জয়পুরহাটে প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় ৩ আসামি গ্রেফতার, ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার

সুকমল চন্দ্র বর্মন (পিমল) জেলা প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাবের দিকনির্দেশনায় সদর থানায় প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের সময় তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় নগদ ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা উদ্ধার করা হয়েছে

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বুধবার) সন্ধ্যা আনুমানিক ৭:০০ ঘটিকার সময় জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ শেষে ফেরার পথে ভিকটিম মীর মাহবুবুর রহমান (৫৭) একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোনকল পান। এক নারী নিজেকে ছাত্রীর মা পরিচয় দিয়ে জরুরী ভিত্তিতে দেখা করার অনুরোধ জানান।

ভিকটিম আল মদিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ শেষে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলে ওই নারী আসামী (সাবিনা) পথরোধ করে বিয়ের বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপর কিছু দূর যাওয়ার পর আরও এক নারী যোগ দেন এবং মোটরসাইকেলে আসা দুইজন পুরুষ আসামী (মোঃ পারভেজ ও মোঃ খলিল) তাদের সঙ্গে যুক্ত হন।

তারা ভিকটিমকে জোর করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে চোখ বাঁধেন এবং একটি অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মারধর করে ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ব্ল্যাকমেইল করার জন্য ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন।

পরে, মুক্তিপণের প্রথম কিস্তি হিসেবে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৮:১০ ঘটিকায় ভিকটিমের পরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে ৫০,০০০/- টাকা নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪:০০ ঘটিকার সময় আরও ১,৩০,০০০/- টাকা মুক্তিপণ দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ১০ মার্চ ২০২৫, দুপুর ২:১৫ ঘটিকার সময় পুলিশ সুপার বিষয়টি জানার পর ডিবি পুলিশের ওসি মোঃ আসাদুজ্জামানকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এরপর ডিবি পুলিশের একটি দল ওঁৎ পেতে থেকে জয়পুরহাট সদর থানাধীন চিনিকল রোডে জাতীয় পার্টি অফিসের সামনে থেকে মুক্তিপণের ৫০,০০০/- টাকা নেওয়ার সময় আসামী মোঃ পারভেজ হোসেন (৩৫) ও কাজী মাহফুজুর রহমান @ মাস্টার (৫০)-কে হাতেনাতে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত পারভেজের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ কৌশলে আসামী সাবিনা ইয়াসমিনকে ডেকে এনে গ্রেফতার করে। এ সময় আসামীদের দেহ তল্লাশি করে পারভেজের পকেট থেকে ভিকটিমের দেওয়া ৫০,০০০/- টাকা এবং একটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়। মহিলাদের দেহ তল্লাশির পর আসামী সাবিনার কাছ থেকে একটি বাটন মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আসামি পলাতক রয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন: মোঃ খলিলুর রহমান (৩৬) ,মোঃ বাপ্পি (৩২), মোঃ নাহিদ হোসেন (৩৬),আরও ৪-৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি

পুলিশ পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে , গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশের তৎপরতায় প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের একটি চক্র ধরা পড়েছে, যা সমাজে এ ধরনের অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।