চলতি বছরের মধ্যেই পাচার হওয়া কয়েক শ কোটি ডলার ফিরিয়ে আনা সম্ভব জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক:
এ বছরের মধ্যেই বিদেশে পাচার হওয়া প্রায় কয়েক শ কোটি ডলার ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, পাচারের অর্থ ফেরত আনতে হলে কিছু আইনি প্রক্রিয়া মানতে হবে। এজন্য একটি বিশেষ আইন করার উদ্যোগ রয়েছে অন্তর্র্বতী সরকারের। শিগগিরই যা অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অর্থ ফেরত আনতে প্রায় ২০০টি আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৩০টি আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করবে সরকার।

আগামী মাসেই এ নিয়ে কিছু দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলেও জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা




জাহাজে এলোদুই ৩৭ হাজার টন চাল

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমার ও ভারত থেকে আমদানিকৃত চালের দুটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে। দুটি জাহাজে আছে ৩৭ হাজার টন চাল।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এরমধ্যে মিয়ানমার থেকে ২২ হাজার টন এবং ভারত থেকে ১৫ হাজার টন চাল এসেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জিটুজি ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে এবং উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে এসব চাল কেনা হয়েছে।

এর আগেও কয়েক দফায় এই দুই দেশ থেকে চাল কিনেছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। দেশে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে এ বছর প্রায় দশ হাজার টন চাল কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।




ইউটিউবে আসছে নতুন ফিচার, যেসব সুবিধা পাবেন

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক :
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। ইউটিউব আয় করার অন্যতম একটি প্ল্যাটফর্ম। বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করে মাসে হাজার হাজার ডলার আয় করছেন।

প্ল্যাটফর্মটিকে আরও মজার ও ব্যবহারের অভিজ্ঞতা ভালো করতে নতুন কিছু আনতে চাচ্ছে। ইউটিউব ভাবনাচিন্তা করছে একটি নতুন বাটন নিয়ে। যার নাম ‘প্লে সামথিং’। এই বাটনটির ব্যাকগ্রাউন্ডটি কালো। সাদা টেক্সটে লেখা থাকে সেখানে। বটন বারের ঠিক উপরেই এটি দৃশ্যমান হচ্ছে। সেখানে ক্লিক করলে শর্টস প্লেয়ারে একটি যে কোনো ভিডিও শুরু হতে থাকে।

এই বাটন রেগুলার কনটেন্টও চালাতে পারবে। সেখানে লাইক, ডিসলাইক, কমেন্ট ও শেয়ার বাটনও থাকছে। স্ক্রিনের একেবারে ডানদিকে সেটা দেখা যাবে। তবে এই ফিচারটি কেবল মোবাইলের জন্য ভাবা হচ্ছে।

আপাতত সবই পরীক্ষার স্তরে রয়েছে। তবে জানা যাচ্ছে, ‘প্লে সামথিং’ বাটনটি শিগগিরি হয়তো আত্মপ্রকাশ করবে। আসলে গুগল শেষ মুহূর্তের তুলির টান দিয়ে আপাতত ফিচারটি খতিয়ে দেখছে। গত অক্টোবরেই ইউটিউব ঘোষণা করেছিল, নতুন নতুন অনেক কিছুই আসতে চলেছে। যার মধ্যে প্লে লিস্টের থাম্বনেল থেকে স্লিপ টাইমার কিংবা মিনি প্লেয়ারের নয়া ডিজাইন- অনেক কিছুই রয়েছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো এই বাটন




অবিবেচকভাবে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক
ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ও সিটিজেনস প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজিএস বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, অবিবেচকভাবে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, কর সংগ্রহ করতে হলে ক্রমান্বয়ে প্রত্যক্ষ করের কাছে যেতে হয়। আমরা প্রত্যক্ষ কর আহরণে কোনো পরিকল্পনা দেখি নাই। যারা কর দেয় না তাদের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেটা জানা গেলো না। আমাদের এটা চিন্তিত করেছে। আগামী গরমে জ্বালানি পরিস্থিতি আরও জটিল হবে এই আশঙ্কা করছি।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিআইসিসির কার্নিভাল হলে ‘শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ২০২৪’ আয়োজিত সিম্পোজিয়ামে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো অর্থনৈতিক মেন্যুফেস্টো নেই জানিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার যতটা মনোযোগ পাচ্ছে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ততটা মনোযোগ পাচ্ছে না। অনেকেই বলছেন অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই সরকার আগের সরকারের মতোই কাজ করছে।

দেবপ্রিয় বলেন, এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা, প্রবৃদ্ধির ধারা, কর্মসংস্থান, দারির্দ্য বিমোচন ও সামাজিক সুরক্ষা যদি নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে আমরা যারা সংস্কারকে গতিশীল করতে চাই তারা ধৈর্যহারা হয়ে যাবেন। সংস্কারের পক্ষের মানুষগুলো অর্থনৈতিক অস্বস্তি ও নিরাপত্তার অভাব থেকে সুষম সংস্কারের পক্ষ থেকে সরে যেতে পারে।

রেকর্ড পরিমাণ আমন উৎপাদন করেও সংগ্রহ অভিযানে সাফল্য নেই জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, সংগ্রহ অভিযানে আগে যেমন দুর্নীতি ছিল, তা এখনও আছে। কৃষক তার ফসলের মূল্য পাচ্ছে না। সামাজিক সুরক্ষা বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে আছে। এই সরকার কী ধরনের অর্থনৈতিক উত্তরাধিকার রেখে যাবে প্রশ্ন তুলেন এই অর্থনীতিবিদ।

সুষম অর্ন্তভুক্তিমূলক, টেকসই অর্থনীতি গড়ে তুলতে যে ধরনের প্রশাসনিক কাঠামো দরকার বা সংস্কার দরকার সেই রকমের কোনো রুপরেখা আমরা দেখলাম না, যোগ করেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকার কোনো সংশোধিত বাজেট দিতে পারেনি জানিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এটা না থাকার কারণে অন্যান্য বাজেটের কিছু সূচক পুরোপুরি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে। আগামী বাজেটকে কেন্দ্র করে সরকারের অর্থনৈতিক আলোচনা দরকার। প্রবৃদ্ধির ধার কমে গেছে, ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ কমে গেছে, কর্মসংস্থানে সমস্যা রয়ে গেছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী




আলু সংরক্ষণে দিগুণ ভাড়া বৃদ্ধি করায় তানোরে চাষীদের প্রতিবাদ

মোঃ হাসান আলী সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
চলতি মৌসুমে রাজশাহীর হিমাগার মালিকরা আলু সংরক্ষণে হঠাৎ দ্বিগুণ ভাড়া বাড়িয়ে ক্লোডস্টোরের সামনে ব্যানার সাটিয়ে দেয়। এমন অযৌক্তিক ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কয়েক উপজেলার আলু চাষীরা প্রতিবাদ সভা করেন। চাষীদের আয়োজনে তানোর পৌর সদরস্থ গোল্লাপাড়া ফুটবল মাঠে রবিবার বিকেলে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আলু চাষী ও পৌর বিএনপির আহবায়ক একরাম আলী মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক এম রায়হান আলী সঞ্চালনায়। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির সদস্য, সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আলু চাষি আব্দুল মতিন, আহসান হাবিব, জালাল উদ্দিন ও সালাউদ্দিন হাজী। এছাড়াও মোহনপুর উপজেলার আলুচাষি মনিরুল ইসলাম, নাজিম হোসেন, মৌগাছির ইউনুস আলী, কেশরহাটের তোফায়েল আহম্মেদ, দৈল্যাবাড়ির মহসিন আলী, বায়ার আলু চাষি আনারুল ইসলাম ও বড়গাছীর ইমরান আলী ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন। সভা শেষে অংশ গ্রহণ কারী বিপুল সংখ্যক আলু চাষীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রহমান হিমাগার-২ এর গেট পর্যন্ত গিয়ে ব্যানার ছিড়ে ফেলে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এসময় হিমাগারের ভিতরে থাকা কর্মকর্তা কর্মচারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায় বলেও নিশ্চিত করেন কয়েকজন বিক্ষোভ কারী। কারন হিমাগার মালিক সমিতির নেতা ফজলুর রহমান। তবে কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে নি। আতংকে পালিয়ে তারা বলেও দাবি চাষীদের। এতে বিপুল সংখ্যক আলু চাষি আর সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, চলতি বছর রাজশাহীর তানোরে ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষমাত্রা থাকলেও ২৭০ হেক্টর বেড়েছে। এবারে এতোসব আলুর ক্ষেত থেকে প্রায় ৪ লাখ আলু উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস। এসব আলুর ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ তানোরে ৬টি, মোহনপুরে ৭টি হিমাগার ছাড়াও পুরো রাজশাহীতে ৩৬টি হিমাগারে আলু রাখেন ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। এই মজুদ করা আলু সারা বছর বাজারে বিক্রি করা হয়। এজেলার চাহিদা মিটিয়ে সারা দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে।
কৃষকদের দাবি, গত মৌসুমে হিমাগারে আলু রাখার জন্য প্রতি কেজি দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ টাকা। এবারে দ্বিগুণ বাড়িয়ে তা ৮ টাকা কেজি করা হয়েছে। হিমাগার ভাড়া ৮ টাকা হওয়ায় আলুর দাম মৌসুমের শেষে অতিরিক্ত বাড়ার আশঙ্কা করছেন ভোক্তা ও চাষিরা। এদিকে বিদ্যুতের দাম না বাড়ার পরও প্রতি কেজি আলুতে সংরক্ষণ চার্জ ৪ টাকা বাড়ানোকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এটাকে মহা সিন্ডিকেট ও বর্তমান সরকার এক ধরনের বেকায়দায় ফেলতেই মালিকদের এমন হঠকারীতা বলেও মনে করছেন চাষীরা।
এবিষয়ে ক্লোড স্টোর কর্তৃপক্ষ বলেছেন, আলু রাখার দর নির্ধারণ করে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন। দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে তারা বলেন, লেবার খরচ ও বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়ানো হয়েছে। এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর গোল্লাপাড়া মাঠে প্রতিবাদ সভা করে নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত ভাবে অভিযোগ করা হয়েছিল। ওই সভায় ১০ জানুয়ারির ভাড়া কমানোর দাবি জানানো হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খায়রুল ইসলাম বলেন, প্রতি কেজিতে দ্বিগন টাকা ভাড়া বাড়লে এই চাপ ভোক্তা পর্যায়ে পড়বে। এই সুযোগে সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীরা আলুর দাম বাড়িয়ে দিবে। এবার বিদ্যুতের দাম বাড়েনি, অন্য কোন সমস্যাও নেই তারপরও হিমাগারে ভাড়া দ্বিগুন বাড়ানো ব্যাপারে উভয়পক্ষকে নিয়ে সমাধানে বসা হবে বলে জানান ইউএনও।




কত টাকা বাড়ছে সিগারেটের দাম

অনলাইন ডেক্স
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে তামাকজাত পণ্য সিগারেটও।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এরপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে।

জারিকৃত নির্দেশনায় সিগারেটের মূল্যস্তর ভেদে স্ট্যাম্প ও ব্যান্ডরোল ব্যবহার এবং মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আদায় করতে বলা হয়েছে। মূলত চলতি অর্থ বছরের শেষ ৬ মাসে রাজস্ব আদায় বাড়াতে ভ্যাট বসানোর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরিত ওই অধ্যাদেশে সিগারেটের চারটি স্তরে দাম ও শুল্ক উভয়ই বাড়ানো হয়েছে।

নিম্নস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়েছে। এতে প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে।

এছাড়া মধ্যমস্তরে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা ও সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। উচ্চস্তরে ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

অতি উচ্চস্তরের সিগারেটের দাম ১৬০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬৭ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, লাইম স্টোন ও ডলোমাইটে ১০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়েছে




পবায় হিমাগারে অবৈধভাবে মজুদ করা ২৬শ বস্তা আলু জব্দ

নিজস্ব সংবাদদাতা
রাজশাহীর পবা উপজেলায় দুটি হিমাগারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে ২৬শ’ বস্তা আলু জব্দ করেছেন। পরে সেগুলো নির্ধারিত দামে খোলা বাজারে বিক্রি করেছে পবা উপজেলা প্রশাসন। তবে এ সময় মজুদদাররা এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনী ও অতিরিক্ত পুলিশ ও গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় কয়েকজনকে প্রাথমিকভাবে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, আলুর বাজারে কয়েক দফা মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে চলমান অস্থিরতা ঠেকাতে সম্প্রতি পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। মজুদ করা আলু ৩০ নভেম্বরের পর হিমাগারে রাখা যাবে না- এমন আদেশও দিয়েছে সরকার। কিন্তু পবার কয়েকটি হিমাগারে নির্ধারিত সময়ের পরও বিপুল পরিমাণ আলু মজুদ করে রেখেছিল।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জানান, সরকার পাইকারী বাজারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরেও হিমাগার মালিক ও ব্যবসায়ীরা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে আলু মজুত রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারে বেশি দামে আলু বিক্রি করছে। এ ব্যাপারে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার হিমাগর খালি করার নির্দেশ দেন। এরপরেও কয়েকটি হিমাগর আলু মজুত রেখেছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন অভিযান চালানো হচ্ছে।

গত রোবার সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান পবা উপজেলার নওহাটা পৌর এলাকার আলাইবিদিরপুর এলাকার আমান কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালিয়ে প্রতিটি ৬০ কোজির ৩০৬ বস্তা আলু খোলা বাজারে ৩৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি দেন। এই টাকা আলুর মালিককে দেওয়া হয়। এরপর তারা একই এলাকার রহমান ব্রাদার্স কোল্ড স্টোরেজ প্রা. লি.- এ অভিযান চালান। তখন হিমাগারের কর্মকর্তারা পালিয়ে যান। ওই সময় ম্যাজিস্ট্রেট ঘোষণা দিয়ে আসেন যে বিজয় দিবসের পরের দিন অর্থাৎ ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ফের অভিযান চালানো হবে।

পরের দিন সোমবার ওই হিমাগারে দেখা যায়, আলু বের করে বিক্রি করা হচ্ছে। শ্রমিকেরা রীতিমতো আলু বাছাইয়ের কাজ করছেন। আগের দিন মুঠোফোনে হিমাগারের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেছিলেন, তাদের হিমাগারে প্রায় ১ হাজার ৬০০ বস্তা আলু রয়েছে। এই আলু কৃষকের। তারা বিক্রি না করলে হিমাগার কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই। অভিযানের সময় পালানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সন্ধ্যার পরে সাধারণত তারা চলে যান। দুইজন কর্মচারী ছিলেন। তাদের আটক করে নিয়ে গিয়ে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সঙ্গলবার দুপুরে অভিযানে গিয়ে দেখা যায়, ওই হিমাগারে বিক্রির পরেও ২ হাজার ২০০ বস্তা আলু মজুত রয়েছে। অভিযান চলাকালে সেখানকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহরাব হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় তিনি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আরেকটি চেম্বার অভিযান চালিয়ে আরও ১০০ বস্তা আলুর মজুত পান। সব মিলিয়ে তাদের হিমাগার থেকে ২ হাজার ৩০০ বস্তা আলু জব্দ করা হয়।

খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে আলুর ক্রেতারা এসে আলু কেনার জন্য ভিড় করতে থাকেন। এ সময় জেলার মোহনপুর উপজেলার নন্দনহাটি এলাকার রাশেদুল হক নামের একজন ব্যবসায়ী এসে বাধা দেন। পরে তাকেও পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার এই হিমাগারে ১২ হাজার বস্তা আলু ছিল। সর্বশেষ ১ হাজার ৫০০ বস্তা অবশিষ্ট ছিল। এগুলো তার ৩৪ টাকা কেজি দরে কেনা ছিল। ৪৫ টাকা কেজিতে খরচ পড়েছে। তিনি ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করছিলেন। তারা তো ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরেই বিক্রি করবেন। তার চেয়ে জনগণকে এই ন্যায্য দামে দিলে তিনি খুশি হতেন।

তিনি বলেন, এর আগে তারা আলুতে লোকসান খেয়ে জমি বিক্রি করে হিমাগারের ভাড়া শোধ করেছেন। তখন তো কেউ দেখেনি।’
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন,‘ আগামীবারও তাই হবে। আমি ৩০০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। এখনই কোনো হিমাগারে বুকিং নিচ্ছে না। এই আলু কোথায় রাখব। ফেলে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পবার ইউএনও মো. সোহরাব হোসেন বলেন, তাদের দায়িত্ব হিমাগারের মজুত খালি করে দেওয়া। কিন্তু তারা যাদের কাছে আলু বিক্রি করেছেন। তাদের ফোন নম্বর রেখে দিয়েছেন। এই আলু যারা কিনেছেন পবা উপজেলার আওতাধীন এলাকায় ভোক্তাদের কাছে খুচরা বাজারে যেন প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে বা ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করা হয় সে বিষয়টা মনিটর করা হবে। সেখানে তাদের তদারকি করবেন।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব না। তারপরেও তারা আলুর বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাধ্যানুযায়ী কাজ করবেন। ইতোমধ্যে দুটি হিমাগারে যে অভিযান করেছেন। অন্য হিমাগারগুলো মজুত খালি করে ফেলবে। তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আরেকটি হিমাগারে যাচ্ছিলেন। শুধু রাজশাহী জেলাতেই ৪৩টি হিমাগার আছে। এতে সংরক্ষণ বা মজুত করা যায় প্রায় ৮৫ লাখ বস্তা আলু। প্রতিবস্তায় আলু থাকে ৬০ থেকে ৬৫ কেজি। এখনও কিছু হিমাগারে আলু মজুত করে রাখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব হিমাগার পরিদর্শনের কথা বলছে প্রশাসন। এই আলু খুচরা বাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা। মঙ্গলবার রাজশাহীর শহরের বাজারগুলো থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোথাও এই আলু ৭০ টাকা কেজির কমে বিক্রি হচ্ছে না। নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।




বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য-ভিসা বন্ধ রাখলে ভারত দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না’

জন্মভূমি নিউজ ডেক্স
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও ভিসা বন্ধ রাখলে ভারতে যে দুর্ভিক্ষ হবে, তা ঠেকাতে পারবে না দেশটি। নরেন্দ্র মোদি ও সোনিয়া গান্ধী সবাই বসে কপাল ঠোকাঠুকি করতে পারবে কিন্তু দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না।

রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাহিত্যিক ও সাংবাদিক কালাম ফয়েজী রচিত ‘নেতা ও কবি’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব উপলক্ষে সোমবার এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমিটি এ আয়োজন করে।

গয়েশ্বর রায় বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৯০ শতাংশ। আমরা শুধু ইলিশ মাছ পাঠাই, তারা সবকিছুই পাঠায়। সুতরাং ভিসা ও এলসি এসব যদি বন্ধ থাকে, তাহলে ভারতের দুর্ভিক্ষ ঠেকানো সম্ভব না।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের মানুষের মনোভাব না বোঝে, তাহলে দুদেশের সম্পর্ক হবে মুখোমুখি। আজ তারা নেপালের সঙ্গে বন্ধুত্ব হারিয়েছে, মালদ্বীপের সঙ্গেও হারিয়েছে, এমনকি ভুটানের সঙ্গেও বন্ধুত্ব হারিয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক আগেই হারিয়েছে। এখন বাংলাদেশের সঙ্গে। তাদের ভাবতে হবে দক্ষিণ এশিয়ার ভেতর সব দেশের সঙ্গে সম্পর্কে হারিয়ে তারা কিভাবে চলবে। কোনো দেশই ভারতের সঙ্গে আপস করছে না। ভারতের অবস্থা বাঘ ও শিয়ালের গল্পের মতো হয়ে গেছে।

মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহিনের সভাপতিত্বে এবং দৈনিক খোলাবাজার পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক জহিরুল ইসলাম কলিমের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বইয়ের লেখক কালাম ফয়েজী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমত উল্লাহ প্রমুখ।




৬ ভোজ্যতেল কোম্পানির কাছে জিম্মি সরকার, জানা গেল কারণ

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক:
গত বছর ঠিক একই সময়ের (অক্টোবর-নভেম্বর) তুলনায় ২০ শতাংশ সয়াবিন তেল কম আমদানি হয়েছে। তারপরও যে পরিমাণ তেল আছে তা দিয়ে অনায়াসে আরও দুই মাস চলবে। এছাড়া এর আগের তেলও মিলে আছে। সঙ্গে পাইপলাইনে থাকা তেলও রোজার আগেই দেশে ঢুকবে। তারপরও বিশ্ববাজারে দাম বেশি ও আমদানি কমের অজুহাতে ৬ কোম্পানি কারসাজি করেছে।

রোজা শুরুর চার মাস (নভেম্বর) আগ থেকেই ডিলারের কাছে পর্যাপ্ত সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এতে খুচরা পর্যায়েও কমেছে সরবরাহ। ফলে বাজার থেকে বোতলজাত তেল উধাও হয়ে গেছে। দুই-এক দোকানে মিললেও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। তাই খোলা তেলের ওপর চাপ বাড়ায় দামও হু-হু করে বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা। শনিবার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে ২০২২ সালে মার্চে ভোজ্যতেল নিয়ে আমদানিকারক ও উৎপাদক ছয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কারসাজির প্রমাণ পায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তখন দেখা যায়, অতি মুনাফা করতে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর সিন্ডিকেট বাজারে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেয়। এতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়। হু-হু করে বাড়ে দাম। অস্থির হয়ে ওঠে ভোজ্যতেলের বাজার। ওই সময় প্রতিলিটার সয়াবিন তেল ২১০-২২০ টাকায় বিক্রি হয়। তখন অধিদপ্তর মিলগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে। সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে এপ্রিল মাসে ২৪ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। তারপরও মন্ত্রণালয় কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। বরং তেলের দাম ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো দাম বাড়িয়ে মন্ত্রণালয় থেকে নতুন মূল্য ঘোষণা করা হয়। এতে ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও ক্রেতার বাড়ে নাভিশ্বাস।

ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, সরকারি হিসাবে বছরে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে ২২ লাখ টন। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবে ২ লাখ টন ভোজ্যতেল উৎপাদন হয়। এছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি হয় ২৩ লাখ টন। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, চলতি বছরের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দেশে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার টন। গত বছরের একই সময়ে এই আমদানির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৬০ হাজার টন। সে হিসাবে আমদানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। কিন্তু দেশে এক মাসের তেলের চাহিদা ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩৩ টন। এ হিসাবে দেশে যে পরিমাণে তেল মজুত আছে তা দিয়ে আরও দুই মাস অনায়াসে চলার কথা। তারপরও আমদানিকারকরা ডিলারদের কাছে সরবরাহ করছে না। এতে খুচরা পর্যায়ে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, সংকটের কোনো কারণ নেই। আমরা বিগত দিনে দেখেছি দেশে ৫ থেকে ৬টি কোম্পানি সয়াবিনের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়ার পর সাপ্লাই বন্ধ করে দেয়। সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়ে তারা সরকারের কাছে প্রস্তাব দেয় দাম বাড়ানোর। এবারও সেটাই করা হচ্ছে। রোজা ঘিরে তারা এমন কারসাজি করছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের উচিত এখন কোম্পনিগুলোর কাছে কী পরিমাণে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেল মজুত আছে তার খোঁজ নেওয়া। কোনো অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।

রবিবার রাজধানীর একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের মুদি দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন নেই। দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও রাখা হচ্ছে গায়ের দাম থেকে বেশি। ক্রেতারা বলছেন, দোকানিরা আগের কেনা তেল এখনো বিক্রি করছে। তবে নতুন করে তারা তেল পাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে খুচরা বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েল লিটারপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। শনিবার খোলা পাম অয়েল বিক্রি হয় ১৬০-১৬২ এবং খোলা সয়াবিন ১৭০-১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৬৭-১৭০ টাকা, দুই লিটার ৩৩৪ টাকা ও ৫ লিটার ৮১৮ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ দিন রাজধানীর জিনজিরা কাঁচাবাজারের মুদি বিক্রেতা সোহেল (ছদ্মনাম) যুগান্তরকে বলেন, নভেম্বর মাসে পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৭৯০-৮০০ টাকা দিয়ে কিনে খুচরা পর্যায়ে ৮১৮ টাকায় বিক্রি করতাম। এখন পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলাররা অল্প পরিমাণে সরবরাহ করছেন। তাই ডিলাররা সংকট দেখিয়ে আজও ৮১০ টাকা দিয়ে বিক্রি করেছে। তবে সরকার নির্ধারিত পণ্যের গায়ের লিখিত খুচরা মূল্য ৮১৮ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া এক লিটারের বোতলজাত তেলেও একই অবস্থা। এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭-১৭০ টাকা খুচরা মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ তেল ডিলারদের কাছ থেকে ১৬২ টাকা দিয়ে কিনতাম। এখন ১৬৫ টাকা দিয়েও পাচ্ছি না।

তিনি জানান, চাহিদা দিয়েও অনেক কোম্পানির কাছ থেকে চাহিদামাফিক বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কোম্পানি দিচ্ছে না। যে কারণেও খুচরা বাজারে বোতলজাত তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। কোম্পানিগুলো ইচ্ছা করেই এমনটা করেছে। যাতে রোজার আগে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা করতে পারে। তাই এখন থেকেই এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।

রামপুরা বাজারের মুদি বিক্রেতা জাহিদ জানান, নভেম্বর মাসে শুরু থেকে বাজার থেকে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। তখন ডিলারদের কাছ থেকে প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন ১৮২ টাকায় কিনতে হয়েছে। সে সময় খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করতে হয়েছে ১৮৫ টাকা। তবে অক্টোবর মাসের শেষদিকে তা ১৫৭-১৫৮ টাকায় ডিলারদের কাছ থেকে কিনতাম। খুচরা বিক্রি করতাম ১৬০ টাকা। বর্তমানে দাম কিছুটা কমায় খুচরায় ১৭৫ টাকায় বিক্রি করছি।

এদিকে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়াতে ও বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানিতে দুই দফায় শুল্কু-কর কমানো হয়। প্রথম দফায় ১৭ অক্টোবর ও দ্বিতীয় দফায় ১৯ নভেম্বর শুল্ক-কর কমিয়ে নামানো হয়েছে শুধু ৫ শতাংশে। তারপরও তেলের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। দাম কমেনি বরং সরবরাহ কমিয়ে সংকট তৈরি করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে দাম।

ভোজ্যতেলের বিষয়ে টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার তাসলিম জানান, সরকার শুল্ক-কর যা কমিয়েছে, তার চেয়ে বিশ্ববাজারে দাম বেড়েছে বেশি। কোম্পানিগুলো লোকসানের ঝুঁকিতে থাকলেও সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। চলতি মাসে সরবরাহ বাড়িয়েছে।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বাজারে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে ভোজ্যতেলের বিষয়টিও দেখা হচ্ছে। কেন বাজার থেকে উধাও হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের কারণে এমনটা হচ্ছে, তা দেখা হচ্ছে। অনিয়ম সামনে এলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে




বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ বিধান আইন বাতিল

জলমভূমি নিউজ ডেস্ক:
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ বাতিল করা হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) আইনটি বাতিল করে অধ্যাদেশ জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

এর আগে গত ২০ নভেম্বর ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ জারির প্রস্তাব নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। ২০১০ সালের আইনটি বাতিল করা হলেও ওই আইনের অধীনে হওয়া চুক্তি বাতিল হবে না।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া এ আইনের অধীনে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্র্বতী সরকার এসে আইনটি স্থগিত করে।

অধ্যাদেশ অনুমোদনের সময় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছিল, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ধারা-৬ এর অধীন বিদ্যুৎ উৎপাদন চুক্তি সম্পাদন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বিষয়ে জনমনে প্রবল বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে।’

গত ১৪ নভেম্বর ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ এর ধারা ৬(২) ও ধারা ৯ হাইকোর্ট বিভাগ অবৈধ ঘোষণা করেন