রাজধানীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অবৈধ সব দোকান গুড়িয়ে দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন

মো: আব্দুস সালাম ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে ।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক এলাকা দিয়ে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।

উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “এটি একটি জাতীয় উদ্যান। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে, নিরাপদে চলাফেরা করতে পারেন, সেই উদ্দেশে আমাদের এই অভিযান। এখানে যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে আমরা উচ্ছেদ করে দিয়েছি।”

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। তারা অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।

ক্যাম্পাস এলাকায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রেক্ষাপটে গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি সভা হয়। সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে তিনি এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

সিদ্ধান্তগুলো হলো- রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেইটটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হবে; সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ, মাদক ব্যবসা বন্ধ এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, ডিএমপি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালিত হবে; নিয়মিত মনিটরিং ও অভিযানের জন্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়; উদ্যানে পর্যাপ্ত আলো ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং সেগুলোর নিয়মিত মনিটরিং করা হবে; সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি ডেডিকেটেড পুলিশ বক্স স্থাপন করা হবে; উদ্যানে রমনা পার্কের মতো সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা চালু করা হবে; রাত ৮টার পর উদ্যানে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে।

এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে উপদেষ্টা ফেসবুকে লিখেন, “অবিলম্বে এ সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে এক আতঙ্কের স্থান থেকে ধীরে ধীরে একটি নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক স্থানে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। ইতোমধ্যে সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *