প্রথম টি টোয়েন্টিতে ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে ২১ রানে হারালো স্বাগতিক ইংল্যান্ড

রাসেল আদিত্য,স্পোর্টস ডেস্ক।।
সাদা বলের সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ড সফরে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ানডে দলের চেয়ে টি টোয়েন্টি দলটি বেশ শক্তিশালী হলেও ভাগ্যলিখন পাল্টায়নি তাঁদের।যথারীতি পরাজয় দিয়েই তিন ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করলো তাঁরা।
৬ জুন রাতে ইংল্যান্ডের কাছে ২১ রানে পরাজিত হয়েছে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ।

চেষ্টার লি ষ্ট্রিটের রিভার সাইড গ্রাউন্ডে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে বেন ডাকেট রোমিও শেফার্ডের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় ইংলিশদের সংগ্রহ ছিলো ১৬ রান।যাঁর ১৫ ই করেন জেমি স্মিথ।তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডের ফর্মটাকে টি টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও নিয়ে এসেছেন বলেই মনে হচ্ছিলো।তিনে নামা জস বাটলারও যে শেষ ওয়ানডেতে ছন্দ পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি উইন্ডিজের লক্ষ্য বড় না হওয়ায়।

দ্বিতীয় উইকেটে দুই প্রান্ত থেকেই তান্ডব শুরু করেন জেমি ও বাটলার।ফলশ্রুতিতে পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে ৭৮ রান তুলে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দেন দুজন।কিন্তু অষ্টম ওভারের শেষ বলে ঘটে ছন্দপতন।২০ বলে চারটি চার ও দুই ছক্কায় ব্যক্তিগত ৩৮ রানে জেমি স্মিথ রোমিও শেফার্ডের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যাওয়ার সময় ইংল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ৯৫!

এরপর অধিনায়ক হ্যারি ব্রুক ও টম ব্যান্টনকে দ্রুতই ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে ফিরে আসার সম্ভাবনা জাগায় উইন্ডিজ বোলাররা।দলীয় ১১৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।ছয়ে নামা জ্যাকব বেথেল জস বাটলারের সাথে জুটি গড়লেও আসলে তা ছিলো,ওয়ান ম্যান শো।বেথেল কেবল ষ্ট্রাইক পেলে সিঙ্গেলস নিয়ে বাটলারকে ষ্ট্রাইক দেওয়ার কাজটি করে গেছেন।

দুজনের জুটি ৪২ বল স্থায়ী ছিলো।৬০ রানের জুটিতে ৫২ রানই করেন বাটলার।দারুণ সব শটে রিভার সাইডের গ্যালারীকে মাতিয়ে রাখা জশ বাটলার ঊনিশতম ওভারের চতুর্থ বলে নিজে তো বটে,পুরো গ্যালারীকে ক্ষনিকের জন্য স্তব্ধ করে দেন।

দলীয় ১৭৬ রানে আলজেরি জোসেফের একটি বলে লাইন মিস করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে আউট হয়ে যান।অথচ নিশ্চিত ভাবেই সেঞ্চুরি পেতে চলেছেন মনে হচ্ছিলো।আউট হয়ে নিজেই যেনো বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।বিমর্ষ মুখে ধীরলয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে আসেন ৫৯ বলে ছয়টি চার ও চারটি ছক্কায় ৯৬ রান করা বাটলার।

শেষ পর্যন্ত বিশ ওভারে সাত উইকেটে ১৮৮ রান করে স্বাগতিকরা।দুইশো হতেই পারতো,যদি না বেথেল অবিশ্বাস্য কচ্ছপ গতির ব্যাটিং না করতেন।২৩ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন বেথেল।রোমারিও শেফার্ড ৩৩ রানে দুই উইকেট নেন।

১৮৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এভিন লুইস ও জনসন চার্লস শুরুটা ভালো করলেও এগুতে পারেননি বেশিদূর।লিয়াম ডসনের অসাধারণ বোলিংয়ের কোন জবাব ছিলোনা উইন্ডিজ ব্যাটারদের কাছে।চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে জনসন চার্লসকে ষ্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন ডসন।দলীয় ২৭ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর শাই হোপকেও দ্রুতই ফিরিয়ে দেন ম্যাথু পটস।

রোষ্টন চেসকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৮ রান করে বিপর্যয় সামলে সম্ভাবনার পথে দলকে নিয়ে যাচ্ছিলেন এভিন লুইস।কিন্তু দশম ওভারের শেষ বলে জ্যাকব বেথেলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে
কার্সের তালুবন্দী হয়ে নিজেই ফিরে যান লুইস।
তিনটি করে চার ও ছক্কায় ২৩ বলে ৩৯ রান করে আউট হন তিনি।দলীয় ৯১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় উইন্ডিজ।

এরপর দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসে দ্বাদশ ওভারের প্রথম বলেই শেরফানে রাদারফোর্ডকে ডাকেটের ক্যাচ বানান ডসন।৯৭ রানে চতুর্থ ও এক বল বাদে ঐ ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ১০০ রানে রোস্টন চেসকেও ডাকেটের ক্যাচ বানিয়ে ম্যাচ নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসেন ডসন।

সেখান থেকে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি ক্যারিবিয়রা।দলীয় ১৩০ রানে জোড়া উইকেট হারিয়ে আট উইকেটে ১৩০ রানে পরিনত হওয়া ওয়েষ্ট ইন্ডিজ যে শেষ পর্যন্ত নয় উইকেটে ১৬৭ রান করতে পারে,তা সম্ভব হয় শেফার্ড ও হোল্ডারের নবম উইকেট জুটিতে ৩৭ রান তুলতে সক্ষম হওয়ায়।লিয়াম ডসন ২০ রানে চারটি ও ম্যাথু পটস আর জ্যাকব বেথেল দুটি করে উইকেট নেন।জশ বাটলার ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান।

এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজে
১-০ তে এগিয়ে গেলো স্বাগতিক ইংল্যান্ড।আগামীকাল ব্রিস্টলে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *