যৌন হেনস্থাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে

Spread the love
Print Friendly, PDF & Email
image_pdfimage_print

নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের একজন অধ্যাপক। আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একের পর এক বিভিন্ন অভিযোগ করছেন তার বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে আছে যৌন হেনস্তা, আপত্তিকর মেসেজ প্রদান, চেম্বারে নিতে অফার প্রদান, পর্দা করায় সমালোচনা, ইচ্ছাকৃতভাবে মার্ক কম দেওয়া, ভয়ভীতি দেখানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকশা আখতার নিশা। সেখানে অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকারের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা, কল দিয়ে বিরক্ত করা, আপত্তিকর মেসেজ প্রদান ও পরীক্ষার খাতায় মার্ক কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে, ফোন রিসেট হয়ে সব প্রমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন এই ছাত্রী।

ওই পোস্টে আকশা আখতার নিশা দাবি করেছেন, অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকার একজন নারীলিপ্সু। প্রায়ই রাত ১০-১১টার পরে তাকে কল দিতেন তিনি। চেম্বারে নেওয়ার জন্য নানারকম অফার দিতো তাকে। মাঝেমধ্যে আপত্তিকর মেসেজও দিতো ইনবক্সে। ডিপার্টমেন্টে ওনার সামনে বয়ফ্রেন্ড এর হাত ধরে হেঁটে যাওয়ায়, তিনি রাগ করে ওনার সাবজেক্টে তার রেজাল্ট খারাপ করে দেন।

নিশা লিখেছেন, ‘তারপর শুরু হলো তার নোংরা ফ্লার্টিং, “তোমার চুল কী সুন্দর, তুমিওতো সুন্দর, শুধু চুল না। শাড়ি পরলে তো খুব সুন্দর লাগে একদম।” এরকম এমনকি অনেক বাজে কথা বলেছে যা লিখতে চাচ্ছি না আর। আর কথা শেষ করেছে এটা বলে, “এগুলো কাউকে বলোনা। আমার বউ আবার শুনলে আমার খবর আছে বুঝছো? আবার ফোন ভেঙে দিবে আমার। হাহ হাহ হাহ!” কি নির্লজ্জ সেই হাসি আমি এখনও ফিল করতে পারি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার কথা বিশ্বাস না হলে আমার ডিপার্টমেন্টে শুনে দেখুন, প্রত্যেকটা মানুষ জানে, কিন্তু ভয়ে মুখ খুলতে পারেনি। প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক ছাত্ররাও তার আক্রোশের শিকার হয়ে ইচ্ছাকৃত একাডেমীকভাবে পিছিয়ে দেওয়ার শিকার হয়েছে। ওমর ফারুকের মত একজন নোংরা মানুষ কিভাবে শিক্ষক হয়ে গেলো বা, কিভাবে এখনও বহাল তবিয়তে টিকে আছে, পাওয়ার প্রাকটিস করছে, আমার ভাবলেই অবাক লাগে! আমি এই মানুষরূপী নরপশুর বিচার চাই।’
নিশার ওই পোস্টে শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ২৯০ টি মন্তব্য করেছে বিভিন্নজন। তাদের মধ্যে একই বিভাগের ২৪ ব্যাচের ছাত্রী নুর জাহান বর্ষা লিখেছেন, ‘ছাত্র জীবনে মনের গভীর থেকে যদি কোন শিক্ষককে ঘৃণা করে থাকি, তার নাম ওমর ফারুক। এমন নীচু চরিত্রের নীচু মানসিকতার শিক্ষক আমি আমার জীবনদশায় কখনো দেখিনি৷ ওপেনলি ক্লাসে পড়ানোর নামে লুচ্চামি আর দেশ প্রেমের নামে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীকে হিজাব বোরকা পরার কারনে অপমান অপদস্ত করা ছিল তার প্রিয় কাজের একটি।’

বুধবার (২৮ আগস্ট) নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেছেন একই বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মীর আনু রাইয়ান রায়েদ। পোস্টে অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপ করা, এর প্রতিবাদ করায় হেনস্তা করা ও ভয়ভীতি দেখানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকারের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *