প্রতিনিধি জাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আল-বেরুনী হলের প্রাধ্যাক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির দাবি জানিয়েছেন আবাসিক হলটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (৪ মার্চ) আল-বেরুনী হলের অফিসের সামনে অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন আল-বেরুনী হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
হলের আবাসিক ও ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ মানববন্ধনে স্মারকলিপি পাঠ করেন।
তারা জানান, আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীবৃন্দ। হলের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইনকে একাধিকবার অবগত করা হলেও তিনি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ফলে তার দায়িত্বের অবহেলার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এমনকি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক অনিয়মসহ নানা অভিযোগের কারণে তিনি প্রাধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। এমতাবস্থায় আমরা আল-বেরুনী হলের শিক্ষার্থীরা তাকে প্রাধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানের এক দফা দাবি জানাচ্ছি।
এসময় স্বারকলিপিতে প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলার বিষয়াদি উল্লেখ করা হয়। তা হলো প্রাধ্যক্ষ হলে নিয়মিত আসেন না, যার কারণে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তার বাসা ও বিভাগ থেকে স্বাক্ষর করতে হয়। হলের পাশ্ববর্তী লেক পরিষ্কারের বিষয়ে প্রাধ্যক্ষকে অবহিত করা হলেও তিনি দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেননি। ফলে অপরিষ্কার লেকের কারণে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি হলে ডেঙ্গু আতঙ্কে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। হলের সামনের সড়ক সংস্কার ও হলের অসমাপ্ত সংস্কার কাজ শেষ করার বিষয়টি প্রাধ্যক্ষকে অবগত করা হলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি। হলের ক্যান্টিন আড়াই মাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন হলের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়টি হলের প্রাধ্যক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও ক্যান্টিন চালু করার বিষয়ে তিনি পদক্ষেপ নেননি। হলে বারবার চুরির ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়টি প্রাধ্যক্ষকে অবহিত করা সত্বেও যথোপযুক্ত কোনো ব্যবস্থা নেননি। দীর্ঘদিন ধরে হলের সেলুন বন্ধ থাকলেও সেটি চালু করার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেননি। ৭. হলের কোনো সমস্যা প্রাধ্যক্ষকে অবহিত করতে গেলে তিনি সহযোগিতামূলক ও শিক্ষকসুলভ আচরণ করেন না। হলের প্রাধ্যক্ষ পার্শ্ববর্তী ইসলামনগর এলাকায় নিজের জমি দখলে হলের কর্মচারীদের ব্যবহার এবং মাঝেমধ্যে হল অফিসকে ব্যক্তিগত সেটেলমেন্ট অফিস হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা হলের প্রাধ্যক্ষ পদ থেকে অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইনকে অব্যাহতি প্রদানের জোর দাবি জানান। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্য কোনো শিক্ষককে দায়িত্ব প্রদান করে হলের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের দাবি জানান তারা।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম শিক্ষার্থীদের আস্বস্ত করে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণে সদা তৎপর। তাদের দাবিগুলোও দ্রুতই সমাধান করা হবে। তবে এ বিষয়ে কাজ করার জন্য উপাচার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সময় চেয়ে নেন।