রাজশাহী মেডিকেলের ৩২ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত

রাজশাহী
Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক :
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর মধ্যে ২০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে কঙ্কাল ব্যবসা, ছাত্রাবাসের সিট দখল, র‌্যাগিং, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র বহন, মাদক সেবন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নির্যাতন, মহিলা হোস্টেলে প্রবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের হুমকি ও নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

মঙ্গলবার ১ অক্টোবর কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নেওয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।

এছাড়া একই সভায় মেডিকেল কলেজের ছয় শিক্ষককে অন্যত্র বদলির জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ২০ শিক্ষার্থীর সবাই ছাত্রলীগের কলেজ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে এমবিবিএস ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সজিব আকন্দকে তিরস্কার এবং অভিভাবকের উপস্থিতিতে তার মুচলেকা আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্য ১৯ জনের সবাইকে হোস্টেল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সুপারিশ গৃহীত হয়েছে।

এদিকে এক বছরের জন্য শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- এমবিবিএস ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বখতিয়ার রহমান, আরাফাত জুলফিকার ডেভিড, নকিবুল ইসলাম শাকিল, ফারিয়া রেজোয়ানা নিধি, নাফিউ ইসলাম সেতু, ৬৩তম ব্যাচের শেখ সাকিব ও সোহম বিজয়। ৬ মাসের জন্য শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, ৬১তম ব্যাচের রাশিদ মোবারক, ৬২তম ব্যাচের হাসিবুল হাসান শান্ত, আশিকুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, শোয়েব আকতার শোভন, জুহাইর আঞ্জুম অর্নব, মাহফুজুর রহমান, ৬৩তম ব্যাচের কাজী হানিফ, পূর্ণেন্দু বিশ্বাস, ৩১তম বিডিএস ব্যাচের নূর এ জান্নাত কিন্তু এবং ৩৩তম বিডিএস ব্যাচের ফারদিন মুনতাসির।

অন্যদিকে এসব শিক্ষার্থীর নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড জেনেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে ছয়জন শিক্ষককে বদলির জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে একাডেমিক কাউন্সিলের ওই সভায়। এছাড়া আরও ছয়জন শিক্ষককে বিভিন্ন মেয়াদে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার ফয়সল আলম জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে কলেজের ৩৪ জন শিক্ষক ও ৪৪ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ আনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযোগের তদন্ত করা হয়। তদন্তে যাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে একাডেমিক কাউন্সিল। কলেজ প্রশাসন এসব শাস্তি কার্যকর করবেন।

অধ্যক্ষ আরও জানান, যারা অভিযোগ তুলেছেন, তারাও আমার শিক্ষার্থী। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তারাও আমার শিক্ষার্থী। তাই নির্মোহভাবে অভিযোগগুলোর তদন্ত করা হয়। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। এ সুপারিশ একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তোলা হলে সর্বসম্মতিক্রমে সবাই তাদের শাস্তির ব্যাপারে একমত হন। এ শাস্তি অবিলম্বে কার্যকর হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *