতার শেষে খাবারের প্যাকেট ছড়িয়ে ছিটিয়ে পুরো অলোকার মোড় ও আশপাশের এলাকা নোংরা করা হয়েছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ওই এলাকাজুড়ে।

জেলা আওয়ামী লীগের এই কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ নগরবাসী।

নগরবাসী বলছেন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাজশাহী নগরী। পরিচ্ছন্নতায় রাজশাহী নগরীর সুনাম দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে রাজশাহী মহানগরবাসীও এখন অনেক সচেতন। নগরবাসী কেউ যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ও কোন খাবারের প্যাকেট ফেলেন না। কিন্তু আজ নগরীর বাইরে থেকে এসে ইফতার মাহফিল আয়োজন করে শহর নোংরা করে যাওয়া হলো। ইফতারের প্যাকেট ও উচ্ছিষ্ট এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে যাওয়া কোন সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে না। এটি বহিরাগতদের পক্ষেই সম্ভব হয়েছে। তারা ইচ্ছেকৃতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কারণ এই শহরের প্রতি তাদের কোন ভালোবাসা ও দায়িত্ব নেই।

বিশিষ্টজনেরা আরও বলছেন, ইফতার আয়োজন যারা করেছেন, তাদের উচিত ছিল এলাকাটি পরিস্কার করা। কিন্তু তারা তা না করে পুরো এলাকাটি নোংরা করে গেছেন। যিনি প্রধান অতিথি ছিলেন, তিনিও কিছু বলেননি। এখন ওই এলাকা দিয়ে চলাফেরা করা কষ্ট হচ্ছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করেন শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে। সেখানে একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা শহরে এভাবে অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা করে যাবে, এটি কাম্য হতে পারে না। শহর নোংরা করে তারা নিজেদের রুচি ও মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইফতারের আয়োজন এবং শহরকে এভাবে নোংরা করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেই ইফতার পার্টি না করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেখানে তাঁর দলের নেতাকর্মীরা ইফতারের আয়োজন করলেন। এটা গরীব মানুষের সঙ্গে তামাশা। জেলা আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাল। তারা যেভাবে শহর নোংরা করে গেলেন তা দুঃখজনক। অন্য কেউ করলে অপরাধ, এমপি-মন্ত্রীরা করলে অপরাধ নয় এটা তো হতে পারে না।’

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ইফতার পার্টি না করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের এটা ইফতার পার্টি ছিল না। আমাদের আলোচনা সভা ছিল। এর সঙ্গে নিজেরা ইফতার করেছি, কিছু বিতরণ করা হয়েছে।’
শহর নোংরা করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরা লোক লাগিয়ে দিয়েছি। রাতের মধ্যেই আমরা পরিষ্কার করে ফেলব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *