দুর্গাপুরে কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা

দুর্গাপুর(রাজশাহী) প্রতিনিধি:
রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন অনুুষ্ঠিত হবে আগামী ১ লা অক্টোবর । ইতিমধ্যে তফসিল ঘোষনা করা হয়েছে। আর তফসিল ঘোষনার পর মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ শেষে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেবর) উক্ত কমিটির সভাপতি পদে আ: আজিজ মন্ডল তার অনুসারীরাদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী মো. আব্দুল আজিজ মন্ডল, ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোছা: কহিনুর খাতুন,সদস্য পদে ইমরান আলী, আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল (নাজির), মো.আজাহার আলী, মোছা: রেহেনা বেগম, কুলসুম খাতুন ও ফেরদৌস রহিম মনোনয়ন সংগ্রহের পর জমা দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ(ইউসিসিএ) দপ্তর থেকে তফসিল ঘোষনার পর মনোনয়ন পত্র বিতরণ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষনা অনুযায়ী স্ব স্ব পদে প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র উত্তোলন করেছেন প্রার্থীরা। আর মনোনয়ন পত্র জমা গ্রহনের শেষ দিন ছিলো ১০ সেপ্টেম্বর। মনোনয়ন পত্র বাছাই ও প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর। আর আগামী ১ অক্টোবর উপজেলা বিআরডিবি অফিসে
চত্বরে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এসময় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আ: আজিজ মন্ডলের সাথে উপস্থিত ছিলেন, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আয়নাল হক, রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য সাইদুর রহমান মুন্টু, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হাসানুজ্জামান লালটু, বিএনপি নেতা আশরাফুল কবির বুলু, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ




রাজশাহীতে দিন মুজুরের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ,সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী।

বাণী ইসরাইল হিটলার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার হোজা গ্রামের দিন মুজুর আনছার আলীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ওই দিন মুজুর । মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা বারোটার দিকে রাজশাহী প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আনছার আলী বলেন, গত ৮ দিন আগে তার পকেট থেকে ৫শ টাকা নেয় ৯ বছর বয়সি ভিকটিম । সেখান থেকে ১৫০ টাকা খরচ করে বাঁকি টাকা ফেরত দেয় আনাছার আলীকে। তবে সেই সত্য ঘটনা অন্যদিকে নিয়ে যায় বাবর, শরিফুল সহ এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী। তাদের সহোযোগিতায় মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ আনা হয় আমার বিরুদ্ধে। মামলা থেকে বাঁচতে তারা আমার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন। না হলে বাঁচতে পারবো না বলে আমাকে হুমকি দেয়।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ঘটনাটি মিথ্যা ও সাঁজানো। মূলত তাকেসহ তার পরিবারকে উচ্ছেদ করতেই পরিকল্পিতভাবে বাবর চায়নাকে দিয়ে মিথ্যা ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেন।
ঘটনা সঠিক তদন্ত করে ন্যায় বিচার পেতে আমি প্রশাসনের কাছে সহোযোগিতা চাচ্ছি।

এ বিষয়ে পুঠিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিবুল ইসলাম জানান, গুরুত্ব সহকারে অভিযোগ বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।




রাজশাহীর দুর্গাপুরে তিন ইউপি চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন

স্টাফ রিপোর্টার জাহাঙ্গীর আলম
দুর্গাপুর : দীর্ঘদিন কর্মস্থল বা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ধারাবাহিক ভাবে অনুপস্থিত থাকায় রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার তিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

সোমবার রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখা থেকে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। একই সাথে তিন ইউপি চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দুই প্যানেল চেয়ারম্যানকে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উপজেলার নওপাড়া, ঝালুকা ও জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গণ ধারাবাহিক ভাবে দীর্ঘ দিন ধরে কর্মস্থল বা পরিষদে অনুপস্থিত রয়েছেন। যার ফলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের জনসেবাসহ সাধারণ কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। উদ্ভুত অসুবিধাসমূহ দূরীকরণের লক্ষে সুত্রোক্ত ১ নং পরিপত্রের ৩ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এবং ২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান গণকে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করার জন্য আর্থিক প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।

অপসারিত চেয়ারম্যানরা হলেন, উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম শফি। এই ইউনিয়নে ইউপি সদস্য আজাদ আলী সরদারকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। জয়নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে অপসারণ করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরীকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ঝালুকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকতার আলীকে অপসারণ করে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য রাজেনা বিবিকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার জন্য আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা তাদের ওপর অর্পণ করা করা হয়েছে মর্মে প্রজ্ঞাপন কার্যকর হবে।

প্রসঙ্গত; গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হবার পর ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার স্বাক্ষরিত আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়।




শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের প্লট বাতিলের দাবি

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক :
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আলোচিত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে নিজ নামে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু তিনি একা নন, প্লট নিয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ আহমেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

এ ছাড়া প্লট বরাদ্দ প্রাপ্তদের তালিকায় আছেন শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার দুই ছেলেমেয়ে।

রাজনৈতিক বিবেচনায় তারা প্লট বুঝে পান ২০২২ সালে। শেখ হাসিনার পতনের পর এ সংক্রান্ত প্লট বরাদ্দ বাতিলের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন আদিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত প্লট মালিকরা। সোমবার দুপুরে পূর্বাচলের ২৭নং সেক্টরে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে। এতে যোগ দেন পূর্বাচলের শতাধিক আদিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা।

এ সময় বক্তারা বলেন-শেখ হাসিনা নিজেকে অসহায় এবং নিঃস্ব বলে সভা-সমাবেশে রাজনৈতিক বক্তব্য দিলেও শেখ হাসিনা নিজের নামে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন। পূর্বাচলে প্রস্তাবিত ক‚টনৈতিক জোন ২৭ নম্বর সেক্টরে ২০৩ নম্বর রোডে তার প্লট নম্বর ০০৯। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট তার নামে বরাদ্দপত্র ইস্যু করে রাজউক। শেখ হাসিনার বাসভবন ধানমন্ডির ৫৪ সুধা সদনের ঠিকানায় বরাদ্দপত্র পাঠানো হয়।

সম্প্রতি রাজউকে গিয়ে দেখা যায়, রেকর্ডরুমে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ফাইলগুলো বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। শেখ হাসিনার প্লট বরাদ্দের ফাইলের ওপর বড় ইংরেজি হরফে লেখা রয়েছে ভি-৩, পাতা ১৪১। ফাইলে শেখ হাসিনার স্বাক্ষরযুক্ত আবেদনপত্রের কপি, বরাদ্দপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ অন্যান্য কাগজপত্র রয়েছে। এসব প্লট বাতিল করতে হবে।

এ সময় তারা আরও বলেন, রাজউকের উপপরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফ স্বাক্ষরিত চ‚ড়ান্ত বরাদ্দপত্রে লেখা হয় ‘কাঠা প্রতি ৩ লাখ টাকা হিসাবে ১০ কাঠার প্লটের মোট মূল্য ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। হাসিনা ছাড়াও ১০ কাঠা করে প্লট নেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ আহমেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তাদের প্লট নম্বর যথাক্রমে ০১৫ ও ০১৭। এর মধ্যে জয়ের নামে প্লটের বরাদ্দপত্র জারি করা হয় ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর। পরে ১০ নভেম্বর প্লটের মালিকানাসংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। এর আগে ২ নভেম্বর পুতুলের নামেও ১০ কাঠা প্লটের বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হয়। এতে এস্টেট ও ভ‚মি-৩ শাখার তৎকালীন উপপরিচালক হাবিবুর রহমানের স্বাক্ষর রয়েছে। যা অন্যায়ভাবে নেওয়া হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা আরও বলেন, শুধু শেখ হাসিনা ও তার ছেলেমেয়ে নন; পূর্বাচল প্লকল্পে ১০ কাঠা করে প্লট নেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার ছেলেমেয়ে। তাদের নামেও যথারীতি প্লট বরাদ্দ করা হয় ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডের একই জায়গায়। সেখানে শেখ রেহানার প্লট নম্বর ০১৩, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের প্লট নম্বর ০১১ ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের প্লট নম্বর ০১৯।




বাংলাদেশের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে স্বর্ণের দাম কমানো সম্ভব?

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে গত মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জুয়েলার্স এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. আগরওয়ালার বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে সিআইডি।

এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে স্বর্ণ ও হীরা আমদানির নামে বিদেশে অর্থ পাচারসহ নানা অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বর্ণের বাজারে তথাকথিত ‘সিন্ডিকেট’ ভেঙে দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বাংলাদেশে বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি হয় না। ফলে এই খাতে ‘সিন্ডিকেট’র দ্বারা স্বর্ণের মূল্য নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ পুরনো। চোরাচালানের মাধ্যমে যে সব স্বর্ণ আসে, সেগুলো দেশের বাজারে বিক্রি হয় বলে ব্যবসায়ীরাও স্বীকার করেন। ফলে চোরাচালান-কেন্দ্রিক এই খাত নজরদারির বাইরে থাকার সুযোগ নিচ্ছেন তারা।

দাম নির্ধারণের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছেমতো তা নির্ধারণেরও সুযোগ পাচ্ছেন। কারণ সরকার স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে না, করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, বাংলাদেশে স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা ত্রুটিপূর্ণ। ফলে স্বর্ণ আমদানি হয় না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই খাতে জবাবদিহিতা ও নজরদারি নেই। ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ কর। আর মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক বাজার বা প্রতিবেশী দেশের বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে কি না, তাও দেখা হয় না। ফলে যেভাবে উচ্চহারে দাম নির্ধারণ করা হয় সেটা কতখানি যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন সব সময়ই ছিল বলে জানান তারা।

তাই পুরো বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনা, সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার অংশগ্রহণ জরুরি বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এ ছাড়া চোরাচালান ছাড়া বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি কীভাবে করা যাবে, সে বিষয়গুলো আরো সহজীকরণ করারও আহ্বান জানান তারা।

কেন স্বর্ণ আমদানি হয় না?

সরকার ২০১৮ সালে স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা প্রণয়ন করে। পরে ২০২১ সালে তা সংশোধন করা হয়। স্বর্ণের বাজার ও জুয়েলারি ব্যবসায় স্বচ্ছতা আনতে ওই বছরই একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ আমদানির লাইসেন্স দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। শুরুর দিকে পাঁচ-ছয়টি প্রতিষ্ঠান কিছু স্বর্ণ আমদানি করলেও, পরে তা মুখ থুবড়ে পড়ে।

ব্যবসায়ীরা নিজেরাও স্বীকার করছেন, বাংলাদেশে বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি হয় না। কিন্তু কেন হয় না, এ প্রশ্নে ব্যবসায়ীরা দুষছেন সাবেক সরকারের স্বর্ণ আমদানির নীতিমালাকে।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশনের দাম নির্ধারণ কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আগের সরকারের গোল্ড ইমপোর্টের ক্যাটাগরিটা বেশ ত্রুটিযুক্ত ছিল। আমরা অনেক আবেদন করেছি যে, গোল্ডের ইমপোর্টের যে বিষয়টা লাইসেন্স দিলেন। কিন্তু গোল্ড আমদানি করার কোনো সুযোগ নাই!’

‘কারণ ওখানে ট্যাক্স ক্যাটাগরি যেটা ইমপোজ করা আছে অলমোস্ট ১৮ থেকে ১৯ পারসেন্ট সব কিছু মিলিয়ে। অন দ্য আদার হ্যান্ড এটা ‘হ্যাসেলফুল’ (ঝামেলায় পরিপূর্ণ) ছিল’, বলেন মি. রহমান। এ ছাড়া স্বর্ণ আমদানির পুরো প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হওয়ায় এবং নানা জটিলতায় সেটা আর সামনে এগোতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন মি. রহমান।

তিনি জানান, ‘গোল্ড ইমপোর্টের জন্য পারমিশন থেকে শুরু করে অলমোস্ট ফিনিশ করা পর্যন্ত ২৪ থেকে ২৫ দিন পার হয়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কিছু লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। পাঁচ-ছয়জন ইমপোর্টার ইমপোর্ট করেছিল। কিন্তু তারা আর সামনে এগোতে পারেনি এসব বাধাগুলোর কারণে!’

‘শিথিল’ ব্যাগেজ রুলস

ব্যবসায়ীদের দাবি সরকার একদিকে আমদানি নীতিমালা করে স্বর্ণ আমদানি করতে বলে, অথচ ব্যাগেজ রুলসে দেওয়া হয়েছে শিথিলতা। ব্যাগেজ রুলসে এক ভরি স্বর্ণ শুধুমাত্র চার হাজার টাকায় দেশে আনার সুযোগ রয়েছে।

মি. রহমান বলেন, ‘এটা টোটালি কন্ট্রাডিকটরি (স্ববিরোধিতায় ভরা)। ইমপোর্টকে যদি এনকারেজ করতে চান আবার ব্যাগেজ রুলসের আওতায় সুযোগ করে দেন, তাহলে তো ইমপোর্ট হবে না।’

‘এই জটিলতাগুলো নিয়ে আমরা চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরসহ অনেকবার চেষ্টা করেছি তিন বছর থেকে। কিন্তু তখন এনবিআরের যারা কর্ণধার ছিলেন তারা আমাদের কথায় কান দেননি।’

বিএফআইইউ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এই খাতে আমদানি-রফতানির সুযোগ হলে ২২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হবে। যাতে ১০ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আহরণ হবে দেশের।
এই প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে মি. রহমান দাবি করেন এই সেক্টরকে ‘এগুতে দেওয়া হয়নি’ এবং এই খাত ‘সরকারের সহযোগিতা পায়নি’।

স্বর্ণের দাম সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি?

ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজধানীর তাঁতীবাজারে বুলিয়ান (পোদ্দার) মার্কেট স্বর্ণের যে দাম নির্ধারণ করে সেটা অনুসরণ করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে। বুলিয়ান মার্কেট হলো যেসব ব্যবসায়ীরা স্বর্ণের ব্যবসা করেন তাদের মার্কেট। বাংলায় একেই পোদ্দার বলা হয়।

যারা স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত তাদের সিন্ডিকেট রয়েছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। বাজুস দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ‘অসহায়’ বলে দাবি তাদের। কারণ সরকার ডলারের রেট দেয়। কিন্তু স্বর্ণের রেট নির্ধারণ করে না।

মি. রহমান বলেন, ‘সরকার গোল্ড আনেও না, গোল্ড সাপ্লাইও দেয় না। বাজুস দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধতা ধরে রাখার জন্য স্বর্ণের রেট দেয়।’

‘রেট কীভাবে দেয় বাজুস? যেমন ধরুন তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট। আমরা কিন্তু বুলিয়ান মার্কেটের রেটকে ফলো করি। বুলিয়ান মার্কেট সলিড গোল্ড নিয়ে ডিল করে’, জানান তিনি।

বুলিয়ান মার্কেটে স্বর্ণ কোথা থেকে আনা হয়, এমন প্রশ্নে মি. রহমানের দাবি, ‘সেটা আসলে আমাদের ধারণা নেই। ইট ইজ টোটালি বেইজড অন স্মাগলিং। যেটা আমরা জানি। এদেশের প্রশাসনও জানে।’

এদের একটা সিন্ডিকেট আছে দাবি করে মি. রহমান জানান, দুবাই থেকে ব্যাগেজ রুলসে যেসব স্বর্ণ আসে বা মানুষজন যে স্বর্ণ আনে অথবা ইনফরমাল ওয়েতে যে স্বর্ণ আসে তারা সে সব স্বর্ণের উচ্চ মূল্য মুনাফা নির্ধারণ করে স্বর্ণের রেটকে নিয়ন্ত্রণ করে।

‘যেহেতু বহির্বিশ্ব থেকে দেশে স্বর্ণ আমদানি হয় না, তারা ১০-১২ হাজার টাকা রেট বাড়িয়ে একটা রেট নির্ধারণ করে রাখে। ওইটা ফলো করতে বাজুস বাধ্য’, বলেন মি. রহমান।

বুলিয়ান মার্কেটের সিন্ডিকেট বেশ শক্তিশালী বলে দাবি করেন তিনি। মূলত ওই মার্কেটের রেট অনুসরণ করেই বাজুস দাম নির্ধারণ করে থাকে বলে জানান এই ব্যবসায়ী।

ফলে তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট যে স্বর্ণের রেট নির্ধারণ করে, তার ভিত্তিতে শুধু দুই দশমিক আট শতাংশ মুনাফা যুক্ত করে দাম নির্ধারণ করা হয় বলে দাবি এই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর।

বাংলাদেশে স্বর্ণের গহনা তৈরিতে ১২ শতাংশ ‘ওয়েস্টেজ’ (অপচয়) থাকে যা বাকি বিশ্বের তুলনায় অনেক বেশি। অন্য দেশে এই পরিমাণ ১ থেকে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। বাংলাদেশে সেটা অলংকার তৈরির চার্জ হিসেবে নেওয়া হয় বলে জানান মি. রহমান। এতেও দাম বৃদ্ধি পায়।

স্বর্ণের দাম বাড়তি হওয়ার কারণে বাংলাদেশ থেকে অনেক ক্রেতাই দুবাই, কাতার বা পার্শ্ববর্তী দেশের বাজারে চলে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশে এখন যে ধারায় স্বর্ণের ব্যবসা চলছে তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী চলছে না। তারা বলছেন, যারা স্মাগলিং করত তারা এই সিন্ডিকেটের অংশীদার। মূলত ২০০৯ সাল থেকে এ ধারা চলছে বলে দাবি তাদের।

ব্যবসায়ীরা এক্ষেত্রে সাবেক প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান দোলন এবং সাধারণ সম্পাদক দিলীপ আগরওয়ালের দিকেও ইঙ্গিত করছেন। সে সময় স্বর্ণের রেট উচ্চ মাত্রায় ছিল বলে দাবি তাদের।

এদিকে, মি. রহমানের দাবি ওই ধারা থেকে বের হতে তারা ইতিমধ্যেই পাঁচ শতাংশ স্বর্ণের রেট কমিয়েছেন। যদিও তার এই দাবির তেমন কোনো প্রভাব বাংলাদেশের স্বর্ণের বাজারে গত কয়েক মাসেও দেখা যায়নি।

মঙ্গলবার রাতেই সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই সাথে তার বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালান, অর্থ পাচারসহ নানা অভিযোগের অনুসন্ধানও শুরু করেছে সিআইডি।

এই সিন্ডিকেটের বিপরীতে বাজুস অসহায় বলে দাবি ওই সংস্থার স্বর্ণের দাম নির্ধারণ কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের।

মি. রহমানের দাবি, আগের রেট হলে এখন স্বর্ণের দাম ভরিতে আরেও অন্তত ১০ হাজার টাকা বেড়ে যেতো। দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজার দর বাংলাদেশ জুয়েলারি এসোসিয়েশন বিবেচনায় নেয় না বলেও জানান তিনি।

‘আমাদের তো দেখার সুযোগ নাই। যদি গোল্ড ইমপোর্ট হতো বা রিফাইনারি থেকে বের হতো তাহলে নির্ধারণ করার সুযোগ ছিল। যেহেতু এটা নাই তাই ধারণা নাই’, বলেন মি. রহমান।

বাংলাদেশের ও ভারতের দামে পার্থক্য কত?

বাংলাদেশে বুধবার ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ২৬ হাজার ৩২১ টাকা। একই দিনে প্রতিবেশী দেশ ভারতের কলকাতায় ২২ ক্যারেট এক ভরি স্বর্ণের দাম বাংলাদেশি টাকায় আসে এক লাখ দশ হাজার ৬৫৩ টাকা। অর্থাৎ একই দিনে দুই দেশের স্বর্ণের ভরিতে পার্থক্য ১৫ হাজার ৬৬৮ টাকা।

স্বর্ণ চোরাচালান রোধ কীভাবে সম্ভব?

বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের চোরাচালানের মূল হোতাদের চিহ্নিত করে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। একই সাথে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে নীতিমালাকে আইনি কাঠামোতে আনতে হবে। এতে জড়িত শুধুমাত্র বাহকদের নয়, বরং মূল অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

এজন্য আইন প্রয়োগকারী প্রত্যেকটি সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে সীমান্ত এলাকা, বিমানবন্দরগুলোতে নজরদারি বাড়ালে চোরাচালান রোধ করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সমন্বিতভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। স্থায়ী একটা সমন্বয়ের সুযোগ সৃষ্টি করলে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হতে পারে।’

অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হয়-এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন ছাড়া চোরাচালান-কেন্দ্রিক এই খাতকে রক্ষা করা কঠিন বলেও মনে করেন মি. ইফতেখারুজ্জামান।

‘সব চেয়ে বড় কথা যারা চোরাচালানের সাথে জড়িত তাদের যদি দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়, একজন-দুজন নয় পুরো সিন্ডিকেটই যাদের কথা বলা হচ্ছে…আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি সঠিকভাবে ভূমিকা পালন করতে পারে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে, অর্থাৎ অপরাধ করলে যে শাস্তি দিতে হয় সেটার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। তাহলেই চোরাচালান রোধ করা সম্ভব হবে’, বলেন তিনি।

চোরাচালান রোধ করতে বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানিকে উৎসাহ দিতেও সরকারকে আহ্বান জানান অর্থনীতিবিদরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য সায়মা হক বিদিশা বলেন, ‘যদি দেখি বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানির জন্য সরকারকে নির্দিষ্ট মূল্য পরিশোধ করে আনা হয়, তাহলে সরকারকে এনকারেজ করতে হবে। অর্থাৎ বৈধ পথে আনার বিষয়কে এনকারেজ করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সরকারের সেটা নেওয়া দরকার।’

‘এ জায়গাটাতে স্বচ্ছতা প্রায় নেই। তাই বৈধ পথে আনার ক্ষেত্রে আরেকটু ফ্লেক্সিবল টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন দেওয়া জরুরি’, বলছিলেন সায়মা হক বিদিশা।




নাটোরের বড়াইগ্রাম বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষ

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক:
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ মোট ১০ জন আহত হয়েছেন।

এ সময় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির বাড়িসহ ৯টি বাড়ি, পাঁচটি মোটরসাইকেল এবং ২৬টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের দাসগ্রাম বাজার ও রাজেন্দ্রপুর কুদুর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা বিএনপি।

এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধরা হলেন- বিএনপি কর্মী রাজেন্দ্রপুর গ্রামের শহীদুল ইসলাম মালিথা, সাগর আলী, মামুন হোসেন, জাহিদ আলী ও মশিউর রহমান, দাসগ্রামের রবিউল করিম।

এছাড়া সংঘর্ষে দাসগ্রামের মেহেদী হাসান, শাহ আজিজ, লিটন ও আওয়ামী লীগ কর্মী শাহিন মালিথা আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শহীদুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্যদের বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল টিপু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। কয়েক মাস আগে বিএনপির কমিটি গঠনের পরদিন তা বাতিলের জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে হাবিবুর রহমানের সমর্থকরা। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা।

চান্দাই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল টিপু বলেন, হাবিবুর রহমানের অনুসারীরা শনিবার জনি নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে মারপিট করলে উত্তেজনা দেখা দেয়।

রোববার সন্ধ্যায় তারা পুনরায় শতাধিক লোক নিয়ে এসে দাসগ্রাম বাজারে গুলি চালিয়ে ও ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় লোকজন পালিয়ে গেলে দাসগ্রাম বাজার ও রাজেন্দ্রপুর কুদুর মোড়ের মোট ২৬টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে।

পরে হামলাকারীরা তার নিজেরসহ সাইদুল ইসলাম, সালেক আলী, ইউনুস আলী, আনিসুর রহমান, আব্দুল হান্নান, নুর নবী, খায়রুল ইসলাম এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহুরুল মালিথার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে।

তবে সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আব্দুল আউয়াল টিপু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিকালে বিনা উস্কানিতে দাসগ্রাম বাজারে আমার দোকান ঘর ও অফিস এবং যুবদলের কার্যালয় ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে আমার সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানে গেলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় সেখানে কিছু ঘটনা ঘটলেও গোলাগুলির সঙ্গে আমার লোকজন জড়িত নয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান বলেন, আহতদের মধ্যে দুজনের শরীর থেকে অপারেশন করে গুলি বের করা হয়েছে। অপর চারজনের শরীরে রাবার বুলেটের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক শাফিউল আযম খান বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে




রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে প্রতীকি ক্লাস-পরীক্ষা দিলেন শিক্ষার্থীরা

রাবিনা আক্তার সেতু
এবার ‘প্রতীকি ক্লাস ও বই পড়া’ কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) নার্সিং অনুষদের শিক্ষার্থীরা।সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশমারের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

কর্মসূচিতে রামেবি অধিভুক্ত ২৩টি নার্সিং কলেজের বিএসসি কোর্সের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ইতোমধ্যে রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট সরকারি নার্সিং কলেজ এবং সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও রাজশাহীস্থ বিভিন্ন বেসরকারী নার্সিং কলেজের এ শিক্ষার্থীরা ৭ দফা দাবিতে ‘প্রতীকি পরীক্ষা ও প্রতীকি বিষপান’, গলায় ‘ফাঁসির দড়ি’ ঝুলিয়ে মিছিল, ‘কাফনের কাপড়’ জড়িয়ে অনশন এবং ক্লাস ও ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছিলেন। কর্মসূচিতে অসুস্থ হলে ১৫ শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের অনেকেই এখনো চিকিৎসাধীন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেন শিক্ষার্থীরা।

নার্সিং শিক্ষার্থীরা জানান, রামেবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তারা বৈষম্যের শিকার। তারা এর অবসান চান। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্নবাজ-এর প্রতিষ্ঠাতা আমানুল্লাহ আমান বলেন, প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ও পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের প্রতীকি ক্লাস ও বই পড়া কর্মসূচি। আমরা উচ্চ পর্যায়ে স্মারকলিপি প্রদান করে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। আমরা আশাবাদি, রামেবিতে শীঘ্রই নতুন কর্মকর্তা এসে আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়ে পরীক্ষা শুরু ও সেপ্টেম্বর মাসেই কাঙ্খিত ফলাফল প্রকাশ করবেন।

এ ব্যাপারে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। কাজ চলমাম। দ্রুতই সমাধান হবে।




গণভবন বরাদ্দ নিয়েও শেখ হাসিনা যখন ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন

জন্মভূমি নিউজ ডেস্ক:
ঢাকার শেরে বাংলা নগরে বিশাল জায়গা জুড়ে যে স্থাপনাটি ‘গণভবন’ নামে পরিচিত সেটি নিয়ে বিতর্ক বেশ পুরনো।বাংলাদেশের যত সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন তাদের মধ্যে শুধু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই গণভবনে বসবাস করেছেন। এছাড়া অন্য কোন সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান সেখানে বসবাস করেননি। যদিও নানাবিধ রাষ্ট্রীয় কাজে গণভবন ব্যবহৃত হয়েছে।

শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাবার পরে গণভবনের ভেতরে ঢুকে বহু মানুষ ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে, যেটি বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

শেখ হাসিনা যখন ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তখন তিনি গণভবন বরাদ্দ নিয়ে সেখানে বসবাস করতে শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রীত্ব ছাড়ার পরেও তিনি সেখানে বাস করতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু তীব্র রাজনৈতিক বিতর্কের মুখে শেখ হাসিনা ২০০১ সালে গণভবন ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন।

গণভবনকে এখন ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অধ্যাপক ইউনূসের অন্তর্র্বতী সরকার।

এই সিদ্ধান্ত নেবার কয়েকদিন আগেই লন্ডন থেকে এক ভিডিও বার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান বলেছিলেন, গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে, যেখানে জুলাই-অগাস্ট মাসে শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে যারা আহত-নিহত হয়েছেন তাদের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হবে।
শেখ হাসিনা ক্ষমতা থাকার সময় ২০০১ সালের ২০শে জুন জাতীয় সংসদে ‘জাতির পিতার পরিবার সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন ২০০১’ সংসদে পাশ হয়। এর কয়েক সপ্তাহ পরেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে তার ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ছিল।

এই আইনে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে আজীবন এসএসএফ দ্বারা নিরাপত্তা দেয়া, পৃথক আবাসন বরাদ্দ ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলা হয়।

২০০১ সালের দোসরা জুলাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনাকে গণভবন বরাদ্দ দেয়া হয়।

এই আইনের ক্ষমতাবলে শেখ হাসিনাকে গণভবন এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে ধানমন্ডির ছয় নম্বর সড়কে এক বিঘার একটি সরকারি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়।

তৎকালীন বিভিন্ন সংবাদপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে পূর্ত মন্ত্রণালয় বাড়ি বরাদ্দের প্রস্তাব উত্থাপন করে।

সেখানে বলা হয় গণভবন তার ব্যক্তি মালিকানাধীন হবেনা, সরকারি মালিকানাধীনই থাকিবে।শেখ হাসিনাকে গণভবন বরাদ্দ দেবার কারণ হিসেবে তার নিরাপত্তার বিষয়টিকে উল্লেখ করা হয়।

“প্রধানমন্ত্রীকে যে হত্যার হুমকি দেয়া দেয়া হয়েছে তাতে নিরাপত্তা কর্মীরা মনে করেন, গণভবনই তার থাকার জন্য উপযুক্ত স্থান,” তৎকালীন মন্ত্রিসভায় এ যুক্তি তুলে ধরা হয়, যেটি বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে আরো বলা হয়, গণভবন শেখ হাসিনা থাকার আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ছিল। শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে এটির নাম ‘গণভবন’ ছিল।

পরে সেটিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন করা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর সেটির নাম আবারো ‘গণভবন’ করা হয়।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শেখ হাসিনা গণভবনে থাকবেন এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা ১৯৮১ সালে ১২ই জুন মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিধবা স্ত্রী খালেদা জিয়া যেসব সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন সেগুলো পাবেন।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শেখ রেহানা তার নামে বরাদ্দ করা সরকারি বাড়িতে বসবাসের উপযোগী লোকবল ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।

লোকবলের মধ্যে একজন গাড়ি চালক, ব্যক্তিগত সহকারী, বাবুর্চি, মালি, ঝাড়ুদার ও দুইজন বেয়ারার থাকবে।

এছাড়া জ্বালানিসহ একটি গাড়ি, সরকারি খরচে টেলিফোন, বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস বিল দেয়া হবে।

বিবিসি বাংলার খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল অনুসরণ করুন

গণভবন নিয়ে বিতর্ক:
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না থাকলেও গণভবনে বসবাসের জন্য যে বরাদ্দ নিয়েছিলেন, সেটি নিয়ে তখন বেশ বিতর্ক তৈরি হয়। সবচেয়ে বেশি শোরগোল তৈরি হয় বিএনপির তরফ থেকে।

এই বরাদ্দ দেবার কিছু দিন পরে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে শেখ হাসিনার গণভবনে থাকা নিয়ে আপত্তি তোলেন।

তখন খালেদা জিয়াকে উদ্ধৃত করে ইত্তেফাক পত্রিকা শিরোনাম করেছিল, “নির্বাচন করিতে চাহিলে গণভবন ছাড়ুন।”

খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনা যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে তিনি গণভবনে থাকতে পারেন। তাহলে বিএনপির কোন আপত্তি নেই। কিন্তু শেখ হাসিনা যদি নির্বাচনে অংশ নিতে চান তাহলে গণভবন ছাড়তে হবে।

তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ঘনিয়ে আসছিল।

“গণভবন ছাড়িয়া বাহির হইয়া আসিলে তিনি যেসব সমস্যার সৃষ্টি করিয়া গিয়াছেন, সেগুলোর সমাধান একসঙ্গে বসিয়া কথা বলিতে রাজি আছি,” খালেদা জিয়াকে উদ্ধৃত করে লিখেছিল দৈনিক ইত্তেফাক।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেবার পরে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমানের সাথে বৈঠক করে শেখ হাসিনার নামে গণভবন বরাদ্দ বাতিল করার দাবি জানান।

বিএনপি যখন শেখ হাসিনাকে গণভবন ছেড়ে দেবার জন্য রাজনৈতিক চাপ তৈরি করেছিল, তখন আওয়ামী লীগও পাল্টা কৌশল অবলম্বন করে।

আওয়ামী লীগের তরফ থেকে দাবি তোলা হয় খালেদা জিয়া যাতে তার সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়ে দেন।

এমন অবস্থায় শেখ হাসিনার সরকারের মেয়াদের একেবারে শেষ দিকে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ঢাকা সেনানিবাসের ভেতরে বাড়ির ইজারা বাতিল করার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

তৎকালীন পত্রপ্রিকার খবরে বলা হয়, ১৯৮১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের মন্ত্রিসভার খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলেকে ১০ লক্ষ টাকা নগদ ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে ঢাকা সেনানিবাসে শহীদ মইনুল রোডের বাড়িটি রেজিস্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে কিছু শর্তে ইজারা দেয়া হয়।

বাড়িটিতে জমির পরিমাণ ছিলে দুই দশমিক ৭২ একর। এই বাড়িতে সেনাপ্রধান ও পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বসবাস করতেন।

খালেদা জিয়ার বাড়ির বরাদ্দ বাতিল করা হবে না কেন এই মর্মে দুটো কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করেছিল।

এসব নোটিশ জারি করেছিল তৎকালীন মিলিটারি এস্টেট অফিস। এসব নোটিসের মধ্যে বলা হয়, খালেদা জিয়া বাড়ি ইজারার শর্ত ভঙ্গ করেছেন।

গণভবন নিয়ে রিট দায়ের:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণভবন বরাদ্দ দেবার বিষয়টিকে আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জ করার প্রস্তুতি নেয় বিএনপি। তখন তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নিলে মামলা দায়ের করা হবে।

অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্ব তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেবার পর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নিরাপত্তা আইন ও গণভবন বরাদ্দের বিরুদ্ধে রিট দায়ের করে বিএনপি।

দলটির তৎকালীন মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া এ রিট আবেদন দায়ের করেছিলেন। এই রিট আবেদন দায়ের করার কয়েকদিনের মধ্যে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করে।

বিএনপি তাদের রিট পিটিশনে উল্লেখ করেছিল, ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগনের নিরাপত্তা আইন’ বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক।

এই আইনটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হয়। বিএনপি যুক্তি দিয়েছিল যে আইনটি দেশের সকল নাগরিকের বিপরীতে কেবল দুইজনের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে।

রিট পিটিশনে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এই আইন বলবৎ থাকলে আওয়ামী লীগ প্রাধান্য পাবে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ কলুষিত হবে। যদিও এই রিট নিয়ে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি।

এরই মধ্যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও হয়ে যায়। ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে বিএনপি।

এরপর ডিসেম্বর মাসে ‘জাতির পিতার পরিবার সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন ২০০১’ বাতিল করা হয়।

গণভবন ছেড়ে যাওয়া:
ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্কের পটভূমিতে শেখ হাসিনা গণভবন ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যেই শেখ হাসিনা গণভবন ছেড়ে দেন।এরপর ২০০১ সালে ১৬ই অগাস্ট তিনি গণভবন ছেড়ে যান।

শেখ হাসিনা যখন গণভবন ছেড়ে যাচ্ছিলেন তখন তিনি বিএনপি নেতা খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়ে দেবার আহবান জানান।

শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা তখন লিখেছিল, “তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছিলেন আমি গণভবন ছাড়লেই নাকি আমার সাথে আলোচনা করবেন। এখন তিনি ১০১ টাকা দিয়ে সেনানিবাসের যে বাড়ি নিয়েছেন তা ফেরত দিলেই আলোচনা হতে পারে।”

গণভবন ছাড়ার সময় শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের আরো বলেছিলেন, “বাড়ি নিয়ে এতো কথা শুনতে ভালো লাগে না। নেই নাই, নিলাম না।”

শেখ হাসিনা তখন দাবি করেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে গণভবন ১০১ টাকার প্রতীকী মূল্যে বাড়ি কিনে নেবার প্রস্তাব উঠেছিল।

“আমি ঐ প্রস্তাব গ্রহণ করিনি। আমি বলেছিলাম, আমার শুধু থাকার জায়গা হলেই চলবে। সিকিউরিটির লোকেরা বিভিন্ন বাড়ি সার্ভে করে সুগন্ধা, যমুনা বা করতোয়া আমার বসবাসের জন্য নির্ধারণ করে। যমুনার মতো বিলাসবহুল বাড়ির পরিবর্তে আমি করতোয়াকে (পরবর্তীতে গণভবন) বেছে নেই,” সাংবাদিকদের বলেছিলেন শেখ হাসিনা।

পরে ২০০১ সালে গণভবন ছেড়ে যাবার সময় শেখ হাসিনা দাবি করেছিলেন, গণভবন প্রধানমন্ত্রীর বাসস্থান হিসেবে চিহ্নিত ছিল না।

তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, যদি সেটি প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি হিসেবে চিহ্নিত থাকে তাহলে শাহ আজিজ, মওদুদ আহমদ ও খালেদা জিয়া গণভবন ব্যবহার করেননি কেন?

বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সময় গণভবন নির্মাণ করা হয়।

কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান সেখানে বসবাস করতেন না। তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে, যেটি পরবর্তীতে ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর’ করা হয়েছিল।

২০০১ সালে শেখ হাসিনা তখন বলেছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট থাকাকালে গণভবন অফিসের কাজে ব্যবহার করতেন।

মূলত বিকেল-সন্ধ্যাকালীন অফিস হিসেবে এটি ব্যবহৃত হতো।

শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পর এই গণভবন অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল বলে জানা যায়।

জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় থাকার সময় ১৯৮৫ সালে গণভবন সংস্কার করে সেটিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘করতোয়া’ নামকরণ করা হয়।

বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানদের জন্য এই অতিথি ভবন ব্যবহার করা হতো। এই ভবনে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ঢাকা সফরের সময় অবস্থান করেছিলেন বলে জানা যায়।

এরপর অতিথি ভবন ‘করতোয়া’ রাষ্ট্রীয় কাজে কিছু ব্যবহার হয়েছিল।

কিন্তু ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জয়লাভের পর প্রধানমন্ত্রী হয়ে শেখ হাসিনা গণভবনে বসবাস শুরু করেন।

তখন সেটির নামকরণ করা হয় আবারো ‘গণভবন’ নামে, ২০০১ সালে শেখ হাসিনা গণভবন ছেড়ে যাবার পর কয়েক বছর সেটি আর ব্যবহৃত হতে দেখা যায়নি।

এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা প্রথমে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উঠেছিলেন।

গণভবণ সংস্কার শেষে ১৪ মাস পরে ২০১০ সালের মার্চ মাসে শেখ হাসিনা সেখানে বসবাস করা শুরু করেন।

শেখ হাসিনার শাসনামলের বেশির কাজ গণভবন থেকে পরিচালিত হতো।

বিশেষ করে ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পর তেঁজগাও এলাকায় অবস্থিত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তিনি খুব একটা অফিস করেননি। গণভবনে বসেই তিনি সরকারি কাজ এবং দলীয় বিভিন্ন সভা করেছেন।

পাঁচই অগাস্ট যখন ছাত্র-জনতা গণভবনের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করে, তখন তিনি এই গণভবন থেকে রওনা দিয়ে কুর্মিটোলা বিমানবন্দর দিয়ে ভারতে চলে যান।সূত্র: বিবিসি বাংলা




মোহনপুরে অভিভাবক এবং ছাত্র-জনতার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলেন সরকারি স্কুলের কিছু শিক্ষক

রাজশাহী মোহনপুর প্রতিনিধিঃ
শিক্ষকতা একটি মহৎ পেশা। একজন শিক্ষক শুধুমাত্র পাঠদান করেন না,তিনি একজন পথপ্রদর্শক, যিনি একজন শিক্ষার্থীকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন ও জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি করতে সহায়তা করেন। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী কালীন সরকার গঠনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হচ্ছে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনাও ঘটছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য। শিক্ষকদের প্রতি এমন আচরণ শুধু অশোভন নয়, এটি সমাজের নৈতিক ভিত্তিকেও চ্যালেঞ্জ করে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী জেলার
মোহনপুর উপজেলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গতকাল সকাল ১০ ঘটিকার সময় বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষককে হেনস্থার খবর পেয়ে স্থানীয় অভিভাবক এবং ছাত্র জনতা উপস্থিত হন।এবং তারা প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে মত বিনিময় শেষে শিক্ষকদের সঙ্গেও বসার জন্য প্রধান শিক্ষকের মহোদয়ের অনুমতি নেন। বিদ্যালয়ের বর্তমান ২৩ জন শিক্ষক ও ৭জন কর্মচারী কর্মরত, কিন্তু অভিভাবক এবং ছাত্র জনতার সাথে বসতে রাজি হয় নাই বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক।এমনকি স্হানীয় অভিভাবক ও ছাত্র জনতার সাথে অশোভনমূলক আচরণ করেন তারা।

এক পর্যায়ে স্হানীয় অভিভাবক ও ছাত্র জনতার সাথে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক। শিক্ষকদের কাছে অপমানিত হয়ে অভিভাবক ও ছাত্র জনতা রেগে গিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় না থাকায় সহকারী কমিশনার ভুমি (এসিল্যান্ড) মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করেন।

অভিভাবক ছাত্র-জনতার মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মোহনপুর উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল, শিক্ষা সম্পাদক আব্দুল আজিজ, গোলাম মাওলা, নজরুল ইসলাম, হাসান আলী, মোহনপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম সহ আরও ৪০ থেকে ৫০ জন বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষকদের সমালোচনা ঝড় উঠেছে।




আমার আর মেয়ের দায়িত্ব কে নেবে’-মাসুদের স্ত্রী বলেন

মোঃ কাজি আব্দুল হালিম রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান
‘মেয়ের নাম মাসুদের সঙ্গে মিলিয়ে মাসুমা রাখতে চেয়েছিলাম। মাসুদই বলেছিলো। কিন্তু সেই মেয়েকেই রেখে চলে যেতে বাধ্য হলো মাসুদ। তাকে কেড়ে নেয়া হলো তার মেয়ের কাছ থেকে। আমার কাছ থেকে। এখন কী হবে আমাদের? আমার আর মেয়ের দায়িত্ব কে নেবে?’ সদ্য নবজাতক কন্যাসন্তানকে কোলে নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের বাইরে বেঞ্চে বসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন নিহত রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদের স্ত্রী মোসা. বিউটি আরা। তিনি গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি কন্যাসন্তানের মা হয়েছেন। সেই মেয়েকে কোলে নিয়ে নিহত মাসুদের লাশ নিতে এসেছিলেন বিউটি।

নিহত আবদুল্লাহ আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) নগরীর বিনোদপুরে মারধরের শিকার হন মাসুদ। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

হঠাৎ মাসুদের এমন মৃত্যুতে পাঁচ দিন আগে জন্ম নেওয়া কন্যাসন্তান নিয়ে দুই চোখে অন্ধকার দেখছেন স্ত্রী বিউটি আরা। স্বামী মাসুদকে হারিয়ে শোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন। অনেকটা নির্বাক হয়ে সন্তান কোলে নিয়ে বসেছিলেন। বিউটি আরা গভীর রাতে স্বামীর মৃত্যুর খবর পান।

মাসুদের স্ত্রী বিউটি আরা বলেন, বৃহস্পতিবার মিশন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছি। এরপর সোজা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে গিয়ে উঠি। নিজে অসুস্থ থাকায় সংসাসের কাজকর্মও ঠিকভাবে করা যাচ্ছিল না। মাসুদ বিকেলে বের হয় ওষুধ কেনার জন্য। সে যে গেল আর ফিরে এলো না।

তিনি বলেন, দেড় বছর আগে দুই পরিবারের অমতে আমরা বিয়ে করেছিলাম। আমাদের পরিবারের কেউ মেনে নেয়নি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে থাকি। মাসুদ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করার জন্য কোয়ার্টার পেয়েছিল। সে নিজেও অসুস্থ ছিল। ১০ বছর ধরে তার স্বাভাবিক জীবনযাপন ছিল না। কৃত্রিম পা লাগিয়ে চলাফেরা করত। মাসুদের কী দোষ ছিল? সে তো আন্দোলনের সময় অফিসে যেত, অফিস শেষ হলে বাসায় ফিরে আসত। খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতো।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে মাসুদের ওপর হামলা হয়। পরে একদল শিক্ষার্থী তাকে প্রথমে মতিহার থানায় নিয়ে যান। কিন্তু মতিহার থানায় ৫ আগস্টের সহিংসতার ঘটনায় কোনো মামলা না হওয়ায় তাকে বোয়ালিয়া থানায় নেওয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থা দেখে পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

গতকাল দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাসুদের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়। এরপর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের উদ্দেশে স্বজনরা মরদেহ নিয়ে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিনোদপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

পরিবারের সদস্যদের দাবি, রাজনৈতিক কারণেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এক পা না থাকা একটি পঙ্গু মানুষ কীভাবে ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাবে? এটি তারা বুঝতে পারছেন না!

গত শনিবার নবজাতক শিশুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে মাসুদ লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার। গত ৩-৯-২০২৪ তারিখে কন্যাসন্তানের পিতা হয়েছি। মহান আল্লাহ তাআলার কাছে নেক হায়াত ও সুস্থতা কামনা করি। সব আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুবান্ধবের কাছে আমার ও আমার মেয়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি।’

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, মৃত্যুর কারণ হিসেবে আপাতত মনে করা হচ্ছে শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখম এবং অসুস্থতা ও গণপিটুনি। তবে, বিস্তারিত জানতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে নগরীর মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলামকে মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জানা গেছে, আবদুল্লাহ আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে ক্লাসে যাওয়ার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের সামনে হামলার শিকার হন মাসুদ। ওই সময় তার ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। বাম পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কেটে দেওয়া হয় তার হাতের রগ। ওই হামলায় পা হারিয়ে মাসুদ একটি প্লাস্টিকের পা লাগিয়ে চলাচল করতেন। তার অন্য পা শনিবার রাতে ভেঙে দেওয়া হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর নিজের দুর্দশার কথা জানিয়ে একটি চাকরি চেয়ে ২০২২ সালের শেষ দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি লেখেন আবদুল্লাহ আল মাসুদ। ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মীর তাফেয়া সিদ্দিকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পদে আবদুল্লাহ আল মাসুদকে নিয়োগ দিতে বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর আবদুল্লাহ আল মাসুদকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার পদে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিয়োগপত্র পেয়ে ২২ ডিসেম্বর চাকরিতে যোগ দেন তিনি। সেই থেকে তিনি এ পদেই বহাল ছিলেন।