জয়পুরহাটের ইব্রাহিমের রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের উপপরিচালক হিসেবে পদায়ন

সুকমল চন্দ্র বর্মন (পিমল) জয়পুরহাট প্রতিনিধি :
বড় বড় সব শিক্ষার্থীরা তাদের প্রিয় শিক্ষককে ঘিরে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছেন। এ কান্না যতটা বেশি বেদনার তার চাইতে বেশি আনন্দের। এমন আনন্দের জোয়ার বইছে সরকারি আজিজুল হক কলেজের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। কারণ তাদের প্রিয় শিক্ষকের পদায়ন হয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের উপপরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) পদে। তবে এ আনন্দ এখন আর শুধু বিভাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং এটি ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বগুড়া শিক্ষা পরিবারের শিক্ষার্থী অভিভাবক, শিক্ষকবৃন্দ সহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল সচেতন নাগরিকদের মাঝে।

প্রকাশ থাকে যে, ইব্রাহিম হোসেন সরকারী আজিজুল হক কলেজের মার্কেটিং বিভাগে যোগদান করে অদ্যবধি কলেজে যথেষ্ট সুনাম ও দক্ষতার সাথে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পেশাদারিত্বের সাথে পালন করে আসছেন।

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রায় ১৬টি জেলার শিক্ষার্থীরা মার্কেটিং বিভাগে পড়তে আসেন। সেই সূত্রে এই বড় দুটি বিভাগের শিক্ষার্থী অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের কাছে জনাব মোঃ ইব্রাহিম হোসেন এক আস্থার প্রতীক । তার নিজস্ব পাঠদান ভঙ্গি, আউট অফ বক্স থিংকিং, শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ, যেকোন বিপদে শিক্ষার্থীদের পাশে মেন্টর হিসেবে দাঁড়ানো এসব গুণাবলীর জন্য তিনি পুরো ক্যাম্পাসের এক প্রিয় মুখ।

মার্কেটিং ক্যারিয়ার ক্লাব তৈরির মাধ্যমে তিনি শিক্ষার্থীদের শারীরিক মানসিক ও মননশীলতা বিকাশে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও সংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। যেমন- খেলাধুলা আয়োজন, ডিবেটিং, সাংস্কৃতিক কম্পিটিশন, কেস কম্পিটিশন, বিভিন্ন ধরনের ক্যুইজ কম্পিটিশন, নতুন নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে শিল্পোদ্যোক্তা তৈরি সহ বিভিন্ন ধরনের কাজের মাধ্যমে অতি অল্প সময়ে তিনি দেশ ও বিদেশে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন।

মার্কেটিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী মোঃ সোহেল বলেন, ইব্রাহিম স্যার শুধু আজিজুল হক কলেজের একজন শিক্ষকই নন বরং এ অঞ্চলে তিনি একজন ব্র্যান্ড। তিনি আরও বলেন, বগুড়া আজিজুল হক কলেজে প্রায় ২৫ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে। খুব কম শিক্ষার্থীই আছে যারা ইব্রাহিম স্যারকে চেনেন না!

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী শিক্ষার্থী বলেন – শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার মনোরম পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ইব্রাহিম স্যার অত্র বিভাগে যে ভৌতিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছেন তার সুফল কমপক্ষে ৩০ বছর অত্র বিভাগের সকল শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং কর্মচারীরা ভোগ করবে!

তার নিজ হাতে গড়া শিক্ষার্থীরা আজ দেশের ভিতরে এবং দেশের গণ্ডি পার হয়ে ইউরোপ আমেরিকা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

জনাব মোঃ ইব্রাহিম হোসেন বিসিএস এ যোগদানের পূর্বে ফিনান্সিয়াল অর্গানাইজেশন, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান সহ কমপক্ষে দশটি প্রতিষ্ঠানে যথেষ্ট সুনাম ও পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করেছেন। তিনি বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে ইউনিভার্সিটি অফ নটিংহাম থেকে এম এ ইন এডুকেশন ডিগ্রী অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নকালীন সময়ে পথশিশুদের নিয়ে কাজ, অ্যাডভেঞ্চারাস জার্নি এবং স্কিল ডেভেলপমেন্টসহ চারটি ক্যাটাগরিতে কাজ করবার জন্য তিনি স্কটল্যান্ডের ডিউক অব এডিনবার্ড অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশন থেকে ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। নায়েমের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যাচ ১৫০ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে তিনি সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন।

ব্যক্তিগত ও সরকারি উদ্যোগে তিনি মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, বাহরাইন ভ্রমণ করেছেন। তার গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার অন্তর্গত কালাই উপজেলার থুপসারা গ্রামে। তার সহধর্মিনী জনাব সাবিনা ইয়াসমিন বর্তমানে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত আছেন।

এমন একজন গুণী শিক্ষক কর্মকর্তার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহীতে পদায়নের আদেশে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের হাজারো শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছে।