মোঃহাসান আলী স্টাফ রিপোর্টার
আগামী ২৯ মে রাজশাহীর পবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। ১৩ মে প্রতিক বরাদ্ধ হবে। এবার এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৮জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের চারিদিকে বেষ্টিত ৩৩৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পবা উপজেলায় এবার প্রার্থীদের ছড়াছড়ি বলা যায়।
পবা উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থীর মধ্যে এবার এসেছে নতুন চমক। এই উপজেলায় এবার প্রার্থী হয়েছেন আরজিয়া বেগম, চেন বানু, পপি খাতুন ও হাসিনা খাতুন। বিগত দিনে এ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা নির্বাচন করেছেন তাদের মধ্যে সবাই ছিলেন প্রবীণ। এবারো প্রবীনের সংখ্যাই বেশি। তার মধ্যে এবার যোগ হয়েছে নতুন ও তরুণ মুখ।
বলা যায়, ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবার লড়াই হবে দাদি নাতনির সাথে। নতুন মুখ হিসাবে এ উপজেলায় আত্মপ্রকাশ হয়েছে মোসা: পপি খাতুনের। তিনি পবার উপজেলার দারুশা ধর্মহাটা এলাকার শুকুর আলীর মেয়ে। বর্তমান তিনি সিটি কলেজের একজন শিক্ষার্থী। অন্য তিন প্রার্থীর চেয়ে তিনি শিক্ষিত একজন প্রার্থী।
জানা গেছে, পপি খাতুন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন পবা উপজেলার সমন্বয়ক ও অপর সেচ্ছাসেবী সংগঠন দু:স্থ মানবসেবা সংস্থার কোষাধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি যোগ দেন সমাজ সেবা ও সেচ্ছাসেবী কাজে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি এসব সেবাধর্মী কাজ করেন। সেই জায়গা থেকে তিনি এবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। অন্য প্রার্থীদের তুলনায় তিনি যেমন একেবারেই কম বয়সী তরুণ, তেমনি শিক্ষিত একজন প্রার্থী। সেবার মাধ্যমে তিনি এ উপজেলার প্রায় সব শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে পরিচিত মুখ।
কথা বলা হয় তরুণ নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী পপি খাতুনের সাথে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের জীবন মানের উন্নতি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে নারীরাও পিছিয়ে নেই। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী। সেই জায়গা থেকে তিনি নারীদের মর্যাদা, নারীদের সব ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
তিনি বলেন, পবা উপজেলার বর্তমান নারী ভাইস চেয়ারম্যান একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হলেও তিনি এ উপজেলার সব এলাকা চেনেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। আমি সেচ্ছাসেবী কাজ করার সুবাদে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় যাই। মানুষের সাথে কথা বলি। সাধারণ মানুষের মতামত শুনি। সেই জায়গা থেকে গত ৫ বছর এই উপজেলায় নারী ভাইস চেয়ারম্যান কোনো কাজ করেছেন বা এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেছেন এমনটা নজির পাওয়া যায় না।
সরকার উন্নয়নের জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাজের বরাদ্দ দিচ্ছেন। কিন্তু উন্নয়ন বা সেবা কোনোটাই পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। সেই জায়গা থেকে আমি সাধারণ মানুষের মতামত নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। জনগণের দৌরগোড়ায় সেবা পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে আমি নির্বাচন করছি।
তিনি বলেন, আমি মূলত পড়াশোনার পাশাপাশি পবা সহ আশপাশের এলাকায় সেচ্ছাসেবি কাজ করে থাকি। সেই জায়গা থেকে সাধারণ ভোটাররা যদি আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেন তাহলে আমি তাদের প্রত্যাশা পুরণ করার চেষ্টা করবো।
পপি বলেন, আমি যাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি তারা সবাই আমার নানি দাদির বয়সের। যেহুত চারদিকে নবীণদের জয়গান রয়েছে। সেই জায়গা থেকে পবা উপজেলার ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন এমনটা আশা করি।
আমি ছোট থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। সামাজিক কাজ করে যাচ্ছি। সেচ্ছাসেবি সংগঠন তৈরি করে সেবা মানুষের দৌরগোড়ায় পৌছানোর চেষ্টা করছি। এবার যদি পবা বাসী আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন আমি তাদেরই একজন হয়ে কাজ করবো।
পবা উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৬০ হাজার ৮৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৩০ হাজার ৯০১ জন ও মহিলা এক লাখ ২৯ হাজার ৯৩৪ জন এবং হিজড়া ৩ জন।