কাজী আব্দুল হালিম রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান
রাজশাহীতে হঠাৎ কমেছে গরুর মাংসের দাম। সবজি ও মাছ মুরগির বাজার চড়া হলেও গরুর মাংসের দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে এসেছে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষদের কাছে। এতে করে রাজশাহীর গরুর মাংসের দোকানগুলোতে ভিড়ও বেড়েছে। আগে যেখানে একজন কশাই দুটি গরু জবাই করছেন তিন থেকে চারটি গরু। শনিবার সকালে রাজশাহীর সাহেব বাজার, তেরোখাদিয়া বাজার, শালবাগান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেকা গেছে, এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬২০-৬৫০ টাকা দরে। সাহেব বাজারে ৬৪০-৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও নগরীর তেরোখাদিয়া বাজারে ৬২০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করতে গেছে। তাও আবার পাশাপাশি দিন-চার জন মাংস বিক্রেতা মাইকযোগে ক্রেতাদের ডেকে ডেকে বিক্রি করছেন। প্রতিটি দোকানেই ছিল উল্লেখযোগ্য ভিড়।
এ বাজারে মাংস কিনতে আসা আসলাম উদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের এতো দাম বৃদ্ধি পেয়েছে যে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষরা মাংস কেনার সহজে সাহস পান না। তার পরেও গত এক সপ্তাহ ধরে রাজশাহীর বাজারে মাংসের দাম কেজিতে অন্তত ১০০ টাকা করে কমে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে। আগে মাসে বড় জোর এক বার গরুর মাংস কেনা হতো। তবে দাম কমে যাওয়ায় গত সপ্তাহে একবার কিনেছি দেড় কেজি। আবার আজকেও কিনতে এসেছি।’
আরেক ক্রেতা নাজমুল হুদা বলেন, ‘সবজিসহ মাছ-মাছের দামও চড়া এখন। বাজারে ২৭০ টাকা কেজির নিচে কোনো রুই মাছ নাই। একটু বড় হলে ৩০০ টাকার ওপরে। মাছের দাম বাড়ছেই। পাশাপাশি মুরগির দামও কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। কিন্তু হঠাৎ গরুর মাংসের দাম কেজিতে অন্তত ১০০ টাকা কমে যাওয়ায় কিচুটা হলেও লাভ হয়েছে।’
এ বাজারের মাংস বিক্রেতা তপু শেখ বলেন, ‘বর্ষার কারণে গরুর দাম কিছুটা কমেছে। আমরা যেহেতু কম দামে কিনতে প্যারছি। তাই মাংসের দামও কম লিতে প্যারছি। গরু যেখানে কিছুদিন আগেও ২৬-২৭ হাজার টাকা মণ হিসেবে ধরে কনিতে হত। এখুন সেখানে ২৩-২৪ হাজার মণ হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে কয়দিন আগেও যেখানে রাজশাহীতে গরুর মাংস আমরা বিক্রি করেছি ৭৫০ টাকা কেজি এখন ৬২০-৬৩০ টাকা কেজি বিক্রি করতে প্যারছি।’
আরেক মাংস বিক্রেতা শাহিন আলম বলেন, ‘কয়দিন আগেও একটা গরু ক্যাটলে সারাদিন বসে থ্যাকতে হত মাংস নিয়ে। এখুন দাম কমে যাওয়ায় শুক্রবারে ২-৩টা করে গরু ক্যাটলেও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বেশি বিক্রি হলে লাভও বেশি হয়।’
এদিকে, রাজশাহীর সিটি হাটের গরু ব্যবসায়ী মতিউর রহমান জানান, হাটে প্রচুর গরু আসছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তেমন পাইকাররা আসতে পারছে না। এ কারণে গরুর দাম কিছুটা কমেছে। তার প্রভাব পড়েছে মাংসের বাজারে। রাজশাহীতে এখন মাংসের দামও কেজিতে অন্তত ১০০ টাকা কমেছে।