রাজশাহী নগরের ‘মরণ রাস্তা’ থেকে সরানো হচ্ছে বালু

নিজস্ব প্রতিবেদক
সড়কে থাকা বালু সরিয়ে নিচ্ছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নগরের চৌদ্দপায়ের বিহাস এলাকায়
সড়কে থাকা বালু সরিয়ে নিচ্ছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নগরের চৌদ্দপায়ের বিহাস এলাকায়ছবি: দৈনিক আমাদের জন্মভূমি
রাজশাহী নগরের ছোট বনগ্রাম এলাকার ‘মরণ রাস্তার’ মোড় এলাকায় সড়কে ছড়িয়ে থাকা বালু সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এই উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন।
নগরের চৌদ্দপায় বিহাস এলাকা থেকে আলিফ লাম–মিম ভাটা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়ক দিয়ে বালুবাহী ট্রাক চলাচল করে। এই ট্রাক থেকে বালু উড়ে এসে সড়কে পড়ে। রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বালুর স্তূপ জমে ওঠে। এ ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।
ছোট বনগ্রাম এলাকার একটি মোড়ের নাম ‘বারো রাস্তার মোড়’। চারটি বড় সড়ক ওই মোড়ে মিলিত হয়েছে। ঘন ঘন দুর্ঘটনা হয় বলে এলাকাবাসী মোড়টির নাম দিয়েছেন ‘মরণ রাস্তার’ মোড়। গত এক মাসে সেখানে ছোট-বড় অন্তত ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত সোমবার ওই মোড়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পুরনজিত মহলদার নিহত হন। তিনি মোটরসাইকেলে করে মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন পুরনজিত হালদার। পথে সড়কের ওপর জমে রাখা বালুর সঙ্গে স্লিপ খেয়ে পড়ে যান তিনি। এতে মাথায় ও হাতে গুরুতর আঘাত পান। পরে তাঁকে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাত ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র তিনি মারা যান।
স্থানীয় এলাকাবাসী মোড়টিতে দ্রুত গোলচত্বর করার দাবি জানিয়েছেন। এ দাবিতে গত শুক্রবার মানববন্ধনও করেন তাঁরা। মোড়ে দুর্ঘটনার একাধিক ছবি দিয়ে সেই কর্মসূচির ব্যানার, বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার ছবি দিয়ে ফেস্টুন বানিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নগরের চৌদ্দপায় বিহাস এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সড়কের বালু তুলে ফেলে দিচ্ছেন সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কর্মী। তাঁরা জানান, কয়েক দিন আগে এই রাস্তায় বালুতে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক মারা গেছেন। এই কারণে নির্দেশ এসেছে, এই রাস্তার ওপর পড়ে থাকা বালু সরাতে হবে।
ট্রাক থেকে বালু পড়েছে সড়কে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নগরের চৌদ্দপায়ের বিহাস এলাকায়
ট্রাক থেকে বালু পড়েছে সড়কে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নগরের চৌদ্দপায়ের বিহাস এলাকায়ছবি: দৈনিক আমাদের জন্মভূমি
এই কাজের তদারক করতে দেখা যায় সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা শাখার সুপারভাইজার মো. কামরুলকে। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের অনেকগুলো রাস্তা। সেগুলোয় সব সময়ই কাজ চলে। তেরোখাদিয়া এলাকায় কাজ করার কারণে এখানে একটু গ্যাপ পড়ে গেছে। এ কারণে বালু বেশি জমা পড়ে গেছে। যে পরিমাণ বালুর ট্রাক বালু ঘাট উঠে, সেই কারণে বালুটা বেশি জমা হয়। নিয়মিত করা গেলে এটা জমবে না। কিন্তু জনবল তোন একটু কম। বিহাসের এই জায়গা থেকে কাজ শুরু হলো। ধীরে ধীরে পুরো রাস্তার বালু সরানো হবে।
সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের প্রধান পরিচ্ছন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন (ডলার) বলেন, আজ যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা সিটি করপোরেশনের পরিবেশ শাখার। তাঁরা এত দিন বৃক্ষরোপণ থেকে শুরু করে সৌন্দর্য বর্ধনে কাজ করছিলেন। তাঁদের এখন এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকবে।