মো:সিরাজুল ইসলাম পলাশ লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে বিল পাসের জন্য ঘুষের টাকা লেনদেনের ভিডিও করায় সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখেন উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা পরিষদের ভেতরে এ ঘটনাটি ঘটে।
অভিযুক্ত হলেন, উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান আমিন। ভুক্তভোগী সাংবাদিক হলেন মোহনা টিভির লালমনিরহাট প্রতিনিধি শারুফ সুমন খান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে আসেন জেলা পরিষদ সদস্য মনোয়ার হোসেন। এ সময় তিনি প্রকৌশলী অফিসে আটকে থাকা একটি বিল পাসের জন্য প্রকৌশলীকে ঘুষ বাবদ কয়েক লাখ টাকা দেন। সেই টাকা নিয়ে মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে প্রকৌশলী অফিসের লোকজনের হাতাহাতি হয়।
এসময় সে চিত্র ক্যামেরায় ধারণ করেন মোহনা টিভির সাংবাদিক শারুফ সুমন খান। তার সে ভিডিওক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
পরে ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে ওই প্রকৌশলীর কাছে বক্তব্য চাইতে গেলে তিনি সাংবাদিক সুমনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকরা ইউএনও অফিস ঘেরাও করেন। এর এক পর্যায়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা এসে ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত রাখেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক শারুফ সুমন খান বলেন, ‘ওই প্রকৌশলীকে জেলা পরিষদ সদস্য মনোয়ার টাকা দিচ্ছিলেন। আমি সেটার ভিডিওচিত্র ধারণ করি। এর কারণে ওই প্রকৌশলী আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদ সদস্য মনোয়ার হোসেন বলেন, এলজিডি অফিস আমার কাজের একটি বিল আটকে রেখেছে। সেই জন্য আমি এসেছিলাম।
সে সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আপনি যে ঘুষের টাকা দিয়েছেন আর সেই টাকা নিয়ে যে হাতাহাতি হয়েছে এর একটি ভিডিওক্লিপ আমাদের কাছে আছে। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী প্রশ্ন করা হলে সেখান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন তিনি।
এদিকে, ঘটনার বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান আমিন বলেন, ‘আমি কোনো ক্যামেরা ভাঙচুর করিনি। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে মাত্র’!
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক নেতা ও এলজিডি অফিসের লোকজন ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ বসে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।