নিজস্ব প্রতিবেদক
শত্রুতা করে নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর গ্রামের এক চাষির ২২ শতক জমির আমন ধান প্রকাশ্য দিবালকে পাওয়ারটিলার দিয়ে চাষ করে সম্পূর্ণ নষ্ট করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে লিজ নেয়া টাকাসহ প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী বর্গা চাষি ছাকোয়াত হোসেন।
বুধবার ওই চাষির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তিনি আহাজারি করছেন। গত শনিবার দুপুরে জেলার ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের বর্গা চাষি মো: ছাকোয়াত হোসেন (৪৫) জমিটির মালিক জয়পুরহাট সদর উপজেলার পাহুনন্দা গ্রামের মোজাম্মেল হকের নিকট থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে বন্ধকী জমি নিয়ে আমনধান চাষ করেছেন। মোজাম্মেল হকের সাথে ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর গ্রামের মো: হাসিনুর ইসলাম (৫৫) ও মোঃ শাহিনুর রহমান (৪৫) সাথে জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের চলে আসছিল।
এবিষয়ে জমির মালিক মোজাম্মেল হক ধামইরহাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে উপজেলার জাহানপুর গ্রামের মো: হাসিনুর ইসলাম, মোঃ শাহিনুর রহমান এবং হাসিনুরের জামাতা মো: রাব্বিসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩জনকে আসামী করা হয়েছে।
বর্গা চাষি মো: ছাকোয়াত হোসেন জানান- গত শনিবার দুপুরে হাসিনুর, শাহিনুর এবং হাসিনুরের জামায় সেনা কর্মকর্তা মো: রাব্বি হোসেন অজ্ঞাতনামা পাওয়ারট্রিলার চালক সহ আমার আমন ধানের জমিতে পুনরায় হালচাষ করে জমির সম্পূর্ণ ধান বিনষ্ট করে দিয়েছে। এসময় বাধা দিলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। প্রাণভয়ে জমি থেকে নিরাপদ দূরত্বে এসে ঘটনার বিষয়টি জমির মালিক মোজাম্মেলকে মোবাইল ফোনে জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমি গরীব মানুষ ধার দেনা করে মোজাম্মেল হকের নিকট কাছ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে বন্ধকী জমি নিয়ে আমনধান চাষ করেছি। এর বাইরে আরো ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি এখন ঋনের এই টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো।
জমির মালিক মোজাম্মেল হক বলেন, ছাকোয়াতের ফোন পেয়ে আমি তাৎক্ষনিক জমিতে এসে তাদেরকে হালচাষ করা দেখি। এসময় গ্রামের শতশত লোক তাদের এই জঘন্য কাজ দেখছিল এবং অনেকে বাধাও দিয়েছেন কিন্তু তারা তা শোনেননি। বাধ্য হয়ে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে মোঃ শাহিনুর রহমান বলেন, জমি আমরা পাবোনা। তবে আমরা মোজাম্মেল হকের কাছ থেকে প্রায় ৮লক্ষ টাকা পাবো যেটা তিনি দিচ্ছেননা। ্ওই টাকা না দেয়ার জন্য আমরা তার জমির ধান নষ্ট করে দিয়েছি। টাকা দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এবিষয়ে ধামইহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকি জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন এবং এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগও তিনি পেয়েছেন। তবে আসামীদের মধ্যে রাব্বী নামে একজন সেনা কর্মকর্তা থাকায় তার পক্ষে এই মামলা থানায় রেকর্ড করা সম্ভব নয়। তিনি বাদীকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান।